বর্তমানে যারা ডিপ্লোমার আন্ডারে পড়াশোনা করছে তাদের চাকরির কোনো অভাব হচ্ছে না। একইভাবে আপনি যদি বিদেশ থেকে ডিপ্লোমা কোর্স করে আসতে পারেন আপনার চাহিদা চাকরির বাজারে বেড়ে যেতে পারে কয়েকগুণ। সুতরাং ভবিষ্যতে ভালো বেতনের চাকরি পেতে বিদেশে ডিপ্লোমা কোর্স করাটা একেবারে পার্ফেক্ট ইনভেস্টমেন্ট হয়ে গেছে এখন। আপনিও চাইলে এই ইনভেস্টমেন্ট করতে পারেন। সুতরাং আপনার সুবিধার্থে আসুন জেনে নিই বাংলাদেশ থেকে বিদেশে ডিপ্লোমা কোর্স করবেন কিভাবে।
বিদেশে ডিপ্লোমা কোর্স করার উপায় সম্পর্কে জানার আগে চলুন কারণ জানি। প্রথমত বলবো ইন্টারন্যাশনাল রিলেশনশিপ তৈরির কথা। আপনি ইতিমধ্যেই ডিপ্লোমা কোর্স করছেন তা যদি আশেপাশের মানুষজন জানে, বিভিন্ন কোম্পানি ওনার জানে সেক্ষেত্রে আপনার ভবিষ্যতে চাকরি পাওয়াটা অনেকটাই সহজ হয়ে যাবে। তাছাড়া নতুন পরিবেশে গিয়ে পড়াশোনার ভালো সুযোগ আছে এমন স্থানে পছন্দের টপিকের উপর কোর্স করতে পারাটাও ভাগ্যের ব্যাপার। মোটকথা বিদেশে ডিপ্লোমা কোর্স করতে পারলে যেসব সুযোগ পাবেন:
বিদেশে ডিপ্লোমা কোর্স উপায় সম্পর্কিত আজকের এই আর্টিকেলে এবারে চলুন বাংলাদেশি শিক্ষার্থীদের জন্য বেশকিছু জনপ্রিয় ডিপ্লোমা কোর্স নিয়ে আলোচনা করি:
দ্রুত কাজ পাওয়ার পরিবেশ, ভালো পড়াশোনার সুযোগসহ বিভিন্ন কারণে আমরা বেশকিছু দেশকে একেবারে লিষ্টের শুরুতে রাখতে পারি। বাংলাদেশি শিক্ষার্থীরা চাইলেই এসব দেশকে টার্গেট করে ভবিষ্যতে ভালোকিছু করার স্বপ্ন দেখতে পারে। যেমন:
কানাডা: পোস্ট-স্টাডি ওয়ার্ক সুযোগের কারণে ডিপ্লোমা কোর্সের জন্য বেশ জনপ্রিয় এই কানাডা। আইটি, ব্যবসা, ইঞ্জিনিয়ারিং, এবং হেল্থ সেক্টরসহ দেশটিতে বিভিন্ন ক্যাটাগরির উপর বিভিন্ন ডিপ্লোমা কোর্স চালু রয়েছে।
অস্ট্রেলিয়া: পোস্ট-স্টাডি জব খুঁজতে, বিভিন্ন ক্যাটারির উপর কম খরচে স্কলারশিপ করতে এবং ফুল ফ্রি স্কলারশিপ পেতে এই দেশটি হতে পারে আপনার নেক্সট অপশন!
যুক্তরাজ্য: যুক্তরাজ্যের ডিপ্লোমা কোর্সগুলি কিন্তু অনেক জোশ। এসব কোর্স সিভিতে এড করতে পারলে চাকরির বাজারে আপনার দাম অনেক বেড়ে যাবে। বিজনেস, ফ্যাশন, ডিজাইন এবং হেল্থ সেক্টরের বিভিন্ন কোর্সের কারণে দেশটি বেশ জনপ্রিয়।
জার্মানি: প্রযুক্তিগত ডিপ্লোমা কোর্স এবং ইঞ্জিনিয়ারিং ডিপ্লোমা কোর্স নিয়ে যাদের প্ল্যানিং তারা জার্মান বেছে নিতে পারেন। দেশটিতে যেসব পাবলিক ইউনিভার্সিটি আছে তার ম্যাক্সিমামেই পড়াশোনার খরচ অনেক কম!
