অসুস্থ ব্যক্তির জন্য সদকা। অসুস্থতার দিনগুলোতে করণীয়।

প্রবাস প্রতিদিন
আপডেটঃ : শনিবার, ১২ আগস্ট, ২০২৩
অসুস্থ ব্যক্তির জন্য সদকা

মহান আল্লাহ বিভিন্ন সময়ে আমাদের পরীক্ষা করেন। দুর্ভিক্ষ, মৃত্যু ও বিভিন্ন মুসিবতের মাধ্যমে আমাদের পরীক্ষা করেন। এটা আল্লাহ তাআলার চিরাচরিত নিয়ম। এমন পরিস্থিতিতে হতাশ না হয়ে আল্লাহর কাছে সাহায্য চাওয়া উচিত।

অসুস্থ অবস্থায় কোরআন-হাদিসের নির্দেশিত পদ্ধতিতে আল্লাহর কাছে সাহায্য চাইলে অসুস্থতাও কল্যাণ বয়ে আনে। নিম্নে কোরআন-হাদিসের আলোকে অসুস্থতায় মুমিনের করণীয় কয়েকটি বিষয় তুলে ধরা হলো— 

তাকদিরের ভালো-মন্দের ওপর বিশ্বাস : প্রথমত, এই বিশ্বাস থাকতে হবে যে ভালো-মন্দ আল্লাহর পক্ষ থেকে হয়, এর ওপর দৃঢ় বিশ্বাস স্থাপন করতে হবে। আল্লাহ যেমন চান, তেমন হয়—যদিও মানুষ তা না চায়। তাঁর ইচ্ছার বাইরে কোনো কিছু হয় না।

অসুস্থতাও আল্লাহর হুকুমেই হয়। ইরশাদ হয়েছে, ‘আপনি বলুন, আল্লাহ আমাদের ভাগ্যে যা লিখে রেখেছেন, তা ছাড়া কিছুই আমাদের কাছে পৌঁছবে না। তিনিই আমাদের অভিভাবক। আর আল্লাহর ওপরই মুমিনদের ভরসা করা উচিত।
’ (সুরা : তাওবা, আয়াত : ৫১) 

ধৈর্য ধারণ করা : মানুষ যখন কোনো বিপদে পড়ে কিংবা কোনো রোগাক্রান্ত হয় তখন তার মধ্যে এক ধরনের অস্থিরতা ও হতাশা ছড়িয়ে পড়ে। ফলে তারা নববী আদর্শ ও শিক্ষা ভুলে যায়। অথচ অসুস্থ হলে সবর করা মুমিনের বৈশিষ্ট্য। সুহাইব (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুল (সা.) বলেন, ‘মুমিনের জীবন খুবই বিস্ময়কর। তার সব কাজ কল্যাণকর।

এই কল্যাণ মুমিন ছাড়া অন্য কেউ লাভ করতে পারে না। সে সুখে-শান্তিতে থাকলে আল্লাহর শোকরিয়া আদায় করে, আর বিপদাপদে পতিত হলে ধৈর্য ধারণ করে। উভয়টিই তার জন্য কল্যাণকর।’ (মুসলিম, হাদিস : ৭৩৯০) 

দোয়ার প্রতি গুরুত্ব দেওয়া : কিছু দোয়া আছে, যা বিভিন্ন রোগের সঙ্গে সম্পৃক্ত। হাদিসের কিতাবগুলোতে দোয়াগুলো বিস্তারিত বর্ণিত হয়েছে। রোগমুক্তির জন্য সেসব দোয়া পড়া যায়।

দান-সদকা করা : অসুস্থ হলে দান-সদকা করা রাসুল (সা.)-এর অন্যতম সুন্নত। দান-সদকা বিপদাপদ দূর করে, রোগ-ব্যাধি থেকেও রক্ষা করে। ইবনে মাসউদ (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুল (সা.) বলেন, ‘তোমরা সদকার মাধ্যমে তোমাদের রোগীদের চিকিৎসার ব্যবস্থা করো।’

রোগকে গালমন্দ না করা : রোগ-ব্যাধি তাকদিরের অংশ। তাই অসুস্থ হলে রোগ-ব্যাধিকে গালমন্দ করা যাবে না। এটি ইসলামে নিষিদ্ধ। আবদুল্লাহ ইবনে জাবের (রা.) বর্ণিত, একবার রাসুল (সা.) উম্মুস সায়েব বা উম্মুল মুসায়্যিবকে দেখতে গেলেন। তাকে বলেন, হে উম্মুস সায়েব বা উম্মুল মুসায়্যিব তোমার কী হয়েছে? তুমি কাঁপছ কেন? তিনি বলেন, জ্বর হয়েছে। এ কথা শুনে রাসুল (সা.) বলেন, জ্বরকে গালি দিয়ো না। কেননা, জ্বর বনি আদমের গুনাহ মাপ করে বা এর মাধ্যমে গুনাহ মাপ হয়। হাঁপর যেভাবে লোহার মরিচা দূর করে, জ্বরও মানুষের গুনাহ দূর করে দেয়। (মুসলিম, হাদিস : ২৫৭৫)

উপযুক্ত চিকিৎসা গ্রহণ করা : কেউ অসুস্থ হলে তার উচিত উপযুক্ত চিকিৎসা গ্রহণ করা। চিকিৎসা গ্রহণ করা তাওয়াক্কুলপরিপন্থী নয়। প্রত্যেক হালাল বস্তু দ্বারা চিকিৎসা গ্রহণ বৈধ। রাসুল (সা.) মধু, কালিজিরা, হিজামা প্রভৃতির মাধ্যমে চিকিৎসা গ্রহণ করেছেন। উসামা ইবনে শারিক (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুল (সা.) বলেন, তোমরা অসুস্থ হলে চিকিৎসা গ্রহণ করো। কেননা, আল্লাহ বার্ধক্য ছাড়া সব রোগের ঔষধ সৃষ্টি করেছেন। (আবু দাউদ, হাদিস : ৩৮৫৫)

মহান আল্লাহ আমাদের আমল করার তাওফিক দান করুন।

তথ্য সাইফুল ইসলাম তাওহিদ


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই ক্যাটাগরির আরো নিউজ