ফ্রিল্যান্সিং সেক্টরে আসার ক্ষেত্রে আপনি কি অভিজ্ঞতার অভাবের কারণে ভয় পাচ্ছেন? যদি ভয় পেয়ে থাকেন সেক্ষেত্রে আমাদের আজকের এই আর্টিকেলটি কেবল আপনার জন্যেই। চলুন আজ বিস্তারিত আলোচনার মাধ্যমে জেনে নেওয়া যাক কোন অভিজ্ঞতা ছাড়াই কিভাবে ফ্রিল্যান্সিং শুরু করবেন সে-সম্পর্কিত বিস্তারিত গাইডলাইন।
কয়েকটি সহজ পদক্ষেপের মাধ্যমে, যে কেউ ফ্রিল্যান্সিং জগতে কাজ করা শুরু করতে পারে। এক্ষেত্রে ফ্রি ইন্টার্রনশিপ বা পেইড ইন্টার্নশিপের সাহায্য নিতে পারেন। চলুন বিস্তারিত আলোচনায় প্রবেশ করা যাক।
ফ্রিল্যান্সার হিসাবে ক্যারিয়ার শুরু করার সময় আপনি যে দক্ষতার উপর ভিত্তি করে কাজ শুরু করতে চান সেই দক্ষতার উপর ওয়েবসাইট তৈরি করতে পারেন। যা পরবর্তীতে পোর্টফোলিও ওয়েবসাইট হিসাবে ব্যবহার করতে পারবেন।
এই ওয়েবসাইটে থাকবে আপনার দক্ষতার প্রমাণ। খুব সুন্দর একটি টেমপ্লেটের সাহায্যে সাইট তৈরি করুন। এরপর ধীরে ধীরে আপনার প্র্যাকটিস করা বেস্ট কাজটা সাইটে আপলোড করুন। এভাবে বেশকিছু কাজ আপলোড করার পাশাপাশি আপনার সার্ভিস সম্পর্কিত বিস্তারিত তথ্য দিয়ে রাখুন।
চলুন এক নজরে এই পোর্টফোলিও ওয়েবসাইট তৈরি করার সেরা কিছু টিপস সম্পর্কে আলোচনা করা যাক।
ফ্রিল্যান্সিং সেক্টরের কোন কাজগুলিতে বা কোন কাজটিতে আপনি ক্যারিয়ার গড়তে চান তা রিচার্স করে নিন। এক্ষেত্রে FreeUp, Upwork, বা PeoplePerHour এর মত ফ্রিল্যান্স মার্কেটপ্লেসগুলিতে সময় নিয়ে রিসার্চ করুন।
এ-কাজে কিন্তু আপনি Facebook বা Linkedin গ্রুপ এবং Ubersuggest বা Mangools-এর মতো কীওয়ার্ড রিসার্চ টুলগুলিরও সাহায্য নিতে পারেন।
ফ্রিল্যান্সিং জগতে অনলাইন সেক্টরই হলো সব। পড়াশোনার জন্য যেমন স্কুল, কলেজ জরুরি ঠিক তেমনই ফ্রিল্যান্সিং সেক্টরের জন্য অনলাইন প্ল্যাটফর্মে এক্টিভ থাকক জরুরি।
অনলাইনে বেশি বেশি এক্টিভ থাকতে পারলে নিজের ব্র্যান্ড প্রতিষ্ঠার এবং সম্ভাব্য ক্লায়েন্টদের সাথে যোগাযোগের সুযোগ তৈরি হবার রাস্তাটা বেশ সহজ হয়ে যায়। এই এক্টিভ থাকাকালীন সময়ে আপনি আপনার সার্ভিস সাইট বা পোর্টফোলিও সাইটের মার্কেটিং করে নিতে পারবেন।
আপনার নিজের সার্ভিস সম্পর্কিত তথ্য, কাজের নমুনার একটি পোর্টফোলিও, যোগাযোগের তথ্য এবং অন্যান্য প্রাসঙ্গিক বিবরণ থাকলে সহজেই ওয়েবসাইটে ভিজিট করা ক্লায়েন্ট আপনার সাথে যোগাযোগ করতে পারবে। যা আপনাকে অর্ডার পেতে সাহায্য করবে।
