জন্ম নিবন্ধন ৩ টি লিঙ্ক থেকে ডুকতে পারবে ।

ভোগান্তির নাম জন্ম-মৃত্যু নিবন্ধন।

প্রবাস প্রতিদিন
আপডেটঃ : শনিবার, ৭ অক্টোবর, ২০২৩
জন্ম নিবন্ধন

একজন শিশু জন্মের পর প্রথম রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি জন্ম নিবন্ধন। আইনে বলা হচ্ছে ধর্ম, জাতি-গোষ্ঠী, বয়স, কিংবা জাতীয়তা নির্বিশেষে বাংলাদেশে জন্মগ্রহণকারী প্রত্যেক মানুষের জন্য জন্ম নিবন্ধন বাধ্যতামূলক। নিবন্ধন প্রক্রিয়া শেষে কর্তৃপক্ষ নিবন্ধনকারীকে একটি সার্টিফিকেট দেবেন। অনলাইন জন্ম নিবন্ধন কার্যক্রম শুরু হয় ২০১০ সাল থেকে, ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার পদক্ষেপ হিসেবে। যদিও বলা হচ্ছে, অনলাইনে দেশব্যাপী নিবন্ধন কার্যক্রম চলছে। কিন্তু বাস্তবে বিষয়টি সেরকম নয়। প্রায় সময়ই সার্ভার ডাউন অথবা অন্য কোনো ত্রুটির অজুহাতে অনলাইনে জন্ম নিবন্ধন প্রায় অসম্ভব। যে কারণে দেশের মানুষকে বাধ্য হয়ে, দ্বারে দ্বারে ধরনা দিতে হচ্ছে নিবন্ধনের জন্য। আসলে মানুষকে ভোগান্তিতে ফেলে, অবৈধ অর্থ উপার্জনের কৌশলই মুখ্য। সেই কারণেই কি অনলাইন কার্যক্রমকে নিষ্ক্রিয় রাখা হয়েছে?

জন্ম নিবন্ধন সার্ভারে তিনটি এড্রেস দিয়ে কাজ করা যাবে এখন থেকে কিছুটা দূর্ভোগ কমবে।

১। সার্ভার

২। সার্ভার

৩। সার্ভার

 

অনলাইনেই জনগণকে ‘এই’ সেবা দেওয়া হবে এমন কথা শুনলেই একশ্রেণির সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীর ঠোঁট-মুখ শুকিয়ে যায়। তাদের হাত-পা যেন অবশ হয়ে আসে। জনগণকে ভোগান্তিতে না ফেলতে পারলে, বাড়তি ‘টাকা’ কোত্থেকে আসবে? যে কারণে জন্ম ও মৃত্যু নিবন্ধনের দায়িত্বে থাকা রেজিস্ট্রার জেনারেলের কার্যালয় এবং ঢাকা সিটি করপোরেশনের কর্মকর্তারা বলছেন, আগে জন্ম নিবন্ধন সনদ নিয়েছেন এমন কয়েক কোটি মানুষকে নতুন করে অনলাইনে জন্ম নিবন্ধন করাতে হবে, কারণ তাদের আগের নিবন্ধন গায়েব হয়ে গেছে। এসব ব্যক্তির জন্ম নিবন্ধন অনলাইনে আপডেট করা হয়নি এবং এখন নতুন সার্ভারে আর পুরনো তথ্য স্থানান্তর করা সম্ভব হবে না। ২ বছর আগে এমন কথা শোনার পর দেশের অধিকাংশ মানুষ আবার নিবন্ধন করেছেন। অবশ্য সেই নিবন্ধন অনলাইনে নয়, একজন মানুষকে অফিসে গিয়ে টেবিলের পর টেবিল দৌড়ে, ঘুষ দিয়ে নিবন্ধন সম্পন্ন করতে হয়েছে। ভোগান্তির এখানেই শেষ নয়। তখন এমন কথাও বলা হয়েছিল, যারা ম্যানুয়ালি জন্মসনদ নিয়েছেন তাদের মধ্যে যারা নিজ উদ্যোগে বা সংশ্লিষ্ট নিবন্ধন অফিস থেকে অনলাইনে এন্ট্রি করেননি, তাদের জন্ম নিবন্ধন সংক্রান্ত তথ্য সার্ভারে নেই।