মালয়েশিয়া: বিজনেস, হসপিটালিটি এবং আইটি সেক্টরের ডিপ্লোমা কোর্স চালু রয়েছে দেশটিতে। তাছাড়া দেশটিতে এসব কোর্সের টিউশন ফি এবং থাকা-খাওয়ার খরচও অনেক কম। সুতরাং যাদের বাজেট নিয়ে সমস্যা আছে তারা দেশটিকে বেছে নিতে পারেন।
বিদেশে ডিপ্লোমা কোর্সের ধরণ, কেনো করবেন এবং কোন কোন দেশ কেনো বেছে নেওয়া উচিত সে-সম্পর্কে তো জানলেন। এবারে চলুন সরাসরি আবেদনের উপায় সম্পর্কে আলোচনা করা যাক।
মনে রাখবেন যে দেশ এবং প্রতিষ্ঠান আপনি বেছে নিয়েছেন তার উপর ভিত্তি করে কিন্তু এই আবেদন প্রক্রিয়া পরিবর্তিত হতে পারে৷ তবে সাধারণ প্রক্রিয়া হলো:
অধিকাংশ প্রতিষ্ঠান শিক্ষার্থীদের জন্য তাদেরই অফিসিয়াল ওয়েবসাইটের মাধ্যমে অনলাইনে ডিপ্লোমা কোর্সের জন্য আবেদন করার ব্যবস্থা করে দেয়। আপনাকে এক্ষেত্রে একটা ফর্ম ফিলআপ করতে হবে এবং প্রয়োজনীয় ডকুমেন্টস পিডিএফ আকারে আপলোড করতে হবে। সবশেষে প্রদান করতে হবে আবেদন ফি।
একবার আপনি অফার লেটার পেয়ে গেলেই আপনাকে ভিসা নিয়ে দৌড়াদৌড়ি করতে হবে। ভিসার এই দৌড়াদৌড়ির ধরণ কিন্তু দেশ অনুযায়ী আলাদা আলাদা হতে পারে।
যাইহোক এই কাজে ডকুমেন্টস হিসাবে আপনাকে শো করতে হবে আপনার প্রতিষ্ঠানের অফিশিয়াল অফার লেটার, আপনার টিউশন ফি, থাকা-খাওয়ার খরচ এব আসার খরচ আছে কিনা তার প্রমাণ এবং হেল্থ সার্টিফিকেট বক ডাক্তারি সার্টিফিকেট।
এবার আসি বিদেশে ডিপ্লোমা পড়ার খরচের ব্যাপারে। মনে রাখবেন বিদেশে ডিপ্লোমা পড়ার খরচ কিন্তু প্রচুর হয়ে থাকে। এক্ষেত্রে টিউশন ফি হিসাবে বছরে ২ থেকে ৫ লাখ টাকা খরচ হতে পারে। থাকা খাওয়ার খরচ হিসাবে মাসে সর্বোচ্চ লাগতে পারে ৬০ হাজার টাকার মতো। পাশাপাশি অন্যান্য খরচ তো আছেই!
আশা করি বাংলাদেশ থেকে বিদেশে ডিপ্লোমা কোর্স কিভাবে করবেন সে-সম্পর্কে একটি রাফ আইডিয়া পেয়ে গেছেন। মনে রাখবেন টিউশন ফি, র্যাঙ্কিং, অবস্থান এবং ক্যারিয়ার সুবিধা কতটুকু আছে সবকিছু বিবেচনা করেই দেশ, ভার্সিটি এবং কোর্স নির্ধারণ করতে হবে। তাছাড়া বর্তমানে অনেক বিশ্ববিদ্যালয় যোগ্য শিক্ষার্থীদের জন্য মেধা ভিত্তিক বৃত্তি বা আর্থিক সাহায্যের ব্যবস্থা করে থাকে। সুতরাং এই সুযোগও কাজে লাগানোর চেষ্টা করতে পারেন।