নারী গৃহকর্মীদের ব্যাপারে কঠোর হচ্ছে সৌদি আরব

প্রবাস প্রতিদিন
আপডেটঃ : সোমবার, ৩১ জুলাই, ২০২৩

সৌদি আরবে নারী গৃহকর্মীদের কর্মক্ষেত্র সুরক্ষায় নতুন নিয়ম করেছে দেশটির সরকার। নারীদের সামাজিক নিরাপত্তা ও অধিকার রক্ষার ক্ষেত্রে নতুন এ আইন প্রয়োগের কঠোরতার কথা বলা হয়েছে। গৃহকর্মীর সঙ্গে খারাপ আচরণ ও চুক্তির বাইরে কাজ করানো হলে বিধান রাখা হয়েছে নিয়োগকর্তার বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেয়ারও।

আরও পড়ুন: সৌদি আরবে কোন ভিসা ভালো?

২০১৫ সালের পর থেকে সৌদি আরবে ব্যাপকহারে বাংলাদেশিসহ বিভিন্ন দেশের নারী গৃহকর্মীরা কাজের জন্য আসতে শুরু করেন। নতুন নিয়মে গৃহকর্মীরা দেশটিতে একক কোনো সৌদি স্পন্সরের মাধ্যমে না এসে, নির্দিষ্ট নিয়োগকারী অফিসের তত্ত্বাবধানে সৌদি নাগরিকদের কাছে কাজের জন্য নিয়োজিত হন। এক্ষেত্রে সুবিধা-অসুবিধা বিবেচনায় গৃহকর্মীদের কর্মস্থল পরিবর্তনের সুযোগ থাকে নিয়োগকারী অফিসের।
তবে অনেক সময়ই গৃহকর্মীদের ওপর নির্যাতনের খবর পাওয়া যায়। বিগত বছরগুলোতে অনেক সময় নারী গৃহকর্মীদের কর্মক্ষেত্রে সামাজিক সুরক্ষা ব্যাহত হতো। এ কারণে সৌদি মানবসম্পদ ও সামাজিক উন্নয়ন মন্ত্রণালয় সম্প্রতি গৃহকর্মীদের স্বার্থ সুরক্ষায় নতুন বিধি জারি করেছে।
 
এতে বলা হয়েছে, গৃহকর্মীদের সঙ্গে দুর্ব্যবহার করার জন্য দোষী সাব্যস্ত হলে গৃহকর্তাদের এক বছরের নিয়োগ নিষেধাজ্ঞার সম্মুখীন হতে হবে। পাশাপাশি নিয়োগকর্তাদের ২ হাজার সৌদি রিয়াল সমপরিমান অর্থদণ্ড করা হবে। 
 
একই বিধানে নিয়োগকর্তার গোপনীয়তা রক্ষায় গৃহকর্মীদের বাধ্যবাধকতার কথাও বলা হয়েছে। কর্মক্ষেত্রে একাধিকবার বিধি লঙ্ঘন করলে গৃহকর্মীর নিজ খরচে অথবা নিজ দেশের রাষ্ট্রীয় খরচে দেশে ফেরত পাঠানোর বিধান রাখা হয়েছে। 
নতুন বিধানে জোর দেয়া হয়েছে যে, গৃহকর্মীকে অবশ্যই তাদের নিয়োগকর্তার সম্পত্তির মর্যাদা রক্ষা করতে হবে। তিনি নিয়োগকর্তার পরিবারের কোনো সদস্যের ক্ষতি করলে তাকে শাস্তির আওতায় আনা হবে। নিয়োগকর্তা এবং পরিবার সম্পর্কিত তথ্যের গোপনীয়তাও তাকে রক্ষা করতে হবে।
 
এছাড়া নিয়োগকর্তার ক্ষেত্রে তিনবার বিধি লঙ্ঘন করলে তার জন্য গৃহকর্মী নিয়োগে স্থায়ী নিয়োগ নিষেধাজ্ঞার বিধান রাখা হয়েছে। এতে আরও বলা হয়েছে, একেবারে প্রয়োজন না হলে কর্মীকে তার সঙ্গে করা চুক্তির বাইরে কোনো কাজ করানো যাবে না। চুক্তি অনুযায়ী মাসিক মজুরি নগদ বা ব্যাংক চেক অথবা তাদের ব্যাংক অ্যাকাউন্টে স্থানান্তর করতে হবে। এছাড়া প্রতিদিন কমপক্ষে ৯ ঘণ্টা তাকে বিশ্রামের সুযোগ দিতে হবে।  
 
এতসব আইন ও বিধি-নিষেধের মধ্যেও সাম্প্রতিক বছরগুলোতে নির্যাতনের শিকার হয়ে বিপুল সংখ্যক নারী গৃহকর্মীকে সৌদি আরব থেকে দেশে ফিরতে হয়েছে। বর্তমানে সৌদি আরবে বাংলাদেশি ২৮ লাখ অভিবাসীর মধ্যে ৩ লাখের বেশি গৃহকর্মী হিসেবে কাজ করছেন।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই ক্যাটাগরির আরো নিউজ