ডিজিটালাইজেশন এবং WWW-এর উদ্ভাবনের ফলে, বিশ্বের যেকোনো স্থানে ভ্রমণ করার তথ্য সংগ্রহ করাটা সহজ হয়ে গেছে। বিশেষ করে শিক্ষার্থীরা এই টেকনোলজি ব্যবহার করে বাইরে পড়াশোনার ব্যাপারে যাবতীয় সকল তথ্য পাচ্ছে এক ক্লিকেই।
এসব তথ্যের ভিড়ে আজ আরোকিছু গুরুত্বপূর্ণ তথ্য নিয়ে হাজির হয়েছি আমরা প্রবাস প্রতিদিন টিম। চলুন এই পর্যায়ে বাংলাদেশি শিক্ষার্থীদের জন্য কোন দেশ ভালো এ সম্পর্কিত একটি গাইডলাইন চেক করে নিই।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের পরেই বেশিরভাগ বাংলাদেশী শিক্ষার্থীর টার্গেট থাকে মালয়েশিয়ার স্কলারশিপের প্রতি। ২০১৬ সালের একটি পরিসংখ্যান অনুযায়ী ৩৫,১৫৫ জন বাংলাদেশী শিক্ষার্থী এই দেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হয়েছিল।
বর্তমানে নিশ্চয় এর সংখ্যা আরো বেড়েছে! তাছাড়া এখানকার স্টুডেন্ট ভিসার দাম তুলনামূলকভাবে কম হওয়ার কারণে শিক্ষার্থীরা এই দেশের স্কলারশিপের প্রতি বাড়তি আগ্রহ প্রকাশ করে।
স্কলারশিপের জন্য বাংলাদেশীদের টার্গেটে যে ৫৫ টি দেশ থাকে সেই ৫৫ টি দেশের মাঝে প্রায় প্রথম সারির দিকেই রয়েছে এই জার্মান। মজার ব্যাপার হলো জার্মানিতে অন্যান্য স্কলারশিপের চাইতে ডাড নামের সে স্কলারশিপটি রয়েছে সেটির সুযোগ-সুবিধা অনেক বেশি।
যেখানে পড়তে হলে আপনাকে কোনো ফি দিতে হবে না। উল্টো মান্থলি আপনি ১২০০ ইউরো পরিমাণ অর্থ ভাতা হিসাবে পাবেন।
স্বপ্ন যাদের অনেক বড় তাদের প্রথম টার্গেট এই যুক্তরাষ্ট্র। সুতরাং বাংলাদেশি শিক্ষার্থীদের জন্য কোন দেশ ভালো প্রশ্নে যুক্তরাষ্ট্রের ব্যাপারে বললে একটুও বাড়িয়ে বলা হবে না। কারণ পড়াশোনা শেষ করে এখানে ইন্টার্নশিপের মাধ্যমে স্যাটেল হয়ে যাওয়ার যে সহজ সুযোগ রয়েছে তা সাধারণত অন্য কোনো দেশের স্কলারশিপে পাওয়া যায় না।
যারা এই পর্যায়ে এসে অর্থের কারণে পিছিয়ে যাচ্ছেন তাদেরও চিন্তার কোনো কারণ নেই। এখানে থাকা প্রায় পাঁচ হাজার ফুল ফ্রি স্কলারশিপ কেবল আপনাদের মতো পরিশ্রমী শিক্ষার্থীদের জন্যই অপেক্ষা করছে।
এবার আসি চির শান্তির দেশ কানাডার ব্যাপারে। দেশটিতে পড়াশোনার জন্য সবচেয়ে বেশি সুযোগ সুবিধাসম্পন্ন ভার্সিটি হলো কার্লটন বিশ্ববিদ্যালয়। যেখানে রয়েছে ২০০টিরও বেশি প্রোগ্রাম। যাদের অবস্থা খারাপ তারা নিজেদের অবস্থান প্রমাণ করতে পারলে ভাতা হিসাবে বছরে ইজিলি ১ হাজার থেকে ১৬ হাজার কানাডিয়ান ডলার ফান্ডও পাবেন।
