‘‘সাহরি খেতে না পারলে রোজা হয় না’’ এই কথাটি সম্পূর্ণ ভুল ও বিভ্রান্তিকর। সাহরি খাওয়া গুরুত্বপূর্ণ সুন্নাহ, তবে এটি আবশ্যক নয়। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, ‘‘তোমরা সাহরি খাও; কেননা, সাহরিতে বরকত রয়েছে।’’ [ইমাম বুখারি, আস-সহিহ: ১৯২৩]
অন্য হাদিসে এসেছে, ‘‘আমাদের ও আহলে কিতাবদের (ইহুদি-খ্রিষ্টানদের) রোজার মাঝে পার্থক্য হলো সাহরি খাওয়া।’’ [ইমাম মুসলিম, আস-সহিহ: ২৪৪০]
সুতরাং অল্প কিছু হলেও সাহরি খেয়ে রোজা রাখা উচিত। অনেকে সাহরি না খেয়ে রোজা রাখাটা অভ্যাসে পরিণত করেছেন। এটা করা যাবে না। ইচ্ছা করে সাহরি না খেয়ে রোজা রাখা মাকরুহ (অপছন্দনীয়), যদিও রোজা আদায় হবে। তাছাড়া, বিশেষ কোনো কারণে সাহরি খেতে উঠতে না পারলেও রোজার কোনো ক্ষতি হবে না। সাহরি যথাসম্ভব শেষ সময়ে খাওয়া উত্তম। শেষ সময় মানে আজান পর্যন্ত নয়। আজানের অন্তত ৩ মিনিট আগে সাহরি শেষ করা আবশ্যক, না হলে রোজা হবে না। কারণ বাংলাদেশের প্রায় সকল মসজিদে ফজরের আজান দেওয়া হয় ফজরের ওয়াক্ত শুরু হওয়ার ৩ মিনিট পর। সুতরাং ‘আজান পর্যন্ত খাওয়া’র ধোঁকায় পড়বেন না। এই বিষয়ে ডিটেইলস একটি পোস্ট দেবো, ইনশাআল্লাহ।
‘‘তারাবি না পড়লে রোজা হয় না’’ এটিও একটি ভুল কথা। তারাবি এবং রোজা ভিন্ন দুটো আমল। একটির জন্য আরেকটি ক্ষতিগ্রস্ত হবে না। তারাবি পড়া সুন্নাত; সুতরাং, তারাবি পড়তে হবে। হাদিসে এসেছে, ‘‘যে ব্যক্তি ঈমানের সাথে এবং সওয়াবের আশায় রামাদানে (রাতে নামাজে) দণ্ডায়মান হবে, তার পূর্বের সকল গুনাহ ক্ষমা করে দেওয়া হবে।’’ [ইমাম বুখারি, আস-সহিহ: ২০০৯]
তবে, কোনো কারণে তারাবি না পড়লেও রোজা ছাড়া যাবে না। কারণ রোজা রাখা ফরজ আর তারাবি সুন্নাত।