স্বপ্ন ছিল বিদেশে, পৌঁছালাম নরকে — এই দায়ভার কার

প্রবাস প্রতিদিন
আপডেটঃ : শনিবার, ১০ মে, ২০২৫
স্বপ্ন ছিল বিদেশে পৌঁছালাম নরকে এই দায়ভার কার

এই প্রশ্নটি শুধু ব্যক্তিগত ব্যর্থতার নয়, বরং একটি গভীর সামাজিক বাস্তবতার প্রতিফলন। বিদেশগমন, বিশেষ করে শ্রমবাজারে, অনেকের কাছে মুক্তির স্বপ্ন হলেও, বাস্তবে অনেকেই শোষণ, দুর্ভোগ ও প্রতারণার শিকার হন।

১. প্রতারক বা দালাল চক্র (মূল অপরাধী):

  • সবচেয়ে বড় দায় এই দালালদের, যারা মিথ্যা আশ্বাস, ভুয়া কাগজ, এবং লোভনীয় প্রলোভন দিয়ে মানুষকে বিদেশ পাঠায়।

  • তারা জানে মানুষ অসহায়—তবুও লোভ করে টাকা নেয়, আর পরে ফেলে দেয় অনিশ্চিত ভবিষ্যতের দিকে।


২. অভিবাসন প্রার্থী নিজে (আংশিক দায়):

  • অনেক সময় না জেনে, না বুঝে বা কাগজপত্র যাচাই না করে সিদ্ধান্ত নেয়—তখন নিজেকেও কিছুটা দায় নিতে হয়।

  • আবার কেউ কেউ লোভে পড়ে শর্টকাট পথ খোঁজে—যার পরিণতি হয় ভয়াবহ।


৩. সরকারি সংস্থা ও দুর্বল তদারকি:

  • বাংলাদেশে সরকারি অনুমোদিত রিক্রুটিং এজেন্সিগুলোর উপর সঠিক নজরদারি অনেক সময় থাকে না।

  • ভুয়া অফিস, লাইসেন্সবিহীন মধ্যস্থতাকারী, এসব অনেক আগে থেকেই চলে আসছে—কিন্তু ব্যবস্থা দুর্বল।


৪. বিদেশগামীদের যথাযথ সচেতন না করা:

  • প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণালয় বা সরকারি মিডিয়ায় সচেতনতামূলক প্রচার খুব সীমিত।

  • বিদেশে যাওয়ার আগে কাউন্সেলিং, ভাষাশিক্ষা বা তথ্য দেওয়া থাকলেও তা অনেকেই পায় না বা জানেই না।


৫. বিদেশি নিয়োগকারী ও দূতাবাসগুলোর দায়িত্বহীনতা:

  • অনেক বিদেশি কোম্পানি লোক এনে চুক্তি ভঙ্গ করে, অথচ তাদের বিরুদ্ধে সেভাবে ব্যবস্থা নেওয়া হয় না।

  • বাংলাদেশ দূতাবাস থেকেও অনেক প্রবাসী ন্যায্য সহায়তা পায় না।


👉 তাহলে দায়ভার কার?

  • মূল দায়: প্রতারক চক্র ও দুর্বল ব্যবস্থাপনা।

  • আংশিক দায়: অভিবাসনপ্রার্থীর সচেতনতার অভাব।

  • নৈতিক দায়: রাষ্ট্র ও সমাজের, যারা একটা গরিব মানুষকে বাধ্য করে এমন পথে নামতে।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই ক্যাটাগরির আরো নিউজ