এছাড়াও কানাডায় থাকা ১০০টির বেশি আন্ডারগ্র্যাজুয়েট প্রোগ্রামসম্পন্ন বিশ্ববিদ্যালয় কনকর্ডিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ও স্কলারশিপের জন্যে বেটার অপশন হিসাবে বিবেচিত হয়ে থাকে। যারা গ্র্যাজুয়েট প্রোগ্রাম করতে চান তারা এখানকার ১০০টির বেশি গ্র্যাজুয়েট প্রোগ্রামগুলিরও যেকোনো একটি ট্রাই করতে পারেন।
জাপানে আপনি মূলত ৩ ধরণের স্কলারশিপ পাবেন। এগুলি হলো ব্যাচেলর ডিগ্রি, মাস্টার্স ডিগ্রি এবং ডক্টোরাল ডিগ্রি। জাপানে গিয়ে যারা অর্থাভাবে পড়বেন ভাবছেন তাদের জন্যেও ব্যবস্থা রেখেছে দেশটির বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়।
বিশেষ করে সেখানকার Jasso টোকিও ফাউন্ডেশন বা আঞ্চলিক বিভিন্ন ফাউন্ডেশনের আর্থিক বৃত্তিগুলির ব্যাপারে একেবারে কিছু না বললেই নয়।
বাংলাদেশি শিক্ষার্থীদের জন্য কোন দেশ ভালো সে সম্পর্কে তো জানলেন! এবারে চলুন বিদেশে সহজে স্কলারশিপ পাওয়ার উপায় সম্পর্কে খানিকটা আলোচনা করা যাক:
প্রস্তুত হোন: মনে রাখবেন বিদেশের যেকোনো স্কলারশিপেই অনেক বেশি প্রতিযোগিতা থাকবে। যেসব স্কলারশিপ ফ্রি সেসবে তুলনামূলকভাবে একটু বেশিই প্রতিযোগিতা থাকবে। আর এই প্রতিযোগিতায় নিজেকে টিকিয়ে রাখতে হলে সময় থাকতে নিজেকে প্রস্তুত করে নিতে হবে৷
আইইএলটিএস দিন: যারা বিদেশে পড়ার প্ল্যান করছেন তারা নিশ্চয় জানেন বিদেশে পড়ার অন্যতম অস্ত্র হলো এই আইইএলটিএস টেস্টে ভালো স্কোর তোলা! সুতরাং ইংরেজিতে নিজেকে এমনভাবে দক্ষ করে তুলুন যাতে মিনিমাম ৭.০ বা ৭.৫ আইইএলটিএস স্কোর যেনো আপনার দখলে থাকে।
রিসার্চ করুন: সঠিক এবং ভালোমানের স্কলারশিপ পেতে হলে সবসময় চোখ-কান খোলা রাখতে হবে। অনলাইনে রিসার্চ করতে হবে। আপনার টার্গেটেড দেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলির ওয়েবসাইট প্রতি ৩ দিন পরপর বা প্রতি ৭ দিন পরপর নিয়মিত চেক করুন৷ যাতে কোনো কিছু মিস না হয়।
অর্থ নিশ্চিতকরণ: অনেক বিশ্ববিদ্যালয়ে কিন্তু ব্লকড অ্যাকাউন্টের মাধ্যমে নির্দিষ্ট অর্থ ব্যাংকে জমা না দিলে আবেদন করা যায় না। সুতরাং স্বপ্নকে পুরোপুরি ভেঙে যেতে না দিতে চাইলে শুরুতেই অর্থের ব্যাপারে মোটামুটিরকমের প্রিপারেশন নেওয়ার চেষ্টা করুন। আশা করি শেষটা অনেক ভালো হবে।