টাঙ্গাইলের ভূঞাপুরে স্ত্রীর পরকীয়ার গোপন ছবি ও ভিডিও স্বামী দেখে ফেলার ঘটনার জেরে চিরকুট লিখে ফাঁসিতে ঝুলে আত্মহত্যা করে নারী। এ ঘটনায় পরকীয়া প্রেমিক মাসুদ ও তার সহযোগী জহুরুল তাকে আত্মহত্যার পথ বেছে নিতে বাধ্য করেছে বলে অভিযোগ করেছে প্রবাসীর স্ত্রীর পরিবার ও স্বজনরা।
আত্মহত্যায় প্ররোচনাকারী জহুরুলকে (৩২) গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। এর আগে রোববার (১৯ ফেব্রুয়ারি) সকালে মৃতের ভাই মনিরুজ্জমান মনির বাদী হয়ে পরকীয়া প্রেমিক মাসুদসহ অজ্ঞাত পাঁচজনের নামে মামলা দায়ের করেন। গ্রেপ্তারকৃত জহুরুল ঘাটাইল উপজেলার লোকেরপাড়া ইউনিয়নের রুপের বয়ড়া গ্রামের বদিউজ্জামানের ছেলে। সম্পর্কে জহুরুল প্রবাসীর স্ত্রী নুরুন্নাহারের সৎ বোনজামাই।
গ্রেপ্তারের পর প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জহুরুল পুলিশের কাছে আত্মহত্যায় প্ররোচনায় থাকার কথা স্বীকার করেছে। এছাড়া মরদেহ থেকে উদ্ধার হওয়া চিরকুটের মধ্যেও জহুরুলকে দায়ী করা হয়েছে ব্লাকমেইল করে আত্মহত্যার পথ বেছে নেয়ার জন্য।
জানা যায়, টাঙ্গাইল সদর উপজেলার চরপৌলি গ্রামের মালয়েশিয়া প্রবাসী আব্দুল আলীম তার মামাতো বোন নুরুন্নাহারকে বিয়ে করেন। বিয়ের পর থেকেই আলীম প্রবাসে থাকেন। স্বামী বিদেশ থাকায় স্ত্রী নুরুন্নাহার ভূঞাপুরে ভাড়া বাসা নিয়ে সন্তান নিয়ে বসবাস করেন। এই সুযোগে নুরুন্নাহারের সৎ বোনজামাই জহুরুলের মাধ্যমে মাসুদ নামের একজনের সঙ্গে পরকীয়ার সম্পর্কে জড়িয়ে পড়ে। পরে মাসুদ ও নুরুন্নাহারের অপত্তিকর ছবি-ভিডিও দেখিয়ে জহুরুল তাকে কুপ্রস্তাব দেয়।
এছাড়া ব্লাকমেইল করে বিভিন্ন সময় টাকা হাতিয়ে নিত। নুরুন্নাহারের স্বামী আব্দুল আলীম বিদেশ থেকে আসার পর স্ত্রীর নগ্ন ছবি ও ভিডিও দেখায় জহুরুল। পরে সে স্বামীর কাছে মোটা অংকের টাকা দাবি করে। পরে টাকা দিতে অস্বীকার করায় স্ত্রীর সামনে আলীমকে মাসুদ ও জহুরুল মারধর করে প্রাণনাশের হুমকি দিয়ে এলাকা ছাড়া করে। পরে ঘটনাটি আলীম তার স্ত্রীর ভাইকে ফোনে জানানোর পর জানতে পারে পরিবার। এ ঘটনায় শনিবার সকালে প্রবাসীর স্ত্রী ঘরে ফাঁস লাগিয়ে আত্মহত্যা করে।
মৃতের ভাই মনিরুজ্জামান জানান, বোনকে আত্মহত্যার পথ বেছে নিতে বাধ্য করেছে মাসুদ ও জহুরুল। তাদের সংসারটা নষ্ট করে দিয়েছে। অপরাধীদের দ্রুত গ্রেপ্তারসহ কঠিন শাস্তির দাবি করি।
ভূঞাপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ফরিদুল ইসলাম বলেন, প্রবাসীর স্ত্রীকে আত্মহত্যার প্ররোচনার অভিযোগে থানায় মামলা দায়ের করা হয়েছে। এ ঘটনায় মৃতের সৎ বোনজামাই জহুরুল জড়িত থাকায় তাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে সে অপরাধের কথা স্বীকার করেছে। দুপুরে তাকে জেলহাজতে পাঠানো হয়েছে।