দুরূদ শরীফ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি আমল। দ্বীনি কোনো মজলিসে বা হাদিসের তা’লীমে হুযুর সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর নাম আসতে পারে। তখন আমরা অবশ্যই দুরূদ পাঠ করব। গাফলত ও উদাসীনতায় যেন তা ছুটে না যায়। আর দুরূদ শরীফ পড়তে হবে ভক্তি ও শ্রদ্ধাসহকারে শুদ্ধভাবে। তাড়াহুড়ো করে যেন উচ্চারণ না করি।
আদব ও মহব্বতের সঙ্গে মুখ ভরে বলতে হবে- সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম। মনে রাখতে হবে, দুরূদ শরীফ দ্বারা হুজুর সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর কোনো ফায়দা হয় না। দুরূদের ফায়দা ও উপকারিতা আমাদের নিজেদের। কারণ, আমরা সকলে মিলে আজীবন দরূদ পড়লেও হুজুর সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর যে মর্যাদা রয়েছে তা একটুও বৃদ্ধি পাবে না।
আল্লাহপাকের পরই হুজুর সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর মর্যাদা ও অবস্থান। আমাদের দুরূদের দ্বারা তাঁর মর্যাদা বৃদ্ধি পাবে না। তদ্রুপ কেউ যদি দুরূদ না পড়ে, তা হলে হুজুর সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর মান-মর্যাদা ক্ষুন্ন হবে না বা তাঁর কোনো ক্ষতি হবে না; বরং ক্ষতি হবে আমাদের নিজেদেরই। যেমনটা উল্লিখিত হাদিসে বলা হয়েছে।
এছাড়া অপর এক হাদিসে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, প্রকৃত কৃপণ তো সে যার সামনে আমার নাম আলোচিত হয় অথচ সে আমার প্রতি দুরূদ পাঠ করে না। (শুআবুল ঈমান : ১৫৬৮)। এ জন্য আমাদের দুরূদ শরীফ পাঠে গুরুত্ব দেয়া উচিত। দুরূদ পড়ার ফায়দাগুলো জানা থাকলে তা পড়ার প্রতি আমাদের আগ্রহ জাগবে। দুরূদের অনেক ফায়দা রয়েছে।
দুরূদের ফায়দা : হযরত আনাস রাযি. থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, যে ব্যক্তি আমার প্রতি এক বার দুরূদ পাঠ করবে আল্লাহ তাআলা তার প্রতি দশটি রহমত নাযিল করবেন, দশটি গোনাহ মাফ হবে এবং তার দশটি মর্যাদা বৃদ্ধি পাবে। (সুনানে নাসাঈ : ১২৯৭)।
উল্লিখিত হাদিসে দুরূদ পাঠের তিনটি ফায়দা বর্ণিত হয়েছে, ১. দশটি রহমত নাযিল হবে। ২. দশটি গোনাহ ক্ষমা করা হবে। ৩. দশটি মর্যাদা বৃদ্ধি পাবে। মাত্র একবার দুরূদ পাঠ করলেই এ উপকার ও ফায়দা! তা ছাড়া দুরূদের দ্বারা দুশ্চিন্তা দূর হয়। যে ব্যক্তি চায় তার দুশ্চিন্তা ও পেরেশানী দূর হোক সে যেন বেশি বেশি দুরূদ পাঠ করে।
দুরূদের দ্বারা রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর সঙ্গে হৃদয়ের সম্পর্ক সুদৃঢ় হয়, গভীর ভালোবাসা ও মহব্বত সৃষ্টি হয়। আমরা বেশি বেশি দুরূদ পাঠে সচেষ্ট হই। বিশেষত রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর নাম নেয়া হলে অবশ্যই দুরূদ পড়ব।