এছাড়াও লিঙ্কডইন, টুইটার এবং ইনস্টাগ্রামের মতো প্ল্যাটফর্মগুলিতে সময়ে সময়ে এক্টিভ থাকাটা জরুরি। কারণ সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রচুর কাজ পাওয়া যায়। এতে করে কম স্যালারির এসব কাজের মাধ্যমে আপনি নিজের স্কিলকে ঝালিয়ে নেওয়ার সুযোগ পাবেন।
সোশ্যাল মিডিয়ায় একটিভ থাকার ক্ষেত্রে পরামর্শ দেবো, আপনার লিঙ্কডইন প্রোফাইল অপ্টিমাইজ করার ব্যাপারে। পাশাপাশি যথেষ্ট সাড়া পেতে LinkedIn লাইভ, অডিও ইভেন্ট বা LinkedIn নিউজলেটারের মতো জনপ্রিয় টেকনিকগুলিকে কাজে লাগাতে পারেন।
যেকোনো ফ্রিল্যান্সারের জন্য একটি শক্তিশালী অনলাইন উপস্থিতি অপরিহার্য। এক্ষেত্রে কেবল সোশ্যাল মিডিয়াতে এক্টিভ থাকলেই চলবে না। এর পাশাপাশি আপনাকে বিভিন্ন ফ্রিল্যান্সিং মার্কেটপ্লেসে এক্টিভ থাকতে হবে।
এক্ষেত্রে ফাইভার, পিপলপারআওয়ার, আপওয়ার্ক বা বিহ্যান্স ব্যবহার করতে পারেন। বিস্তারিত জানতে এসব ওয়েবসাইট সরাসরি অনলাইনে সার্চ করতে পারেন। আশা করি কিভাবে ব্যবহার করতে হয় বা কিভাবে অর্ডার পেতে হয় সে-সম্পর্কে আইডিয়া পেয়ে যাবেন।
ইতিমধ্যেই আপনাদের পোর্টফোলিও ওয়েবসাইট তৈরির প্রয়োজনীয়তা সম্পর্কে জানিয়েছি। এবার জানাবো পোর্টফোলিও তৈরি করার প্রয়োজনীয়তা এবং কিভাবে তা তৈরি করতে হয় সে-সম্পর্কিত গাইডলাইন।
প্রথমেই মনে রাখতে হবে, যেকোনো ফ্রিল্যান্সারের সাফল্যের একটি অপরিহার্য অংশ হলো এই পোর্টফোলিও। ফ্রিল্যান্সিং সেক্টরে আপনার কৃতিত্বগুলিকে হাইলাইট করতে এই পোর্টফোলিওগুলি যথেষ্ট হিসাবে পরিগণিত হবে। তবে এক একটি পোর্টফোলিও হতে হবে বাছাই করা। যা তৈরি করতে প্রয়োজন বেশি বেশি প্র্যাকটিস করার মন-মানসিকতা।
চলুন আর্টিকেলের এই অংশে জেনে নেওয়া যাক কোনো অভিজ্ঞতা ছাড়াই ফ্রিল্যান্সিং শুরু করার উপায় হিসাবে একটি সেরা মানের পোর্টফোলিও কিভাবে তৈরি করতে হয় সে-সম্পর্কিত বিস্তারিত গাইডলাইন:
অভিজ্ঞতা ছাড়াই ফ্রিল্যান্সিং করতে হলে বা শুরুতেই নতুন কোনো কাজ পেতে হলে রেফারেন্স প্রয়োজন। এক্ষেত্রে প্রো ফ্রিল্যান্সারদের সাথে কানেক্টেড থাকতে পারেন। এছাড়াও যাদের হাতে প্রচুর কাজ থাকে এবং এসব করার সময় যারা পায় না তাদের কাজ করে দিয়ে নিজের অভিজ্ঞতা ঝালিয়ে নিতে পারেন।
