কেবলমাত্র বিদেশে যাওয়ার জন্য ভিসা আবেদনের প্ল্যানিং করলেই হবে না। সাথে আগে থেকেই জেনে রাখতে হবে আপনার আদৌ ভিসা এপ্রুভ হওয়ার চান্স আছে কিনা। কারণ গোড়ায় গলদ রেখে উপরে সমাধানের চেষ্টা করাটা বরাবরই বোকামি। বিভিন্ন কারণে আপনার ভিসা রিজেক্ট হতে পারে। আর এসব কারণের মাঝে বিভিন্ন মামলাও থাকতে পারে। আজ আমরা সেসব মামলা নিয়ে আলোচনার চেষ্টা করবো যেসব মামলা থাকলে আপনি কোনোভাবেই বিদেশে যেতে পারবেন না।
বিচারাধীন মামলা বা Pending Cases থাকলে আপনি বিদেশে যেতে পারবেন না। কারণ যখন একজন ব্যক্তি বিচারাধীন মামলার আওতায় পরে তখন হতে পারে সে ব্যাক্তি গুরুতর কোনো অপরাধ করেছে। সেক্ষেত্রে ভিসা এপ্রুভ না হওয়ার চান্স থাকে। এই বিচারাধীন মামলার ক্যাটাগরিতে যেসব অপরাধ বা মামলা ফেলা যায় সেসব মামলার ছোট্ট একটি লিস্ট নিচে দেওয়া হলো:
বিচারাধীন মামলা থাকলে কতৃপক্ষ কিন্তু আপনার পাসপোর্ট ফেরত নিতে পারে। বিশেষ করে আদালত কতৃক ব্যক্তির পাসপোর্ট জব্দ করার চান্স থাকে। আর এ কাজ আদালতকে করতে হয় ব্যক্তিকে আদালতে হাজির হতে বাধ্য করার ক্ষেত্রে।
মনে রাখবেন এই ধরনের মামলার জন্য কিন্তু বিচারক ব্যক্তির বিদেশ যাওয়ার অনুমতি মুলতুবি রাখে। যতক্ষণ মামলা চলে ততক্ষণ অপরাধী কোনোভাবেই বিদেশ যেতে পারে না। তাছাড়া আইনশৃঙ্খলা বজায় রাখতেও কতৃপক্ষ একজন অপরাধীর পাসপোর্ট জব্দ করে রাখতে পারে।
খুনি, ধর্ষক, চোর, বা দুর্নীতিবাজদের ক্ষেত্রে সাধারণত এই ধরণের মামলা দায়ের করা হয়। আপনার নামে যদি এই ধরণের কোনো মামলা থাকে সেক্ষেত্রে আপনার ভিসা জটিলতা সৃষ্টি হতে পারে৷ কারণ বাংলাদেশের আইন অনুযায়ী এই ধরণের অপরাধে অভিযুক্ত ব্যক্তির পাসপোর্ট কতৃপক্ষ আটকিয়ে রাখতে পারে।
তাছাড়া যে দেশে যাবেন সে দেশের নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণেরও একটা বিষয় থাকে। অভিযুক্ত ব্যক্তির বিরুদ্ধে মামলা চলমান থাকলে অনেকসময় অনেক দেশই শ্রমিক রিসিভ করে না।
সুতরাং আপনার যদি এমন কোনো কেইস থাকে ভিসা আবেদন করার আগেই ভিসা কনসাল্ট্যান্টের সাথে এ-ব্যাপারে কথা বলে নেবেন৷ জেনে নেবেন বাইরের দেশে যাওয়ার ক্ষেত্রে আপনার কোনো প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি হতে পারে কিনা। কারণ সবকিছু ম্যানেজ হওয়ার পর হুট করে ভিসা আবেদন এপ্রুভে জটিলতা সৃষ্টি হলে আপনাকে পরবর্তীতে প্রচুর ঝামেলায় পড়তে হতে পারে৷
বাংলাদেশে দুর্নীতি ও অর্থ পাচার বিষয়ক মামলার ক্ষেত্রেও বাইরের দেশে যাওয়া নিয়ে আলাদা নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা আছে। খোঁজ নিয়ে দেখবেন বাংলাদেশ সরকারের ন্যাশনাল অ্যান্টি-কারাপশন কমিশন (NACC) বা বাংলাদেশ ব্যাংকও বিভিন্ন সময়ে অর্থ পাচারের সাথে যুক্ত অভিযুক্তদের বিদেশ যেতে নিষেধ করে থাকে।
জালিয়াতি মামলার মধ্যে বিভিন্ন ডকুমেন্টস রিলেটেড জালিয়াতির অপরাধগুলি পড়ে থাকে। এই ধরণের অপরাধীরাও ভিসা ইস্যু করার ক্ষেত্রে ঝামেলায় পড়তে পকরে৷ সুতরাং বিদেশ যাওয়ার আগে যেকোনো ধরণের প্রতারণা বা প্রতারণামূলক কার্যক্রম থেকে বিরত থাকার চেষ্টা করুন। পাশাপাশি যদি এমন কোনো কেইস থাকে তা আগে থেকেই সলভ করে নেওয়ার চেষ্টা করুন৷
আপনার কি কোনো ন্যাশনাল সিকিউরিটি রিলেটেড মামলা আছে? যেমন ধরুন রাষ্ট্রদ্রোহিতা, জঙ্গীবাদ বা অন্য কোনো দেশের জন্য স্পাই হিসাবে কাজ করেছেন এমন কোনো কেইস আছে?
যদি থাকে সেক্ষেত্রেও আপনার ভিসা এপ্রুভাল নিয়ে জটিলতা সৃষ্টি হতে পারে৷ কারণ বিদেশ যাওয়ার ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপিত হওয়ার কারণ হিসাবেও কিন্তু এই বিষয়টি বেশ গুরুত্বপূর্ণ! দেশের নিরাপত্তার জন্য ঝুঁকি সৃষ্টি হতে পারে এমন চিন্তা থেকেই কিন্তু কতৃপক্ষ এই ধরণের অপরাধীর ভিসা বাতিল করে থাকে।
বেশকিছু স্পেশাল পরিস্থিতিতে পারিবারিক দায়-দায়িত্ব বা সন্তানের ভরণপোষণ বিষয়ে আদালতের কাছে দায়বদ্ধ থাকলেও কিন্তু আপনার বিদেশ যাওয়া বাতিল হতে পারে।