ইসলামি শিক্ষা ও আরবি সাহিত্যের প্রতি যাদের প্রবল ঝোঁক কাজ করছে তারা আল আজহার বিশ্ববিদ্যালয়ে স্কলারশিপ নিয়ে পড়াশোনা করতে পারেন।
আল আজহার বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার যাবতীয় খরচ সম্পর্কে জানুন
যারা এ ব্যাপারে আগ্রহী চলুন তাদের সাথে নিয়েই জেনে নিই আল আজহার বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তি যোগ্যতা এবং এই স্কলারশিপ সম্পর্কিত বিস্তারিত তথ্য।
মিশরের ৪০০০ টিরও অধিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে লিডিং দেওয়া এই বিশ্ববিদ্যালয় ৯৭০ অথবা ৯৭২ সালে যাত্রা তার শুরু করে৷ পূর্বে এতে ইসলামি শিক্ষার পাশাপাশি যুক্তিবিদ্যা, ব্যাকরণ, বক্তৃতা ও জ্যোতির্বিদ্যা বিষয়ে শিক্ষা প্রদান করা হলেও বর্তমানে এতে যুক্ত হয়েছে ব্যবসায় অনুষদ, অর্থনৈতিক অনুষদ, বিজ্ঞান অনুষদ, ইঞ্জিনিয়ারিং অনুষদ ও কৃষি অনুষদের মতো গুরুত্বপূর্ণ বিষয়সমূহ।
আল আজহার বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তি যোগ্যতা
যেহেতু আল আজহার বিশ্ববিদ্যালয় একটি ইসলামি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান সেহেতু আপনাকে এই বিশ্ববিদ্যালয়ে স্কলারশিপ নিয়ে পড়তে হলে বেশকিছু যোগ্যতা বা শর্ত নিশ্চিত করতে হবে।
তবে যাদের মাঝে নিম্নোক্ত যোগ্যতাগুলি নিহিত রয়েছে তারা অন্যান্য প্রতিযোগীদের তুলনায় বেশ এগিয়ে থাকবে। উক্ত যোগ্যতাগুলি হলো:
এই বিশ্ববিদ্যালয়ে কম্পিটিশন সবসময়ই অনেক বেশি থাকে। কারণ বাংলাদেশ থেকে প্রতি বছর মাত্র ১০ জন শিক্ষার্থী এখানে পড়াশোনা করার সুযোগ পায়। আর এই সুযোগ পেতে হলে আপনাকে সরাসরি যোগাযোগ করতে হবে বাংলাদেশ শিক্ষা মন্ত্রনালয়ের সাথে।
যেহেতু প্রতিবছরই এই বিশ্ববিদ্যালয় সারা বিশ্ব থেকে মাত্র কিছুসংখ্যক শিক্ষার্থীদের সুযোগ প্রদান করে সেহেতু এই স্কলারশিপের কিছু না কিছু নিয়ম প্রতি বছরই পরিবর্তন করা হয়ে থাকে।
আর এই পরিবর্তিত নিয়মকানুন সম্পর্কে জানতে হলে আপনাকে নিয়মিত তাদের অফিসিয়াল ওয়েবসাইটে চোখ রাখতে হবে।
প্রতি বছরই এর নিয়মকানুন পরিবর্তন করা হয় বলে নির্দিষ্ট করে কোনও কাগজপত্র সম্পর্কে বলা যাচ্ছে না। তবে যেসব কমন ডকুমেন্টস ছাড়া আপনি আল আজহার বিশ্ববিদ্যালয়ে আবেদন করতে পারবেন না সেসব কমন ডকুমেন্টস হলো:
আবেদন করার পাশাপাশি যারা আবেদন করার পর সিলেক্টেড হবেন তাদের উপরোক্ত ডকুমেন্টসসহ শিক্ষা মন্ত্রণালয় এবং পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে উপস্থিত হতে হবে। উভয় কতৃপক্ষই আপনার এসব ডকুমেন্টস মিশর অ্যাম্বসিতে পাঠিয়ে দেবে। যার মাধ্যমে নিশ্চিত হবে আপনার এই স্কলারশিপ।
আপনি যদি আল আজহার বিশ্ববিদ্যালয়ে স্কলারশিপ পান সেক্ষেত্রে বেশকিছু সুবিধা ভোগ করার সুযোগ আপনার হবে। যেমন:
আমন্ত্রণ: অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়ের চাইতে এই আল আজহার বিশ্ববিদ্যালয়ের সিস্টেম কিছুটা ভিন্ন। যেমন আল আজহার বিশ্ববিদ্যালয়ে চান্স পেলে আপনার অপেক্ষায় এবং আপনাকে বিমানবন্দর থেকে আনার জন্য অপেক্ষা করবে বাংলাদেশ স্টুডেন্টস অর্গানাইজেশন মিশর।
ফ্রি সুবিধা: মিশরে নামতেই আপনি ফ্রি সুযোগ সুবিধা ভোগ করতে পারবেন। বাংলাদেশ স্টুডেন্টস অর্গানাইজেশন মিশরের ছাত্ররা আপনাকে ফ্রিতে হোস্টেলে নিয়ে যাবে। পাশাপাশি বিশ্ববিদ্যালয় কতৃপক্ষ প্রতি মাসে আপনাকে ৫০০ পাউন্ড করে দেবে। সেই সাথে ধীরে ধীরে নিশ্চিত হবে আপনার:
বয়স: আপনি আলিয়া, কওমি, ইংলিশ মিডিয়ামসহ যে ক্যাটাগরির বা যে বয়সেরই শিক্ষার্থী বা আবেদনকারী হোন না কেনো আপনি কিন্তু যোগ্য হিসাবে প্রমাণিত হলে এই বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনার সুযোগ পাবেন।
তাছাড়া বর্তমানে এমন সিস্টেম করা হয়েছে যে পূর্বে যেখানে অনার্স-এ উঠতে প্রায় ৩-৪ বছর লেগে যেতো বর্তমানে সেখানে লাগছে মারকাজুল লুগাহ কোর্সের সময়সীমা।
আল আজহার বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তি হতে হলে আপনাকে স্কলারশিপের মাধ্যমেই আবেদন করতে হবে এবং সেই দেশে যেতে হবে। এক্ষেত্রে কোনো বাড়তি খরচ হবে না। তবে প্রতি মাসে এখানে বাংলাদেশী টাকায় ১২ হাজার বা ১৩ হাজার টাকা খরচ হতে পারে। এই টাকা আপনাকে নিজের কাছে রাখতে হবে।
আশা করি আল আজহার বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তি যোগ্যতা এবং ভর্তির খরচসহ যাবতীয় গুরুত্বপূর্ণ তথ্য একটি আর্টিকেলেই ফুটিয়ে তুলতে পেরেছি। তবুও যদি কোনো প্রশ্ন থাকে তবে সরাসরি কমেন্ট বক্সে জানাতে পারেন।
সেই সাথে আশা করছি মিশরের আল-আযহার ইউনিভার্সিটির এই দামি স্কলারশিপপ্রাপ্তদের তালিকায় একদিন আপনার নামটিও থাকবে। আর হ্যাঁ! যারা আবেদন করতে চান তারা সময় নষ্ট না করে জুন-জুলাইয়ের দিকে আবেদনের জন্য প্রস্তুতি গ্রহণ করতে থাকুন।
পাশাপাশি ইন্টারভিউ বোর্ডের জন্যেও নিজেকে ঝালিয়ে নিন। এতে করে এই বিশাল কম্পিটিশনে নিজেকে টিকিয়ে রাখাটা বেশ সহজসাধ্য হবে।