আলোচিত “রাজকুমার” ছবির গান অলরেডি বরবাদ হয়ে গিয়েছে বালামের মত ভুল শিল্পী সিলেকশনের কারণে। একটু ভাবুন, এসআই টুটুল এবং আসিফ আকবরের ভরাট কণ্ঠস্বরের সাথে শাকিবকে সবচেয়ে বেশি মানায়। আমি নিরপেক্ষ মতামত দিয়েছি যে গানটা বালামকে দিয়ে না গাইয়ে আসিফ আকবরকে দিয়ে গাওয়ালে ব্যাপক শ্রুতিমধুর হতে পারতো। শাকিবের সাথে সুসম্পর্কের জের ধরে তার সব মুভিতে কোনালকে দিয়ে প্লেব্যাক করানো হয়। কোনালের টিপিক্যাল ভয়েস শুনতে শুনতে শ্রোতারা ত্যক্তবিরক্ত হয়ে গেছে। দেশে কি কোনালই একমাত্র শিল্পী? তার চেয়ে আরও ভালো ভালো শিল্পী আছেন। কোনালের একঘেঁয়ে কণ্ঠের অত্যাচার থেকে দর্শক শ্রোতাদের রেহাই দেয়ার কথা শাকিবদের সিরিয়াসলি ভাবা উচিত। আমার বিশ্বাস ভবিষ্যতে শাকিব এই ভুল আর করবেন না।
সম্ভবত করোনা কালে নিউইয়র্কে রাজকুমার সিনেমার শ্যুটিং শুরু হবার কথা ছিল। তখন এই ছবির প্রযোজক ছিলেন নিউইয়র্কের স্বনামধন্য ব্যক্তি জাকারিয়া মাসুদ জিকু। শাকিব খানের সঙ্গে পরিচালক হিমেল আশরাফও তখন আমেরিকায় ছিলেন। জিকু সাহেবের ব্যবস্থাপনায় শাকিবের জন্মদিন পালনের আয়োজন করা হয় ওয়ার্ল্ডফেয়ার মেরিনায়। নিজের পকেট থেকে প্রায় বিশ হাজার ইউএস ডলার খরচা করেন প্রোডিউসার জাকারিয়া মাসুদ জিকু। রাজকুমারের নায়িকা হিসেবে তারা আনকোরা মুখের সন্ধানে নামেন। কোর্টনি কফি খ্যাতিমান কোনো অভিনেত্রী নন। বলতে গেলে তিনি খুচরা অভিনেত্রী। মিডিয়ায় তার সম্পর্কে কোনো ইনফরমেশন নেই। তবে শাকিব খান বাদামি চুলের কোর্টনি কফিকে খুব পছন্দ করেন। করোনার কারণে বেশ অনেকটা সময় কেটে যায়। পট পরিবর্তন হয়। হিমেল আশরাফ জাকারিয়া মাসুদ জিকুকে জানান রাজকুমারের প্রযোজক বদল হয়েছে। আরশাদ আদনান এই ছবি প্রযোজনা করতে আগ্রহী। বিগ বাজেটের ছবি। এবার বাজেট প্রায় ৯/১০ কোটি টাকা। আগে বাজেট ছিল প্রায় তিন কোটি টাকার মত। জিকু সাহেব যেহেতু প্রচুর টাকা খরচ করে ফেলেছেন তাই তিনি হিমেল আশরাফদের কাছে তার টাকা দাবী করেন। যদিও এখন পর্যন্ত জিকু সাহেবকে টাকা ফেরত দেয়া হয়নি। তিনি তার টাকা ফেরত পাওয়ার জন্য অপেক্ষা করছেন।
ছবির গল্প খুব ফ্ল্যাট। নতুনত্ব নেই, আকর্ষণ নেই। বেকার যুবকের আমেরিকা যাবার স্বপ্ন নিয়ে গল্প। এমন গল্প নিয়ে কয়েক দশক আগে শাবানা মাহমুদ কলিকে নিয়ে “দেশ বিদেশ” নামে একটি চলচ্চিত্র নির্মিত হয়েছে। প্রিয়তমার গল্পে যথেষ্ট বৈচিত্র্য ছিল। কিন্তু রাজকুমার ছবিতে তা বলতে গেলে নেই। হিমেল আশরাফের আমেরিকায় যাপিত একবছরের অভিজ্ঞতার গল্পকে তিনি সিনেমা আকারে সাজিয়েছেন। বিগ বাজেটের ছবিতে এগুলো খেয়াল করা উচিত ছিল। যেমন টাইটেল সংয়ের বিষয়টাও। ব্যক্তিগত সুসম্পর্কের কারণে বালামকে দিয়ে গান গাইয়ে গানের সৌন্দর্যহানি ঘটেছে। মনে হয়েছিল আরেফিন রুমির একই স্টাইলের গান শুনছি। রুমির অধিকাংশ গানকে আমি আলাদা করতে পারিনা। একই তাল লয়ের গান, যার সুর বেশিক্ষণ মনে রাখা যায়না।
নায়িকা নির্বাচনেও তারা বুদ্ধিহীনতার পরিচয় দিয়েছেন। শ্বেতাঙ্গিনীর কাছ থেকে আবেগ কিভাবে বের হবে? বিদেশিনীকে না নিয়ে ইধিকা পাল অথবা মিমি চক্রবর্তীদের নিতে পারতেন। সেলুলয়েডের ফিতায় শাকিব কিভাবে নায়িকার কমতি পূরণ করবেন সেটা দেখার বিষয়। মনে হচ্ছে শাকিব খান নিজের জন্য বিপদ ডেকে এনেছেন।
লিখেছেন – মিলি সুলতানা