আওয়ামী লীগের তৃণমূলের অভ্যন্তরীণ কোন্দল মিটিয়ে ফেলার নির্দেশনা দিয়েছেন দলের সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। মঙ্গলবার প্রধানমন্ত্রীর সরকারি বাসভবন গণভবনে এক বৈঠকে এমন নির্দেশনা দেন আওয়ামী লীগের সভাপতি।
জানা যায়, আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা জেলা ও মহানগরের নেতাদের উদ্দেশে বলেছেন, টানা তিন মেয়াদে সরকারের উন্নয়নগুলো মানুষের সামনে তুলে ধরতে হবে। স্থানীয় পর্যায়ে এখনো প্রয়োজনীয় যে উন্নয়ন প্রকল্প গ্রহণ করা হয়নি, সেগুলো আগামী মেয়াদে করার প্রতিশ্রুতি দিতে হবে। সর্বোপরি মানুষের সঙ্গে ভালো ব্যবহার করে তাদের মন জয় করতে হবে।
গণভবনের বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন সিলেট জেলা ও মহানগর, লক্ষ্মীপুর, খাগড়াছড়ি, ময়মনসিংহ, ফরিদপুর, গোপালগঞ্জ, মাদারীপুর, শরীয়তপুর জেলা এবং কুমিল্লা মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকরা। মহিলা আওয়ামী লীগ, স্বাধীনতা চিকিৎসক পরিষদ (স্বাচিপ), যুব মহিলা লীগ এবং ছাত্রলীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকরা উপস্থিত ছিলেন। এ ছাড়া কয়েকজন জেলা পরিষদ চেয়ারম্যানও বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন।
সূত্র জানায়, গতকাল সকাল ১১টায় গণভবনে প্রবেশ করেন তৃণমূলের নেতারা। তবে বৈঠক শুরু হয় দুপুর ১টায়, চলে বিকাল ৪টা পর্যন্ত। বৈঠকে ২০-২৫ নেতা বক্তব্য দেন।
বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সরকারের উন্নয়ন প্রচারে আরো মনোযোগী হতে বলেন তৃণমূলের নেতাদের। তিনি বিএনপি-জামায়াতের আমলে সন্ত্রাস, জঙ্গিবাদ, দুর্নীতির তথ্য জনগণকে মনে করিয়ে দেয়ার তাগিদ দেন।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, তারেক রহমান ও আরাফাত রহমান কোকোর অর্থপাচার, পাচার করা টাকা ফিরিয়ে আনা, বিদেশের আদালতে তাঁদের দুর্নীতি প্রমাণ হওয়ার মতো বিষয়গুলো মানুষকে মনে করিয়ে দিতে হবে।
জেলা ও মহানগরের নেতাদের উদ্দেশে আওয়ামী লীগের সভাপতি বলেন, অনেক উন্নয়ন হয়েছে। সেগুলো প্রচারের পাশাপাশি জনগণকে নতুন উন্নয়নের প্রতিশ্রুতি দিতে হবে। স্থানীয় পর্যায়ে স্কুল, কলেজ, রাস্তাঘাট যা দরকার সেগুলো পরবর্তী মেয়াদে করে দেওয়া হবে। আওয়ামী লীগ প্রতিশ্রুতি দিলে সেটা রাখা হয়, সেটাও মনে করিয়ে দিতে হবে।
দলের একটি সূত্র জানায়, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা চলমান বৈশ্বিক সংকট মোকাবেলায় আওয়ামী লীগ নেতাদের ভূমিকা রাখতে তাগিদ দেন। তিনি দেশের প্রতি ইঞ্চি মাটিতে উৎপাদন নিশ্চিত করার কথা বলেন। দেশের কোথাও যেন কেউ খাদ্য মজুদ করতে না পারে, সে বিষয়ে সতর্ক থাকতে তৃণমূলের নেতাদের নির্দেশ দেন।
পিছিয়ে গেল ছাত্রলীগ ও যুব মহিলা লীগের সম্মেলন: বৈঠক থেকে আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা ছাত্রলীগ ও যুব মহিলা লীগের সম্মেলনের তারিখ পিছিয়ে দেন। আগামী ৩ ডিসেম্বর ছাত্রলীগের সম্মেলন হওয়ার কথা ছিল। আগামী ২৯ নভেম্বর জাপান সফরে যাবেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি ফিরবেন ৩ ডিসেম্বর। ফলে এদিন ছাত্রলীগের সম্মেলন না করতে নির্দেশ দেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
আওয়ামী লীগের একটি সূত্র জানায়, ছাত্রলীগের সম্মেলন পিছিয়ে ৮ ডিসেম্বর এবং যুব মহিলা লীগের সম্মেলন পিছিয়ে ১৫ ডিসেম্বর হওয়ার সম্ভাবনা বেশি।