চলতে চলতে হঠাৎ করে একটি বিড়াল যদি আপনার চোখে পড়ে যায় তখন আপনার ফিলিংস কেমন হয়! একটু মাথায় হাত বুলিয়ে দিতে ইচ্ছে করে? প্রাণ ভরে আদর করতে ইচ্ছে করে? কোনো সমস্যা নেই। করে ফেলুন। কারণ নিঃসন্দেহে আপনি একজন সফ্ট মনের মানুষ। আপনি কি জানেন ইসলামে আপনার এই কোমলতার মর্যদা কতো বেশি? আর ইসলামে বিড়ালের উপকারিতা সম্পর্কে জানতে চাইলে আমাদের আজকের এই আর্টিকেলের সাথেই থাকুন।
আপনার ঘরে কি কোনো বিড়াল নেই? তবে নিঃসন্দেহে আপনি অনেক বড়ো কিছু মিস করছেন। চলুন আজকের এই আর্টিকেলের মাধ্যমে জেনে নিই ইসলামে বিড়াল কতোটা গুরুত্বপূর্ণ। আমাদের মহানবী হযরত মুহাম্মদ (সঃ) বিড়াল খুবই পছন্দ করতেন। চলুন ইসলামে বিড়াল পালনের উপকারিতা সম্পর্কে কিছু গুরুত্বপূর্ণ তথ্য জেনে নিই।
একবার ভেবে দেখুন ঘরে আপনি একা। আপনার পোষা বিড়াল ছাড়া আর কেউ আপনার সঙ্গে নেই। চোখ বন্ধ করে একবার ভাবুন আপনার অনুভূতিতে বিড়ালের উপস্থিতি আপনাকে দারুণ সঙ্গ দিচ্ছে। আপনার একাকিত্ব বোধ হচ্ছে না। কারণ বিড়াল শুধু একটি পোষা প্রাণী নয়।
আপনার এই একাকী মুহূর্তে আপনাকে দুশ্চিন্তা থেকে বাঁচাতে সাহায্য করে। আপনার উদ্বেগ, মানসিকচাপ ইত্যাদি বিষয়ে চাপ কমাতে সাহায্য করে। তাছাড়া সুখ শান্তির কিছু মুহূর্ত আপনাকে উপহার দেয়। আপনার মনেই হবে না আপনি একা আছেন। সুতরাং বলা যায় ইসলামে বিড়াল পালনের উপকারিতাগুলোর মাঝে এটি একটি।
আপনি যদি বিড়াল লালন পালন করেন তবে নিজেকে অনেক বেশি দায়িত্বশীল হিসেবে গড়ে তুলতে পারবেন। কি? বিশ্বাস হচ্ছে না? শুধু তাই নয়! ইসলাম এই দায়িত্বশীলতার শিক্ষাকে উচ্চ মর্যাদার আসনে স্থান দিয়েছে। একটি বিড়াল পালন করে আপনিও নিজেকে এই দায়িত্বশীলতার শিক্ষার মতো একটি গুরুত্বপূর্ণ গুণে নিজেকে গুণান্বিত করতে পারেন।
বিড়াল পালন করে আপনি অভ্যস্ত হতে পারেন দানশীলতার মতো মহৎ শিক্ষায়। একটি হাদিসে উল্লেখ আছে, রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, “প্রত্যেক জীবিত প্রাণীর প্রতি প্রদত্ত দান বা খাওয়ানো একটি সদকা।” (বুখারি ও মুসলিম)।
বিড়ালকে যত্ন সহকারে খাবার পানি দেওয়া দান সমতুল্য। চলুন আদর যত্ন সহকারে বিড়াল পালন করে আল্লাহ এবং রাসুলের সন্তুষ্টি অর্জন করি। সাথে সাথে নিজেকে দানশীলতার শিক্ষায় শিক্ষিত করি। গুরুত্ব বুঝি ইসলামে বিড়ালের উপকারিতার!
আপনি কি জানেন, প্রতিটি প্রাণীর সন্তুষ্টি আল্লাহর সন্তুষ্টি ও ক্ষমাপ্রাপ্তির মাধ্যম হতে পারে? একটি বিড়ালের সন্তুষ্টি আল্লাহর কাছে আপনার নাজাতের উছিলা হতে পারে। তাছাড়া বিড়ালের সন্তুষ্টিকে উছিলা করে আপনি আল্লাহর কাছে ক্ষমা প্রাপ্ত হতে পারেন।
পোষা প্রাণী পালন আমাদের সহানুভূতির ক্ষমতা বাড়ায়। বিড়াল পালনের মাধ্যমে আমরা তাদের অনুভূতি বোঝার চেষ্টা করি এবং তাদের সব ধরনের প্রয়োজন মেটানোর চেষ্টা করি। এটি আমাদের সহানুভূতি বৃদ্ধি করে এবং মানুষ ও প্রাণীর প্রতি ভালোবাসা ও যত্নের মনোভাব গড়ে তোলে।
ইসলাম ধর্মে বিড়াল একটি পরিচ্ছন্ন প্রাণী হিসেবে পরিচিত। হাদিসে উল্লেখ আছে, “বিড়াল অপবিত্র নয়; বরং তারা পরিচ্ছন্ন প্রাণী।” (তিরমিজি)। ইসলাম ধর্মে বিড়াল একটি পবিত্র ও পরিচ্ছন্ন প্রাণী হিসেবে পরিচিত। তাছাড়া আল্লাহ রাসুলের প্রিয় প্রাণী এই বিড়াল। চলুন বিড়াল পালনে আমরা সচেষ্ট হই, গুরুত্ব প্রদান করি ইসলামে বিড়ালের উপকারিতার প্রতি! আর তাদের পরিচ্ছন্নতা বজায় রাখি।
বিড়াল পালনের একটি বৈশিষ্ট হলো ইসলামে বিশেষ উপকারিতার বর্ণনা আছে এটির। আমাদের নবী মুহাম্মদ (সা.) এর সুপারিশ লাভের একটি মাধ্যমও হতে পারে এই পোষা প্রাণীটি। নবী করিম (সা.) বলেছেন, “যে ব্যক্তি প্রাণীদের প্রতি দয়া দেখায়, সে আমার উম্মত।” এতে খুব সহজেই বুঝা যায় বিড়াল পালন আমাদের নবীর সুপারিশ লাভের একটি অন্যতম কারণ হতে পারে।
বিড়াল আমাদের প্রিয় নবীর প্রিয় একটি প্রাণী। তিনি বিড়ালের প্রতি খুবই যত্নশীল ও সহানূভুতিশীল ছিলেন। তাছাড়া নবীর প্রিয় সাহাবিরা ও নবীর মতো বিড়ালকে খুবই ভালোবাসতেন। আর এই বিড়াল পালন করে আমরা আল্লাহর সন্তুষ্টি ও ক্ষমা পেতে পারি। উপভোগ করতে পারি ইসলামে বিড়ালের উপকারিতাসহ বিভিন্ন সুযোগ সুবিধা!
সহানুভূতি ও যত্নশীলতার চর্চা করতে পারি। বিড়াল পালন মানবিক মূল্যবোধকে শক্তিশালী করার একটি বিষয় হতে পারে। আর এটি পরকালের মুক্তির অন্যতম একটি উপায় হতে পারে।