আমরা সকলেই জানি ভিসা ছাড়া বাইরের দেশে যাওয়াটা খুব মুশকিল। তবে বিশ্বে এমনও কিছু দেশ আছে যেসব দেশে আপনি চাইলে ভিসা ছাড়াই যেতে পারবেন। চলুন তবে আর দেরি না করে জানি ভিসা ছাড়া কোন দেশে যাওয়া যায় এবং সেসব দেশ কেনোই বা বাংলাদেশীদের ভিসা ছাড়া তাদের নিজ দেশে প্রবেশের সুযোগ করে দিচ্ছে সে-সম্পর্কে।
ভিসা ছাড়া ভ্রমণ বলতে মূলত বোঝায় আপনি অফিসিয়াল কোনো ভিসা ছাড়াই কোনো একটি দেশে প্রবেশ করতে পারবেন। কূটনৈতিক সম্পর্ক, নিরাপত্তা পরিস্থিতি, পারস্পরিক চুক্তি বা ঐতিহাসিক সম্পর্কের ভিত্তিতে এক দেশ অন্য দেশকে এই ধরণের সুবিধা দিয়ে থাকে। তাছাড়া ভিসার দুনিয়ায় Visa-on-Arrival নামেও একধরনের সিস্টেম আছে। যে সিস্টেমের আন্ডারে আপনি ভিসা ছাড়া দেশটিতে যেতে পারবেন ঠিকই তবে সে দেশে গিয়েই আপনাকে ভিসা বানিয়ে নিতে হবে। সুবিধা হলো এই যে আপনি ভিসা তৈরি না করেই দেশটিতে প্রবেশ করতে পারলেন৷
বলে রাখা ভালো বাংলাদেশি নাগরিকরা বিশ্বের বেশকিছু দেশে একটি বৈধ পাসপোর্ট থাকলেই প্রবেশ করতে পারবে এবং ভ্রমণ করতে পারবে। যদিও অন্যান্য দেশের তুলনায় বাংলাদেশের নাগরিকদের জন্য এই সুযোগের পরিমাণ কিছুটা কম। তবে যারা ইন্টারন্যাশনাল ট্যুর দিতে পছন্দ করেন আশা করি কম খরচ এবং ঝামেলায় তাদের কাছে এই সুবিধা একেবারে সোনায় সোহাগা মনে হবে।
এবার সরাসরি চলুন ভিসা ছাড়া কোন কোন দেশে যাওয়া যায় সে-সম্পর্কে আলোচনা করি। বর্তমান তথ্য অনুযায়ী একজন বাংলাদেশী হিসাবে আপনি যেসব দেশে প্রবেশ করতে পারবেন সেসব দেশ হলো:
ভুটান: বাংলাদেশ এবং ভুটানের মধ্যে ঘনিষ্ঠ ঐতিহাসিক এবং সাংস্কৃতিক সম্পর্ক আছে বিধায় আপনি কোনোরকম ভিসা ছাড়া ভুটান থেকে ঘুরে আসতে পারবেন। দক্ষিণ এশিয়ার এই দেশের সাথে যে বাংলাদেশের পারস্পরিক সম্পর্ক দেখার মতো… তা এই সিস্টেমই প্রমাণ করে৷
ইন্দোনেশিয়া: ভুটানের পাশাপাশি আপনি ইন্দোনেশিয়াতে গেলেও ভিসা ছাড়াই ঘুরে আসতে পারবেন। দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার অন্যতম জনপ্রিয় টুরিস্ট প্লেস হলো এই ইন্দোনেশিয়া। শুধু ভিসা ছাড়া দেশটিতে প্রবেশই নয়! বরং আপনি চাইলে ৩০ দিনের জন্য ভিসা ছাড়া দেশটিতে ঘুরতেও পারবেন৷ বাংলাদেশ ও ইন্দোনেশিয়ার মধ্যে থাকা কূটনৈতিক এবং অর্থনৈতিক সম্পর্কের সবচেয়ে বড় প্রমাণ হলো এই বিশেষ সুবিধা।
মালদ্বীপ: মালদ্বীপ এবং ইন্দোনেশিয়ার সিস্টেম একেবারেই একই। যারা সমুদ্র সৈকত এবং বিলাসবহুল রিসোর্ট আছে এমন পার্ফেক্ট কম্বিনেশনে ট্যুর দিতে চান তারা মালদ্বীপ থেকে ঘুরে আসতে পারেন। দেশটিতে যেতে হলে আপনাকে কোনো ভিসার ব্যবস্থা করতে হবে না। তাছাড়া ভিসা ছাড়াই আপনি মালদ্বীপে ৩০ দিন পর্যন্ত ঘুরতে পারবেন।
নেপাল: নেপালেও আপনি ভিসা ছাড়া প্রবেশ করতে পারবেন। তবে এখানে আপনি ৯০ দিন পর্যন্ত কোনো ভিসা ছাড়াই থাকার বা ঘোরাঘুরি করার সুযোগ পাবেন।
শ্রীলঙ্কা: একজন বাংলাদেশী নাগরিক হিসাবে আপনি শ্রীলঙ্কাতে ভিসা ছাড়া প্রবেশ করতে পারবেন ঠিকই তবে আপনাকে এখানকার Visa-on-Arrival সিস্টেম মেনে চলতে হবে। আর এই Visa-on-Arrival সিস্টেম অনুযায়ী আপনাকে দেশটিতে গিয়েই ভিসার ব্যবস্থা করে নিতে হবে।
সেশেলস: কখনো কি দেশ হিসাবে সেশেলস এর নাম শুনেছেন? এই দেশটিতে কিন্তু ঘোরার মতো পার্ফেক্ট জায়গার কোনো অভাব নেই। তাছাড়া এখানে যেতে হলে আপনার ভিসা না থাকলেও চলবে। আশা করি কোনোভাবেই এই সুযোগ মিস করবেন না। দেশটিতে আপনি ৩০ দিনই ভিসা ছাড়া ঘুরতে পারবেন।
ডমিনিকা: ডমিনিকা হলো ছোট ক্যারিবিয়ান দ্বীপ। বাংলাদেশি পাসপোর্টধারীদের ২১ দিনের জন্য ভিসা ছাড়াই দেশটিতে থাকতে পারবে।
এসব ছাড়াও আরো বেশকিছু আনকমন দেশ রয়েছে। যেসব দেশের নাম হয়তো আপনি কখনোই শুনেননি বা শুনলেও বেশ কম শুনেছেন। তবে এসব দেশে ঘোরার মতো জায়গার সংখ্যা নেহায়েত কম নয়।
যেমন ধরুন মাইক্রোনেশিয়ার কথা বলি। প্রশান্ত মহাসাগরে অবস্থিত মাইক্রোনেশিয়া নামক এই দেশে আপনি ভিসা ছাড়া প্রবেশ করতে পারবেন এবং ৩০ দিন ঘুরতে পারবেন। তাছাড়া সেন্ট ভিনসেন্ট এবং গ্রেনাডিনসেও ৩০ দিন ভিসা ছাড়া থাকার সুযোগ থাকছে।