শুরুতেই বলে রাখি আমেরিকায় মাস্টার্স খরচ আসলেই বেশি। তবে আপনি যদি ফুল ফ্রি স্কলারশিপ, বা ফ্রি স্কলারশিপ পান সেক্ষেত্রে আপনার খরচের পরিমাণ অনেকটাই কমে আসবে। তাছাড়া আমেরিকায় যারা পড়াশোনা করে তারা কিন্তু স্টুডেন্ট লাইফে বসে থাকে না। তারা পার্ট টাইম জব করেও নিজের খরচের পরিমাণটুকু কমিয়ে আনে। আপনিও চাইলে তাদের একজন হতে পারেন। বিস্তারিত জানতে সাথেই থাকুন।
আমেরিকায় মাস্টার্স খরচ অনেকটা নির্ভর করবে আপনি কোন বিশ্ববিদ্যালয় চুজ করেছেন তার উপর৷ এক্ষেত্রে প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয় এবং পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের খরচ ভিন্ন হতে পারে। প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়গুলির বার্ষিক খরচ হিসাবে আপনার টিউশন ফিসহ সবকিছুতে লাগতে পারে ৩৩ থেকে ৬৬ লাখ টাকার মতো। অন্যদিকে যারা পাবলিক থেকে মাস্টার্স করতে চান তাদের গুণতে হবে ২২ থেকে ৪৪ লাখ পর্যন্ত।
আমেরিকায় মাস্টার্স খরচ সবচেয়ে বড় একটা দিক হলো টিউশন ফি। স্কলারশিপের পুরো খরটার বড় অংশই নির্ধারিত হয়ে যায় এই টিউশন ফির জন্য। যদিও এই মাস্টার্স প্রোগ্রামের টিউশন ফি নির্ভর করবে প্রোগ্রাম এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের ওপর। সাধারণত আমেরিকার STEM প্রোগ্রাম যারা বেছে নেবেন তাদের একটু বাড়তি টাকা গুনতে হতে পারে। STEM প্রোগ্রামের বার্ষিক টিউশন ফি হিসাবে খরচ হতে পারে ৩৩ থেকে ৫৫ লাখ টাকা। আর্টস বা সামাজিক বিজ্ঞান প্রোগ্রামের খরচ পড়তে পারে ২২ থেকে ৪০ লাখ টাকা। যদিও চাকরির বাজারে STEM প্রোগ্রামের সার্টিফিকেটের দাম বেশি।
আমেরিকায় মাস্টার্স খরচ হিসাবে থাকার খরচটুকু এড না করলে কি হয়! আপনি কোথায় থাকছেন তার ওপর ভিত্তি করে আপনাকে এর জন্য বাজেট করতে হবে। আমেরিকার বড় শহরগুলোতে থাকার খরচ বেশি হলেও ছোট ছোট শহরে কম খরচে থাকতে পারবেন। যারা বড় শহরে থাকতে চান তারা থাকার খরচ হিসাবে বছরে ১৩ লাখ এবং যারা ছোট শহরে থাকতে চান তারা থাকার খরচ হিসাবে ৮ লাখ টাকা বাজেট করতে পারেন। এতে করে টেনেটুনে কোনোমতে চলে যাবে।
আপনি জানেন কিনা জানি! আমেরিকায় মাস্টার্স করুন কিংবা পিএইচডি করুন যেকোনো স্কলারশিপ করতে গেলেই কিন্তু হেল্থ বীমা করা লাগে। এটা বাধ্যতামূলক। এতে করে সারা বছরে যেকোনো চিকিৎসা ফ্রিতে করার সুযোগ পাবেন অথবা বড় বড় অপারেশনে ছাড় পাবেন। আর এই বীমায় বছরে প্রায় দেড় লাখের উপর টাকা লাগে।
বই, যাতায়াত সবকিছু মিলিয়ে বছরে আরো ১ লাখ টাকা ম্যানেজ করে নিতে হবে আপনাকে। তাছাড়া বিপদআপদের জন্য বেশকিছু টাকা ব্যাকআপ হিসাবেও রেখে দিবেন।
যারা আমেরিকায় মাস্টার্স খরচ কমাতে চান তারা পার্ট টাইম জব করুন। আমেরিকায় F1 ভিসার অধীনে শিক্ষার্থীরা ক্যাম্পাসে সপ্তাহে ২০ ঘন্টা পার্ট টাইম জব করার সুযোগ পায়। আর এই পার্ট-টাইম জব থেকে মাসিক আয় হিসাবে আপনি ইজিলি ৫৫ হাজার থেকে ১ লাখ টাকা ইনকাম করতে পারবেন।
পাশাপাশি যারা আমেরিকায় মাস্টার্স খরচের পরিমাণ আরো কমিয়ে আনতে চান বা যাদের বাজেটের সমস্যা আছে তারা আমেরিকার বিভিন্ন ফুল বা হাফ ফ্রি স্কলারশিপ ও ফিন্যান্সিয়াল এইডের জন্য এপ্লাই করতে পারেন। এই ধরণের স্কলারশিপ মূলত টিউশন ফি এবং কখনও কখনও থাকার খরচও কভার করে থাকে। আশা করি আপনার এই জার্নি অনেকটা ইজি এবং সফল হবে।