গ্রেট ওয়াল থেকে শুরু করে বেইজিং এবং শাংহাইয়ের মতো ব্যস্ত শহর সবকিছুতেই যেনো মিশে আছে ইতিহাসের গন্ধ, নতুনত্বের ছোঁয়া কিংবা বিস্ময়কর তথ্য। সবকিছু মিলিয়ে লম্বা ছুটির সময় কাটাতে চীন হয়ে উঠতে পারে পার্ফেক্ট চয়েজ। এক্ষেত্রে দরকার চীনের টুরিস্ট ভিসা। চলুন তবে আজ বাংলাদেশ থেকে চীনের টুরিস্ট ভিসা কিভাবে পাওয়া যায় সে-সম্পর্কে আলোচনা করি৷
বাংলাদেশ থেকে চীনের টুরিস্ট ভিসা কিভাবে পাওয়া যায় সে-সম্পর্কে তো আলোচনা করবোই! তবে তার আগে আমাদের চীন ভিসার ধরণ সম্পর্কে আইডিয়া থাকা উচিত।
এল ভিসা: বাংলাদেশ থেকে চীনের টুরিস্ট ভিসা কালেক্ট করাকেই এল ভিসা বা টুরিস্ট ভিসা বলে। যা সম্পর্কে আমরা আজ বিস্তারিত আলোচনা করবো।
এম ভিসা: এম ভিসার আন্ডারে আপনি চীনে বিজনেস করতে পারবেন৷ এক্ষেত্রে বিজনেস রিলেটেড বেশকিছু কোয়ালিফিকেশনও আপনার থাকতে হবে।
এক্স ভিসা: যারা চীনে স্বল্পমেয়াদী বা দীর্ঘমেয়াদী বিভিন্ন সাবজেক্টের উপর স্কলারশিপ করতে চান তাদের এই ভিসার দরকার পড়তে পারে।
জেড ভিসা: জেড ভিসা হলো তাদের জন্য যারা চীনে জবের উদ্দেশ্যে পাড়ি জমাতে চান৷
যাইহোক! আমরা আজকের এই গাইডলাইনের মূলত চীনের এল ভিসা বা টুরিস্ট ভিসা নিয়ে আলোচনা করবো। যার মাধ্যমে আপনি ৩০ থেকে ৯০ দিন চীনে থাকতে পারবেন।
চলুন এবার বাংলাদেশ থেকে চীনের টুরিস্ট ভিসা কিভাবে পাওয়া যায় তা নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করা যাক। বাংলাদেশ থেকে চীনের টুরিস্ট ভিসা পেতে হলে আপনাকে যেসব বিষয় অবশ্যই ক্লিয়ার করতে হবে:
চীনে থাকার সময়ের পরেও কমপক্ষে ছয় মাস মেয়াদ থাকবে এমন একটি পাসপোর্ট আপনার থাকতে হবে। মনে রাখবেন পাসপোর্টে ভিসার জন্য দুইটি খালি পৃষ্ঠা না থাকলে আপনি টুরিস্ট ভিসার জন্য আবেদন করতে পারবেন না। পাশাপাশি যেসব ডকুমেন্টস আপনাকে নিশ্চিত করতে হবে সেসব ডকুমেন্টস হলো:
ভিসা আবেদন ফর্ম: এরপর আপনাকে চীনের বাংলাদেশস্থ দূতাবাসের অফিসিয়াল ওয়েবসাইট থেকে একটি ফর্ম ডাউনলোড করে নিতে হবে। সাবধানে ও সঠিকভাবে পূরণ করতে হবে সেই ফর্ম।
