আপনি কি TOEFL এর সঠিক প্রস্তুতি নেওয়ার মাধ্যমে স্কলারশিপ অর্জনের পথ সফল করতে চান? TOEFL বা Test of English as a Foreign Language টেস্টটি হলো মূলত তাদের জন্য যারা স্কলারশিপসহ যেকোনো জবের জন্য বাইরের দেশে যাওয়ার ভিসা নিতে চান। সোজা বাংলায় TOEFL হলো আপনার স্কলারশিপের টিকিট। যা আপনার বিদেশে পড়াশোনার স্বপ্ন পূর্ণ পূরণের মেইন স্ট্রিম হিসাবে কাজ করবে। তো চলুন বস! এই মেইন ক্যারেক্টারে কিভাবে নিজেকে প্রো করে গড়ে তুলবেন তা নিয়ে বিস্তারিত কথা বলি৷
TOEFL হলো একটি ইংলিশ ল্যাংগুয়েজ টেস্ট৷ শুধুমাত্র শব্দভাণ্ডার বা ব্যাকরণ জানলেই কিন্তু কেউ এই টেস্ট পাশ করে না। অভারঅল ইংরেজির উপর ভালো দখল থাকতে হয়। আপনি কতটা ভালোভাবে ইংরেজি ব্যবহার করতে পারেন তা সঠিকভাবে প্রমাণ করতে হবে এই টেস্টে। কিন্তু কিভাবে? উত্তর জানতে সাথেই থাকুন।
TOEFL এর মূলত ৪ টি ক্যাটাগরি রয়েছে। এগুলি হলো:
রিডিং পার্ট: একাডেমিক টেক্সট বুঝতে পারা
লিসেনিং পার্ট: বক্তৃতা এবং কনভার্সেশন বোঝা
স্পিকিং পার্ট: ইংরেজিতে স্পষ্টভাবে কথা বলতে পারা
রাইটিং পার্ট: সঠিকভাবে প্যারাগারাফ লিখতে পারা
রিসার্চ বলছে বর্তমানে প্রায় ১১,০০০ বিশ্ববিদ্যালয় ১৯০টি দেশের মধ্যে TOEFL স্কোর এপ্রুভ করে থাকে। তাই চোখ বন্ধ করে এটিকে আপনার গোল্ডেন টিকিট হিসাবে ভাবতে পারেন।
যারা ভাবছেন “ইংরেজি তো আমি জানি, ইংরেজি বলতে তো সমস্যা নেই।” তাদের বলবো আপনি জাস্ট বেসিকটাই জানেন। জানার আছে অনেককিছু! মনে রাখবেন, TOEFL পরীক্ষার ইংরেজি ভাষা কিন্তু একাডেমিক ধাচের। বাইরে যেতে হলে আপনাকে সে ধাচ অনুযায়ী নিজেকে তৈরি করতে হবে। বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা করার জন্য কিন্তু টোফেলই আপনার শেষ গতি।
রিসার্চ অনুসারে ২০২৩ সালে ২.৩ মিলিয়নেরও বেশি মানুষ TOEFL পরীক্ষা দিয়েছিলো। বিশ্বের হাই কোয়ালিটির বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে সাধারণত ১০০+ স্কোর লাগে ১২০ এর মধ্যে স্কলারশিপ নিয়ে পড়াশোনা করতে। তাছাড়া আপনার যদি আইভি লিগ বা ভালো ইউরোপীয় কিংবা অস্ট্রেলিয়ান বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার আগ্রহ থাকে সেক্ষেত্রে TOEFL পরীক্ষায় ভালো স্কোর করা জরুরি।
১. প্রস্তুতি শুরু করুন
প্যানিকড হবার কিছু সেই। TOEFL পরীক্ষায় ভালো স্কোর করাটা কঠিন কিছু নয়। তবে সফল হওয়ার মূল চাবিকাঠি হলো নিয়মিত এবং সুনির্দিষ্ট প্রস্তুতি। কিন্তু প্রস্তুতির আগে আসুন একটা সাধারণ মিথ ভেঙে দিই! অনেকে মনে করেন “আমি যদি সব কিছু না জানি, তবে পাস করতে পারব না।” যা পুরোপুরি ভুল ধারণা।
কারণ এই এক্সামে ভালো স্কোর করতে আপনাকে ইংরেজি ভাষায় মাস্টার হতে হবে এমনটা নয়। আপনাকে জাস্ট এক্সামের টেকনিক জানতে হবে। সে অনুযায়ী আগাতে হবে এবং নিজের স্কিল ডেভলপ করতে হবে।
২. প্ল্যানিং করা
কিভাবে প্রিপারেশন নেবের তার উপর একটি প্ল্যান করে ফেলবেন। কারণ এক্ষেত্রে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো পরিকল্পনা। কমপক্ষে ২-৩ মাস সময় হাতে রেখে এই ২/৩ মাসের উপর আপনাকে প্ল্যানিং করতে হবে। যদি আপনি একদম নতুন হন, তবে হয়তো ৬ মাসও লাগতে পারে! এরপর আপনাকে যেতে হবে উইকলি প্ল্যানে। প্রতি সপ্তাহের ৬ দিন ভালোমতো পড়বে। রিডিং, রাইটিং, স্পিকিং এবং লিসেনিংয়ে আপনার দূর্বলতা অনুযায়ী টাইমিং করে নেবেন।
