বাইরের দেশে যেতে হলে সবার আগে আপনার যে ডকুমেন্টসটি থাকতে তবে সেই ডকুমেন্টের নাম হলো ভিসা। আর এই ডকুমেন্টই তৈরি করতে হলে আপনাকে সঠিকভাবে আবেদন করতে হবে, জানতে হবে ভিসা চেক করার নিয়ম, ধারণা রাখতে হবে ভিসা করতে কতদিন লাগে তার উপর। আর যদি এসব বিষয়ে আপনার কোনো ধারণাই না থাকে সে ক্ষেত্রে আমাদের আজকের এই লেখাটি আপনার জন্যই! সাথেই থাকুন!
শুরুতে চলুন জানা যাক ভিসা কি সেই সম্পর্কে। মূলত ভিসা হলো ভিন্ন দেশ কর্তৃক ইস্যু করা একটি সরকারী ডকুমেন্টস। যা একজন বাংলাদেশী নাগরিক হিসেবে আপনাকে বিভিন্ন দেশে যাতায়াত করতে অফিসিয়াল ডকুমেন্ট হিসেবে ব্যবহৃত হবে।
পর্যটন, ব্যবসা, শিক্ষা, কাজ বা পারিবারিক সফরসহ বিদেশ গমনের ক্ষেত্রে আপনাকে অবশ্যই এই ভিসা ডকুমেন্ট এর সাহায্য নিতে হবে।
ভিসা কি সে সম্পর্কে তো জানলেন! প্রয়োজনীয়তা জানার পাশাপাশি এবার চলুন আমরা জেনে নিই ভিসা করতে কি কি লাগে সে-সম্পর্কে।
বৈধ পাসপোর্ট: ভিসার জন্য আবেদন করতে হলে শুরুতে লাগবে একটি বৈধ পাসপোর্ট। আর এই পাসপোর্টের মেয়াদ থাকতে হবে কমপক্ষে ৬ মাসেরও বেশি।
ভিসা আবেদনপত্র: সব প্রয়োজনীয় তথ্য দিয়ে সঠিকভাবে পূরণ করা একটি ভিসা আবেদনপত্র লাগবে।
পাসপোর্ট সাইজের ছবি: আপনার নিজের রিসেন্ট তোলা একটি পাসপোর্ট সাইজের ছবি ভিসা ডকুমেন্টস হিসাবে শো করতে হবে।
আর্থিক প্রুফ: কারণবশত ভিসা আবেদন করার ক্ষেত্রে ব্যাঙ্ক স্টেটমেন্ট, বেতন স্লিপ, বা স্পনসরশিপ লেটারের প্রয়োজনও পড়তে পারে।
ট্যুর ইনফো: লাগবে ট্যুর ইনফো। যেখানে থাকবে ফ্লাইট বুকিং, হোটেল রিজার্ভেশন এবং ট্যুর নিয়ে সাজানো নিয়মমাফিক গোছানো প্ল্যান।
ভিসা ফি: সবশেষে আপনাকে দিতে হবে ভিসা ফি! যা ভিসার ধরণ, কোন দেশে যাবেন এবং কোন কারণে যাবেন তার উপর নির্ভর করবে।
এবার আসি ভিসা কিভাবে করতে হয় সে ব্যাপারে। ভিসা করার ক্ষেত্রে ফলো করতে পারেন নিচের টিপসগুলি:
আপনি কি জানেন এি ডিজিটাল যুগে আপনি ঘরে বসেই অনলাইনে ভিসা আবেদন করতে পারবেন? হ্যাঁ! এক্ষেত্রে আপনাকে ফলো করতে হবে অনলাইনে ভিসা আবেদন করার নিয়ম। যেমন:
শুরুতে যে দেশে যেতে চান সেই দেশের দূতাবাস বা কনস্যুলেটের অফিসিয়াল ওয়েবসাইট ব্যবহার করুন। আবেদনে সঠিক ও সত্য তথ্য দিচ্ছেন কিনা তা অবশ্যই নিশ্চিত হয়ে নিন। সমস্ত প্রয়োজনীয় ডকুমেন্টস ভালোভাবে স্ক্যান করুন এবং এসব ডকুমেন্টস সঠিক রেজোলিউশনে আপলোড করা হয়েছে কিনা তা নিশ্চিত করুন।
ওয়েবসাইটে উল্লিখিত অফিসিয়াল পেমেন্ট গেটওয়ের মাধ্যমে ভিসা ফি পেমেন্ট করে নিন। সবশেষে আপনার অনলাইন ভিসা আবেদন ট্র্যাক করতে নির্ভরযোগ্য অনলাইন টুল ব্যবহার করুন। সবশেষে নিশ্চিত করুন যে আপনি আপনার আবেদন জমা দেওয়ার সময় আবেদন এবং ফি জমা দেওয়ার রসিদ বা স্লিপ হাতে পেয়েছেন।
বাংলাদেশী নাগরিকদের জন্য ভিসা আবেদন ফি কত হবে তা নির্ভর করবে দেশ, ভিসা টাইপ এবং উদ্দেশ্যের উপর ভিত্তি করে। সাধারণত টুরিস্ট ভিসায় বাংলাদেশের ভিসা বাবদ প্রয়োজন পড়তে পারে ১৭ হাজার টাকা থেকে ৫০ হাজার টাকা পর্যন্ত।
অন্যদিকে স্টুডেন্ট ভিসায় লাগতে পারে ৪ হাজার টাকা থেকে শুরু করে ৪৯ হাজার টাকা পর্যন্ত। যদিও কাজের ভিসার দাম কিছুটা বাড়তি। এই ধরণের ভিসায় ৫/৬/৭ লক্ষ টাকার মতো লাগতে পারে।
সবশেষে বলবো ভিসা করতে কত দিন লাগে সে ব্যাপারে। মূলত টুরিস্ট কিংবা বিজনেস ভিসা আবেদনের ১ সপ্তাহের মাঝে ভিসা হাতে পাওয়ার চান্স থাকে। অতিরিক্ত ডকুমেন্টেশন এবং যাচাইকরণ প্রক্রিয়ার কারণে কয়েক সপ্তাহ থেকে কয়েক মাস সময় লাগতে পারে স্টুডেন্ট বা ওয়ার্ক ভিসার ক্ষেত্রে। সবশেষে এক্সপ্রেস টুরিস্ট ভিসায় মাসেরও বেশি সময় লাগতে পারে।
আশা করি বুঝতে পেরেছেন ভিসা কিভাবে করতে হয় এবং ভিসা করতে কত টাকা লাগে! যাইহোক! ভিসা হাতে পেলেই অবশ্যই নির্দিষ্ট দেশে থাকার সময়কাল, কাজের অনুমতি ইত্যাদি মেনে চলার চেষ্টা করবেন।
অবশ্যই নির্দিষ্ট তারিখের মধ্যে দেশে প্রবেশ করবেন। সম্ভব হলে চেষ্টা করবেন আপনি যে দেশে যাচ্ছেন সেই দেশের স্থানীয় আইন সম্পর্কে আইডিয়া নেওয়ার। আশা করি এসব টিপস আপনার ভিসা, ট্যুর এবং কাজকে আরো সহজ করে দেবে।