ভাবুন তো, মাত্র এক গ্লাস পানি কিংবা একটা খেজুর দিয়েই আপনি অসংখ্য সওয়াবের ভাগীদার হয়ে গেলেন। বলছিলাম রোজাদারকে ইফতার করানোর কথা। আপনি কি জানেন, রোজাদারকে ইফতার করানো কত বড় সৌভাগ্যের কাজ?
রমজান হলো রহমত, মাগফিরাত ও নাজাতের মাস। আর এই মাসে প্রতিটি নেক আমলের প্রতিদান বহুগুণে বৃদ্ধি পায়। তবে বিশেষভাবে রোজাদারকে ইফতার করানো অন্যতম বড় সওয়াবের কাজ। যা অনেকেই অবহেলা করেন।
হাদিসে এসেছে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন: “যে ব্যক্তি কোনো রোজাদারকে ইফতার করাবে, সে রোজাদারের সমান সওয়াব পাবে। তবে এতে রোজাদারের সওয়াব এতটুকুও কমবে না। (তিরমিজি: ৮০৭)
অর্থাৎ, আপনি যদি এই মাসে কাউকে ইফতার করান, তাহলে সে রোজা রাখার কারণে যে পরিমাণ সওয়াব পাচ্ছে, আপনিও ঠিক সেই পরিমাণ সওয়াব পাবেন। তাও বিনা কষ্টে ইনশাআল্লাহ।
জাহান্নাম থেকে মুক্তির সুযোগ: কোনো এক ব্যক্তি যদি প্রতিদিন একজন রোজাদারকেও ইফতার করায়, তবে সে ৩০ দিনেই ৩০ জন রোজাদারের সমান সওয়াব পাবে! যা মহান আল্লাহর রহমতের একটি বিশাল দরজা হিসাবে বিবেচিত হয়।
দুনিয়ায় বরকত ও অশেষ নেয়ামত: যারা নিয়মিত ইফতার করানোর ব্যবস্থা করেন, দেখবেন তাদের সম্পদ কখনো কমছে না। বরং এই কাজে আল্লাহ অনেক বরকত দেন।
কিয়ামতের দিন আরশের ছায়া: এরপর আসি কিয়ামতের দিন আরশের ছায়া উপভোগের ব্যাপারে। হাদিসে এসেছে, কিয়ামতের কঠিন দিনে সাত শ্রেণির মানুষ আল্লাহর আরশের ছায়া পাবেন। বিশেষ করে যারা দানশীল ও অন্যের প্রতি সবসময় সদয় থাকে তাদের জন্যই মূলত এই সুযোগ রয়েছে।
আপনার সামর্থ্য যাই হোক না কেন, আপনি কিন্তু সহজেই রোজার দিনে এই বরকতময় কাজে অংশ নিতে পারেন। এক্ষেত্রে নিজের পরিবারের সদস্যদের ইফতার করানো যেতে পারে। এক্ষেত্রে আপনি চাইলে বাবা-মা, ভাই-বোন, আত্মীয়স্বজনদের সাথে ইফতার ভাগ করে নিতে পারেন।
এছাড়াও আপনি মসজিদে ইফতারের আয়োজন করতে পারেন। এক্ষেত্রে স্থানীয় মসজিদে কিছু খেজুর ও পানি দান করে দিলেও যথেষ্ট। পাশাপাশি গরিব ও পথশিশুদের মাঝে ইফতার বিতরণ করতে পারলেও সেইম সওয়াব পাওয়া যাবে। রাস্তার ধারে কিংবা কোনো এতিমখানায় গিয়ে ইফতার করানো যেতে পারে।
সেই সাথে যারা বন্ধু বা সহকর্মীদের সাথে ইফতার ভাগ করতে পারবেন তারাও সেইম সওয়াব পাবেন। এমনটা করতে চাইলে নিজের অফিসে বা বাসায় বন্ধুবান্ধবের সাথে ইফতার শেয়ার করতে পারেন।
রোজাদারকে ইফতার করানোর ফজিলত জানলেন তো! এবার কাজে নেমে পড়ার পালা। মনে রাখবেন রোজাদারকে ইফতার করানোর এই আমল খুবই সহজ, কিন্তু এর ফজিলত বিশাল! আপনি যদি এমন কোনো আমল করতে চান, যা আপনাকে দুনিয়া ও আখিরাতে সফল করবে, তবে এই রমজানে যেকোনো রোজাদারকে ইফতার করানোর অভ্যাস গড়ে তুলুন।
আপনার আশেপাশে কে কে ইফতারের অভাবে কষ্ট পাচ্ছে! খোঁজ নিন! এবং এবার থেকে তাদের দিকে খেয়াল রাখার চেষ্টা করুন। দেখবেন আপনার সম্পদে বরকত চলে এসেছে।