৩. কোর্স এবং বই
এরপর আসি TOEFL প্রস্তুতি বই বা অনলাইন কোর্সের ব্যাপারে৷ ETS এর TOEFL iBT Test Prep নামে একটি ইন্টারন্যাশনাল বই আছে। গুগলে পিডিএফ পেয়ে যাবেন। সেটি পড়া শুরু করতে পারেন। পাশাপাশি যদি অন্য কোনো ভালো বইয়ের খোঁজ পান সেটিও ট্রাই করতে পারেন। এছাড়া অনেক ফ্রি অ্যাপস এবং ওয়েবসাইট রয়েছে যেখানে আপনি রাইটিং এবং স্পিকিং দু’টোই ভালোমতো রপ্ত করতে পারবেন৷ এক্কেবারে পাক্কাপাক্কি প্রিপারেশন নিতে শুরুতে একটি TOEFL ডায়াগনস্টিক টেস্ট দিতে পারেন৷ এতে আপনাকে কোন অংশে আরও বেশি মনোযোগ দিতে হবে তা বেরিয়ে আসবে।
৪. রিডিং পার্ট
রিডিং পার্টটা প্রথম দিকে অনেক ইজি মনে হতে পারে৷ কারণ, আপনি তো ইংরেজি পড়েন। কিন্তু, TOEFL-এর রিডিং পার্টগুলি এমনভাবে ডিজাইন করা হয় যে নরমাল ইংরেজি এবং টোফেল ইংরেজি দু’টো পার্থক্যই আপনি সহজে বুঝতে পারবেন৷ এক্ষেত্রে নিজেকে ভালোভাবে স্কিলড করতে নিচের টিপসগুলি ফলো করতে পারেন:
১. স্কিমিং এবং স্ক্যানিং: প্রথমে পড়ার মূল বিষয়টি বুঝে নিতে স্কিমিং করুন এবং গুরুত্বপূর্ণ তথ্য খুঁজে বের করতে স্ক্যানিং করুন।
২. হাইলাইটিং: গুরুত্বপূর্ণ বিষয়, মূল ধারণা এবং তথ্য হাইলাইটার পেন দিয়ে হাইলাইট করুন। যা আপনাকে প্রশ্নের উত্তর দিতে সাহায্য করবে।
৩. টাইম ম্যানেজম্যান্ট: রিডিং পার্টে ৫০টিরও বেশি প্রশ্ন থাকতে পারে, তাই সময়মতো উত্তর দেওয়ার জন্য ১৫-২০ মিনিট প্রতিটি প্যাসেজের জন্য সিলেক্ট করুন। বাকি সময়টে রিভাইস দিন।
৫. লিসেনিং পার্ট
লিসেনিং পার্ট শুরুতে কিছুটা কঠিন মনে হলে সাব টাইটেল দিয়ে শুরু করতে পারেন৷ এক্ষেত্রে বিভিন্ন পডকাস্ট ট্রাই করা যেতে পারে। যেকোনো আলোচনা শুধুমাত্র না শুনে, ভালোভাবে শোনার চেষ্টা করুন! সাথে রাইটিংটুকুকেও প্র্যাকটিস করতে মূল ধারণা এবং সেগুলোর সাথে সম্পর্কিত ইনফরমেশন নিয়ে রিসার্চ করতে পারেন। অল্প সময়ে প্রো হতে ইংরেজি পডকাস্ট, TED টক, বা নিউজ রিপোর্ট শুনে নোট নেয়ার অভ্যাস করুন।
৬. স্পিকিং
আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে ইংরেজিতে কথা বলতে পারাটা কঠিন কিছু না হলেও শুরু করাটা অনেকের কাছে কঠিন মনে হতে পারে। এক্ষেত্রে প্রতিদিন কথা বলার অভ্যাস করুন। বিভিন্ন স্পোকেন প্র্যাকটিস ওয়েবসাইটে প্র্যাকটিস করুন৷ ইংরেজিতে ভয়েস মেমো তৈরি করেও চাইলে প্র্যাকটিস করতে পারেন। যারা স্পিকিং প্র্যাকটিসের জন্য শুরুতেই একটি প্ল্যানিং তৈরি করে ফেলতে চান তারা নিচের বিষয়গুলো সবার আগে ক্লিয়ার করে নেবেন:
৭. রাইটিং পার্ট
টোফেলের রাইটিং পার্ট মূলত ২ ক্যাটাগরির হয়ে থাকে। একটি হলো ইন্টিগ্রেটেড, যা হয় পড়ার এবং শোনার উপর ভিত্তি করে! এবং অন্যটি হলো ইনডিপেনডেন্ট! যা লিখতে হয় নিজের মতামত এবং আগ্রহের উপর ভিত্তি করে। টোফেল রাইটিং পার্টে ভালো করতে নিয়মিত কম সময়ে বেশি লেখার প্র্যাকটিস করুন, আগে ফরম্যাট রেডি করে পরে লিখুন এবং লেখার সময় ফুল ফোকাসড দিন লেখার উপর।