পাসপোর্ট সাইজের ছবি: থাকতে হবে একদম রিসেন্টলি তোলা পাসপোর্ট সাইজের ছবি। ছবি তোলার সময় অবশ্যই সাদা ব্যাকগ্রাউন্ড নিশ্চিত করে নেবেন। নির্দিষ্ট মাপ এবং শর্তাবলী মেনে ছবি তোলা না গেলে আপনার ভিসা কিন্তু কতৃপক্ষ ক্যান্সেল করে দিতে পারে।
ট্যুর প্ল্যানিং: আপনি জানেন কিনা জানি না বর্তমানে বাংলাদেশ থেকে চীনের টুরিস্ট ভিসা আবেদনের ক্ষেত্রে কিন্তু ট্যুর প্ল্যানিং লাগে। আপনার ফ্লাইট এবং হোটেল বুকিংয়ের প্রুফও এক্ষেত্রে কতৃপক্ষকে শো করাতে হবে।
আর্থিক অবস্থার প্রমান: আপনার ব্যাংক স্টেটমেন্ট, ক্রেডিট কার্ড স্টেটমেন্ট বা এমন কোনো ডকুমেন্টস শো করাতে হবে যা প্রমাণ করবে আপনি চীনে ট্যুর দেওয়ার ক্ষেত্রে আর্থিকভাবে সম্বল। এক্ষেত্রে ১৫-৩০ হাজার টাকার মতো ব্যালেন্স থাকা চাই।
ডকুমেন্টস এবং আবেদন ফর্ম রেডি করতে পারলেই আপনি আবেদন জমা দিতে পারবেন। এক্ষেত্রে আপনাকে ঢাকায় চীনা দূতাবাসে যেতে হবে। কারণ বর্তমানে বাংলাদেশ থেকে চীনের টুরিস্ট ভিসার আবেদন জমা দেওয়ার কোনো অনলাইন সিস্টেম নেই। তাই আপনাকে সরাসরি দূতাবাসে বা অনুমোদিত এজেন্টের মাধ্যমে আবেদন করতে হবে। আর হ্যাঁ! যাদের হাতে সময় কম তারা দূতাবাস বা কনস্যুলেটের অ্যাপয়েন্টমেন্ট আগে থেকেই বুক করে নেবেন৷
বাংলাদেশ থেকে চীনের টুরিস্ট ভিসার আবেদন জমা দিতে নিচের ঠিকানায় যোগাযোগ করুন:
এবার আসি ফি এর ব্যাপারে! যারা সিঙ্গেল-এন্ট্রি ভিসার জন্য আবেদন করবেন তাদের লাগবে প্রায় ৮,০০০ থেকে ১০,০০০ টাকা। ডাবল-এন্ট্রি ভিসার ক্ষেত্রে লাগবে প্রায় ১২,০০০ থেকে ১৪,০০০ টাকা এবং মাল্টিপল-এন্ট্রি ভিসার (৬ মাস) ক্ষেত্রে লাগবে ১৮,০০০ থেকে ২০,০০০ টাকা। অন্যদিকে যারা ১২ মাসের জন্য মাল্টিপল-এন্ট্রি ভিসার আবেদন করবেন তাদের গুনতে হবে ২৫,০০০ থেকে ২৮,০০০ টাকা। এই ফি সাধারণত দূতাবাসে নগদে পরিশোধ করতে হয়।
যারা বাংলাদেশ থেকে চীনের টুরিস্ট ভিসার জন্য আবেদন করবেন তাদের এপ্রুভ পেতে ৪ থেকে ৭ কার্যদিবস অপেক্ষা করতে হবে। তবে আর্জেন্ট হলে অতিরিক্ত ফি দিয়ে ২ থেকে ৩ কার্যদিবসের মধ্যেই ভিসা এপ্রুভ করিয়ে নিতে পারবেন। আর হ্যাঁ শেষ মুহুর্তে তাড়াহুড়োতে না পড়তে কমপক্ষে এক মাস আগে ভিসা আবেদন করে নিবেন। এতে করে পরবর্তীতে কোনো ঝামেলা হলেও ডেট মিস হবে না। আপনার যাত্রা শুভ হোক!