কার্যকরভাবে নেটওয়ার্ক তৈরি করার জন্য, প্রথমে, দক্ষতার বিশেষ ক্ষেত্র সম্পর্কিত ইভেন্ট এবং সম্মেলনে যোগদান করতে পারেন। পাশাপাশি অনলাইনের সুবাদে তাদের সাথে পরিচিত হতে পারেন।
ধীরে ধীরে আপনার কাজের ক্ষেত্র বা আগ্রহের সাথে সম্পর্কিত সংস্থা এবং অ্যাসোসিয়েশনগুলিতে যোগ দিতে থাকুন।
কারণ আরও সম্ভাব্য ক্লায়েন্টদের সাথে সংযোগ করতে এই টেকনিকটি ম্যাজিকের মতো কাজ করে থাকে। সেই সাথে সময়ে সময়ে আয়োজিত যেকোনো চাকরির পোস্টিং, নেটওয়ার্কিং সুযোগ এবং মেন্টরশিপ প্রোগ্রামে এক্টিভ থাকার চেষ্টা করুন।
নতুন ফ্রিল্যান্সার হিসাবে আপনার প্রথম কাজ খুঁজে নেওয়ার বিষয়টি অনেক কঠিন মনে হতে পারে। তবে বেশকিছু টেকনিক খাটিয়ে এই কঠিন কাজটিকে বেশ সহজ পরিণত করা যেতে পারে। এক্ষেত্রে বেশ কার্যকর টেকনিক হলো ইমেইল মার্কেটিং।
সেরা সার্ভিস ডেসক্রিপশন এবং প্রাসঙ্গিক ইমেইজের সাহায্য নিয়ে তৈরি করুন দারুণ একটি ইমেইল টেমপ্লেট। এই ইমেইলে অবশ্যই ফ্রিল্যান্সার হিসাবে কেন আপনাকে নিয়োগ করা উচিত তা উল্লেখ করুন এবং সার্ভিস ডিটেইলসসহ, সার্ভিস চার্জ এবং অভিজ্ঞতা উল্লেখ করে মেইল করুন।
ফ্রিল্যান্সিং এর কাজ কিভাবে করতে হয়?
ফ্রিল্যান্সিং এর কাজ করতে হলে প্রয়োজন নেট কানেকশন, ল্যাপটপ, মোবাইল। সেই সাথে প্রয়োজন কোন সেক্টরে কাজ করবেন তার সঠিক সিদ্ধান্ত, কাজ করার উপায় জেনে রাখা। সেই সাথে সঠিক লক্ষ্য এবং ধৈর্যের প্রয়োজন পড়বে।
ফ্রিল্যান্সিং শিখতে কত টাকা লাগে?
ফ্রিল্যান্সিং শিখতে কত টাকা লাগবে তা নির্ভর করবে আপনার উপর। আপনি চাইলে ইউটিউবে ফ্রিতে কাজ শিখতে পারবেন। আবার ভালো এমাউন্টের সাহায্য সেরা মানের কোর্সেও জয়েন হতে পারেন।
ফ্রিল্যান্সিং করে কোন কাজে বেশি টাকা আয় করতে পারবেন?
ফ্রিল্যান্সিং করে যে কাজে বেশি টাকা আয় করতে পারবেন সেই কাজটি হলো ওয়েবসাইট ডেভলপমেন্ট। এই সেক্টরের কাজের চাহিদা দেখার মতো কিন্তু ভালো সেলার নেই। সুতরাং এই সেক্টরে কাজ করে আপনি ভালোই আর্নিং জেনারেট করতে পারেন৷
আশা করি কোন অভিজ্ঞতা ছাড়াই কিভাবে ফ্রিল্যান্সিং শুরু করবেন তা বুঝতে পেরেছেন। এক্ষেত্রে আমরা অভিজ্ঞতা ছাড়াই কাজ করার পরামর্শ দিলেও ধীরে ধীরে প্র্যাকটিস করার মাধ্যমে দক্ষতা বাড়ানোরও পরামর্শ দিচ্ছি। কারণ দক্ষতা ছাড়া এই সেক্টরে বেশিদিন টেকা সম্ভব হবে না।