আপনি কি দীর্ঘদিন প্রবাসে থাকার পর দেশে ফিরে নতুনভাবে সবকিছু শুরু করতে চান? সঠিক পরিকল্পনা করলে প্রবাসে অর্জিত অভিজ্ঞতা ও সঞ্চয়কে কাজে লাগিয়ে আপনিও কিন্তু দেশে ভালোকিছু করতে পারবেন। চলুন তবে আজ তা নিয়েই আলোচনা করি। জানার চেষ্টা করি প্রবাসীরা দেশে ফিরে যা করতে পারেন বা যা করলে ভালো একটা ফিউচার আশা করতে পারেন।
প্রবাসে থেকে আপনি নিশ্চয়ই দেখেছেন, কিভাবে আপনার বস কিংবা আশেপাশের ওয়ার্কাররা বা দোকানদাররা বিজনেস করেছেন! সেই অভিজ্ঞতাকে পুঁজি করে দেশে ফিরে ব্যবসা শুরু করতে পারলে আশা করা যায় সারাজীবন বসে খেতে পারবেন। ব্যবসা হিসাবে ট্রাই করতে পারেন:
১. রেমিট্যান্স ভিত্তিক এজেন্ট ব্যাংকিং বিজনেস। কারণ দেশে ব্যাংকিং সুবিধা বাড়ছে, এবং এজেন্ট ব্যাংকিংয়ের চাহিদাও বেশি। আপনি সহজেই একটি এজেন্ট ব্যাংকিং ব্যবসা শুরু করে দিতে পারলে গ্রাহকের কমতি হবে না৷
২. এছাড়াও করতে পারেন ফ্র্যাঞ্চাইজি ব্যবসা। ব্যাপারটা আরেকটু খুলে বলি। মূলত ফ্র্যাঞ্চাইজি ব্যবসা হলো ফাস্ট ফুড চেইন, কনভেনিয়েন্স স্টোর, বা কাপড়ের ব্র্যান্ড নিয়ে কাজ করা।
৩. এরপর আছে রিয়েল এস্টেটে ইনভেস্ট করার সুযোগ। জমি বা ফ্ল্যাট কেনা এবং রেন্ট দেওয়া আজকাল লাভজনক ব্যবসা হয়ে উঠেছে। আপনিও ট্রাই করতে পারেন।
৪. সবশেষে বলবো দোকান বা রেস্টুরেন্ট দেবার কথা। আপনি যদি মধ্যপ্রাচ্য, ইউরোপ, বা আমেরিকায় কাজ করেন বা করার অভিজ্ঞতা যদি আপনার থাকে তবে তাহলে বিদেশি খাবারের রেস্টুরেন্ট বা ক্যাফে নিয়ে কাজ করতে পারেন। দেখবেন লাভে লাল হয়ে গেছেন।
দেশে কৃষি ও গবাদি পশু খাতে বিনিয়োগ করতে পারলেও লাভ আছে। এক্ষেত্রে গরু বা ছাগল পালন শুরু করে দিতে পারেন। ডেইরি ফার্মিং ও গরু মোটাতাজাকরণ ব্যবসা এককালীন কোটি কোটি টাকা আয়ের সুযোগ আছে। পাশাপাশি অর্গানিক চাষাবাদ করা যেতে পারে। দেশি ও বিদেশি বাজারের জন্য অর্গানিক শাকসবজি, ফলমূল, বা মধু উৎপাদন করতে পারেন একেবারে কম খরচে। শুধু কি তাই? ফিশারি ও হাঁস-মুরগির খামার করেও আজকাল অনেকেই লাভবান হচ্ছেন। আপনি এই মাছ চাষ বা পোল্ট্রি ফার্মিং পথকে বেছে নিতে পারেন।
আপনার যদি ডিজিটাল স্কিল থাকে, তাহলে ফ্রিল্যান্সিং ও অনলাইন ইনকাম নিয়ে কাজ শুরু করে দিতে পারেন। ডিজিটাল মার্কেটিং হিসাবে কাজ করতে পারেন SEO, Facebook Ads, YouTube মার্কেটিং, ই-কমার্স মার্কেটিং নিয়ে। অন্যদিকে গ্রাফিক ডিজাইন বা ওয়েব ডেভেলপমেন্ট সেক্টরে পাবেন Fiverr, Upwork বা Freelancer-এ কাজ করে ইনকাম করার সুযোগ। এছাড়াও যাদের বয়স কম তারা দেশে ফিরে YouTube চ্যানেল খুলে বা ব্লগ লিখে অনলাইনে আয়ের কথা ভাবতে পারেন। সবশেষে যদি ইনভেস্ট করার মনমানসিকতা থাকে তবে বলবো Amazon, Daraz, বা Facebook-এ অনলাইন শপ খুলে প্রোডাক্ট সেলের কথা।
প্রবাসী অভিজ্ঞতা কাজে লাগিয়ে করার মতো দেশে যদি ভালো জব পান তবে সেটাও শুরু করে দিতে পারেন। দেশে ফিরে আপনার অভিজ্ঞতা অনুযায়ী বিভিন্ন সেক্টরে আশা করি কাজ পেয়ে যাবেন। যেমন MNC কোম্পানিতে আবেদন করতে পারেন, ইঞ্জিনিয়ারিং, ব্যবসা বা অন্য কোনো বিষয়ে ভালো জ্ঞান থাকলে শুরু করতে পারেন যেকোনো বিশ্ববিদ্যালয় বা অনলাইন প্ল্যাটফর্মে শিক্ষকতা!
যদি ইনকাম মেইন সাবজেক্ট না হয় তাহলে সামাজিক ও চ্যারিটি কাজে ফোকাস দিতে পারেন এই সময়টাতে। দেশের মানুষের জন্য কিছু করতে চাইলে এই সেক্টরে কাজ করা যায়। এক্ষেত্রে আপনি চাইলে প্রবাসীদের জন্য বিশেষ কোর্স বা ট্রেনিং সেন্টার চালু করতে পারেন। অথবা দিতে পারেন ফ্রি মেডিকেল ক্যাম্প। অন্য প্রবাসীদের সহায়তা করতে চাইলে একটি সংগঠন তৈরি করেও সেখানে সময় দিতে পারেন।
প্রবাসীরা দেশে ফিরে বসে না থাকে এসব কাজ শুরু করে দিতে পারেন। আশা করি আলোচিত কাজের যেকোনো একটি সেক্টরই আপনার কাইটেরিয়ার সাথে মিলে যাবে। আপনি দেশে ফিরে সঠিক পরিকল্পনা করলেই দেখবেন সফলভাবে নতুন জীবন শুরু করতে পারছেন। তাই সময় নষ্ট না করে আপনার স্কিল ও পছন্দ অনুযায়ী যে কোনো কিছুতে ফোকাস করুন আজই।