২৫ জুন নিউইয়র্কে “ঢালিউড ফিল্ম অ্যান্ড মিউজিক অ্যাওয়ার্ড ২০২৩” নামক বিতিকিচ্ছিরি অনুষ্ঠানের ঠমক চমক দেখে এবারও মনে হয়েছে, সংস্কৃতির নামে গোপন ব্যবসা বাণিজ্য ভালোই চলছে।
আমাদের দেশীয় সংস্কৃতি ধারণ করার নামে চলছে অন্ধকারাচ্ছন্ন অপকর্মের লেজুড়বৃত্তি। বরাবরের মতই এদের সিজনাল এই ব্যবসাটা রমরমা হয় সেলিব্রেটির খোলসে আবৃত নষ্টা নারীদের ব্যবহার করে। বাংলাদেশে নাটকে অভিনয় করে সি গ্রেডধারী অভিনেত্রী কেয়া পায়েলের অ্যাটিটুড ছিল অস্কারজয়ী তারকা জুলিয়া রবার্টসের মত। অবশ্য ময়ূরপুচ্ছ পরলে তো আর কাক ময়ূর হয়না। স্বল্প পরিচিতি পাওয়া এসব কেয়া পায়েলরা নিউইয়র্কের বাংলাদেশি কম্যুনিটির সেরা বিনোদনের আইটেম ছাড়া আর কিছু নয়। এবার ঢালিউড অ্যাওয়ার্ডে প্রিয় মণি নামের এক নতুন আইটেম আমদানি হয়েছে। প্রিয় মণি নাম আমি আজ অবধি শুনিনি। নিউইয়র্কের মানুষ তাকে চেনেও না।
ঢালিউড অ্যাওয়ার্ডের মাথা মোটা কর্তারা ঢাকার এই অখ্যাত প্রিয় মণিকে স্টেজে তুলে রাইজিং স্টারের স্বীকৃতি দিয়েছেন। এ কেমন রাইজিং স্টার? “বিশেষ যোগ্যতার” জোরে এসব ক্লাসহীন মেয়েরা রাতারাতি খ্যাতি কামাই করে। একখান সুন্দর ফিগার থাকলে আজকাল অনায়াসে খ্যাতি জুটে যায়। কোনো ছবি মুক্তি পায়নি কিন্তু তিনি নায়িকা !! সবকিছু খুলে ভেঙেচুরে লিখার দরকার মনে হয় নেই। কারণ মানুষ এগুলো বোঝে।
জায়েদ খানকে দেখলাম স্ট্রেজে উঠে বেশ বিব্রত হতে হয়েছেন। মানুষের কাছ থেকে ভুয়া ভুয়া ধ্বনি শুনে জায়েদ খানকে তার কান জুড়াতে হয়েছে। আসলে পাবলিকের দোষ দেবোনা। আমি দেখেছি নিউইয়র্কের সাধারণ পাবলিক তাদের আচার আচরণে সর্বদাই “To be honest” থাকেন। যেমন, জায়েদ খান কিন্তু স্টেজে উঠার জন্য ইললিজিবল নন। উনি এমন কিছু শৈল্পিক কলা দেখাতে সক্ষম হননি যে নিউইয়র্কের বিনোদন প্রত্যাশী মানুষ তাকে অ্যাপ্রিশিয়েট করবে। জায়েদ তার অভিনয় জীবনে ছিটেফোঁটা ক্রেজ সৃষ্টি করতে পারেননি। কিন্তু আয়োজকবৃন্দ তাকে এমন ফিল দিয়েছেন যে, জায়েদ নিজেকে মুম্বাইয়ের সালমান খান ভেবেছেন। জায়েদ একটু বিচার বিবেচনা খরচা করলে এমন উদ্ভট পরিস্থিতিতে পড়তেন না। জায়েদের হেঁড়েকন্ঠশ্রী শুনে সুস্থরুচির মানুষ আহত হয়। আমি জায়েদ খানকে একটা সুন্দর পরামর্শ দিতে চাই- ইকোনমি ক্লাসে
আমাদের বাঙালি কম্যুনিটির তথাকথিত সাধু সন্যাসীদের দশা দেখলে স্পষ্ট বুঝা যায় এরা আইডেন্টিটি ক্রাইসিসে ভুগছেন। শো’তে সামনের চেয়ারগুলো দখলে নিয়ে নেন তারা। শুধু তাই নয় এসব নির্লজ্জ বেহায়া ব্যক্তিত্বহীন অথর্ব পুরুষগুলো তাদের স্ত্রীদের শরীরে রঙ পালিশ করে সাজুগুজু করিয়ে সামনের সারিতে বসিয়ে রাখে। ক্যামেরার ফোকাস আর নিউজে আসার জন্য এদের প্রাণ ওষ্টাগত হয়ে ওঠে। এরা নিজেদেরকে বাংলা সংস্কৃতির প্রতিনিধি পরিচয় দিয়ে সংস্কৃতির অপচর্চ্চা করছে। এদের বীভৎস ছোবলের কারণে বিদেশে আমাদের বাংলা সংস্কৃতি মুখ থুবড়ে পড়েছে।
সবশেষে জায়েদ খানকে আমি একটা সুপরামর্শ দিতে চাই। প্লেনের বিজনেস ক্লাসে ভ্রমণ করলে তা নিয়ে ঢোল বাজাতে হয়না। এটাকে “অপরিপক্ক মস্তিষ্কধারী” বলে। মানুষ তাকে আদেখলা বলছে, তামাশা বিদ্রুপ করছে।। নিউইয়র্কে জায়েদের কোনো ভক্ত নেই। কিন্তু চঞ্চল চৌধুরী মোশাররফ করিমদের প্রচুর ভক্ত আছে। তারপরও কম্যুনিটির কিছু বখে যাওয়া মেয়ের শখ হয়েছে জায়েদের সাথে ছবি তুলতে যাওয়ার। নিউইয়র্কে যে পরিমাণ ব্যাঙ্গ বিদ্রুপের শিকার তিনি হয়েছেন, মান সম্মানবোধ থাকলে দশবার তওবা করবেন, ভবিষ্যতে আর কোনো “ঢালিউড ফিল্ম অ্যান্ড মিউজিক অ্যাওয়ার্ডে” আসার কথা ভুলেও ভাববেন না।
লিখেছেনঃ মিলি সুলতানা