এ বিষয়ে শুক্রবার দেশ রূপান্তরে প্রকাশিত ‘সনদ পেতে দপ্তর থেকে দপ্তরে’ প্রতিবেদন থেকে জানা যাচ্ছে ভুক্তভোগীরা বলছেন, কারও জন্ম বা মৃত্যু সনদ লাগলে প্রথমে যেতে হয় কাউন্সিলর বা মেম্বার কার্যালয়ে। সেখান থেকে পাঠানো হয় সংস্থার স্বাস্থ্য বিভাগ বা ইউনিয়ন পরিষদ কার্যালয়ে। কাগজপত্র নিয়ে যাওয়া ব্যক্তিকে হতাশ করে বলা হয়, অনলাইনে আবেদন করে নিয়ে আসুন। তাৎক্ষণিক বাইরে থেকে আবেদন করে বা অন্য কোনো দিন আবার যেতে হয় ওই দপ্তরে। এরপর মেলে কাক্সিক্ষত সনদ।

সার্ভারের ধীরগতি, নিবন্ধন ও ভুল সংশোধন পদ্ধতি জটিল করায় নাগরিকদের অন্তহীন দুর্ভোগে পড়তে হয়। অবস্থা এমন হয় যে, ভোগান্তির আরেক নাম জন্ম-মৃত্যু নিবন্ধন কার্যক্রম।

জন্ম নিবন্ধন সনদ ব্যবহার করে ১৭ ধরনের সেবা পেতে সারা দেশের মানুষের ভোগান্তির সীমা নেই। পাশাপাশি মৃত্যু নিবন্ধন করতে না পারায় মৃত ব্যক্তির উত্তরাধিকারদের সম্পত্তি বণ্টন, পেনশনপ্রাপ্তিতেও হয়রানিতে পড়তে হয়। আর মৃত্যু নিবন্ধন না করলে প্রকৃত জনসংখ্যাও নির্ণয় করতে অসুবিধায় পড়ে সরকার। গত কয়েক মাস ধরে জন্ম-মৃত্যু নিবন্ধন সার্ভারে আবেদন করতে বিপাকে পড়েছেন নাগরিকরা। সরকারের সেন্ট্রাল সার্ভার হ্যাকড হওয়ায় এ অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। চলতি মাস থেকে দক্ষিণ সিটি কর্র্তৃপক্ষ নিজস্ব সার্ভারে জন্ম-মৃত্যু নিবন্ধন কার্যক্রম শুরু করেছে। আর ঢাকা উত্তর সিটি সেবা সহজীকরণ করতে আঞ্চলিক কার্যালয় থেকে জন্ম-মৃত্যু নিবন্ধনের দায়িত্ব ওয়ার্ড কাউন্সিলরদের ওপর ন্যস্ত করেছে। এখানে সমস্যা দুই ধরনের। প্রথমত, ওয়ার্ড সচিবরা জন্ম-মৃত্যু নিবন্ধন কাজ করার বিষয়ে দক্ষ নন। দ্বিতীয়ত, ওয়ার্ড কাউন্সিলরদের বেশিরভাগই দিনের বেলায় অফিস করছেন না। যে ধরনের সেবা পেতে দরকার জন্ম-মৃত্যু নিবন্ধন, সেই সেবাও নেই নিবন্ধন ছাড়া। দেশের জনসংখ্যা ১৬ কোটি ৯৭ লাখ হলেও জন্মসনদ ইস্যু করা হয়েছে ১৯ কোটি ৩৫ লাখ!

জন্ম-মৃত্যু নিবন্ধন নিয়ে যে জটিলতা তৈরি হয়েছে, তার দ্রুত সমাধান দরকার। কীভাবে জন্মসনদ দেশের জনসংখ্যার চেয়েও বেশি হয়ে যাচ্ছে সে বিষয়ে তদন্ত করে অপরাধীকে দ্রুত আইনের আওতায় এনে কঠোর শাস্তি নিশ্চিত করা জরুরি।

 

 


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই ক্যাটাগরির আরো নিউজ