ওমরাহ হজ্ব পালন করতে এসে সৌদিতে পালিয়েছেন হাসান শেখ নামে এক বাংলাদেশি৷ যুবক। তার বাড়ি রাজবাড়ী সদর উপজেলার আলীপুর ইউনিয়নের বারবাকপুর গ্রামে।
জানা গিয়েছে, আবু বকর সিদ্দিক নামের এক মুয়াল্লিম রাজবাড়ী জেলা থেকে প্রতিবছর ওমরাহ পালনের জন্য ২০-৩০ জন হাজ্বি নিয়ে সৌদি আরব যান। এ বছরও তারা ২১ জনের একটি গ্রুপ নিয়ে ওমরাহ করতে গত ২২ অক্টোবর সৌদিআরব পৌঁছান। সৌদিতে পৌঁছানোর ৪দিন পর সেখান থেকেই গত ২৬ অক্টোবর সকাল ১০টায় কেনাকাটা করতে যাওয়ার কথা বলে পালিয়ে যান হাসান শেখ নামের সেই যুবক। মুয়াল্লিম আবু বকর সিদ্দিক এ বিষয়ে গত ১৪ নভেম্বর রাজবাড়ী সদর থানায় একটি জিডি করেছেন।
যদি কোন বাংলাদেশী ওমরা হজের নাম করে সৌদিতে প্রবেশ করে পালিয়ে যায়, তবে তাদের অবশ্যই সৌদি আইনের আওতায় এনে শাস্তি প্রদান করা হবে। জরিমানাও হতে পারে।
এ ঘটনায় আবু বকর সিদ্দিক জানান, ‘প্রতি বছর আমি সৌদিতে ওমরাহ হজ্বের উদ্দেশ্য যাই। কখনো কোনদিন কোনো দুর্ঘটনা ঘটেনি। কিন্তু যে ছেলেটি পালিয়েছে সে আমার কাছে এসে জানায়, তার মায়ের অনেক ইচ্ছা তার ছেলেকে ওমরাহ করাবেন। একথা বলে হাসান শেখ আমাকে খুব অনুরোধ করে ওমরাহ করতে নিয়ে যাওয়ার জন্য। কিন্তু সৌদিতে যাওয়ার ৪ দিন পর ছেলেটি নিখোঁজ হয়ে যান।
তিনি আরও জানান, “হাসান শেখের আপন ভাই মোতালেব সৌদিতে রয়েছেন । সেখান থেকে আমাকে ফোন করে হাসান বলেছিল হুজুর আমি রাতে ভাইয়ের সঙ্গে এখানে থাকব এবং পরদিন চলে আসব। কিন্তু পর দিন আমি তাকে আর আসতে না দেখে আমি তার ভাইকে ফোন করি, তার ভাই আমাকে জানান, হাসান আপনাদের কাছে যাবার কথা বলে চলে গেছে।’
তিনি আরও জানান,”হাসান শেখ নিজের ইচ্ছাতেই সৌদিআরবে পালিয়েছেন। তার ভাই সৌদি আরবের রিয়াদ শহরে থাকেন। হাসান সেখানে কোনো কাজ করার জন্য হয়ত আমাকে ফাঁকি দিয়ে ওমরাহ হজের নাম করে সৌদি আরব এসেছেন ।কিন্তু আমি তার চালাকি কিছুতেই বুঝতে পারিনি।’
তিনি আরও বলেন, ‘পলাতক হাসান শেখ সৌদিতে যাওয়ার পর তার পরিবারের সঙ্গে প্রতিদিন যোগাযোগ রাখছেন । কিন্তু আমার সাথে তার পরিবারের কথা হলে তারা আমাকে জানায়, হাসান তাদের সঙ্গে কোনো যোগাযোগ করেনি।’
এদিকে এ বিষয় রাজবাড়ী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শাহাদাত হোসেন জানান,‘এ ঘটনায় আবু বকর সিদ্দিক বাদী হয়ে থানায় একটি জিডি করেছেন। বিষয়টি তদন্তে রয়েছে।
বাংলাদেশ থেকে যারাই এমন ওমরার হজ্বের নাম করে সৌদি কোন কাজের উদ্দেশ্য যাবে, তাদের এই নিন্দনীয় কর্মকাণ্ডের জন্য প্রবাসী বাংলাদেশীর ভোগান্তির শিকার হতে হবে। কেননা বর্তমানে সৌদি সরকার প্রবাসীদের জন্য সৌদি আইন খুবই কঠোরভাবে পালন করছেন। ওমরার নাম করে যারা পালিয়ে যাচ্ছে, এবং অবৈধ ভাবে বিভিন্ন শহরে প্রবেশ করছে কর্মসংস্থানের উদ্দেশ্য, এটি সৌদি আইনে সম্পুর্ণ নিষেধ। যদি কোন বাংলাদেশী ওমরা হজের নাম করে সৌদিতে প্রবেশ করে পালিয়ে যায়, তবে তাদের অবশ্যই সৌদি আইনের আওতায় এনে শাস্তি প্রদান করা হবে। জরিমানাও হতে পারে।
বাংলাদেশীদের এমন কর্মকাণ্ড এর ফলে হয়ত এক সময় সৌদি সরকার বাংলাদেশ থেকে ওমরা হজ করতে আসা বন্ধ করে দেবে। তাছাড়া এমন কাজ দেশের সম্মান ক্ষুন্ন করে। প্রবাসী যারা বাংলাদেশী রয়েছে, তারা যে যেই পেশায় সৌদিতে কর্মরত আছে, তাদের কর্মক্ষেত্রেও এটি নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে।
তাই এমন কাজ একজন বাংলাদেশী নাগরিক হিসেবে কখনোই করা উচিত নয়।