রাজধানীতে ঘটে গেল মর্মান্তিক ঘটনা। গতকাল বৃহস্পতিবার রাতে তীব্র বৃষ্টির কারণে জমে থাকা পানিতে বিদ্যুতের তার ছিঁড়ে বিদ্যুৎস্পর্শে একই পরিবারের তিনজনসহ চারজনের মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে। তবে এ ঘটনায় অলৌকিকভাবে বেঁচে গেছে পরিবারটির সর্বকনিষ্ঠ সদস্য ৭ মাসের শিশু হোসাইন।
নিহত ৪ জনের মধ্যে একজন ছিল রিকশা চালক অনিক। যে কিনা মিজান, তার স্ত্রী মুক্তা আর মেয়ে লিমাকে বাচাঁনোর চেষ্টা করতে গিয়ে নিজেও মারা যায়। গতকাল ঘটনার সময় নিহত অটোরিকশা চালক অনিকের এক বন্ধু যার নাম আব্দুর রহমান তিনি পাশে ছিলেন। তার বর্ননায় উঠে আসে করুন এক কাহিনী। তিনি জানান, বৃহস্পতিবার রাত দশটার দিকে আমরা একসঙ্গে বন্ধুরা মিলে রাস্তার পাশে দাঁড়িয়ে বৃষ্টিতে ভিজতে ছিলাম। এ সময় এই রাস্তা দিয়ে একটা আপু ও ভাইয়া দুটো বাচ্চা নিয়ে আসছিলেন। আপুটা হঠাৎ রাস্তায় পড়ে যায়। আমরা মনে করেছিলাম, পা পিছলে রাস্তায় পড়ে যায়। আমার বন্ধু অনিক দৌড়ে যায় তাদের বাঁচাতে। ওখানে শট খায় অনিক। পরে আমাদের আরেক বন্ধু জুয়েলও যায়। সে দেখে পানিতে আর্থিং (বিদ্যুতায়িত) হয়েছে। পরেও ওখান থেকে আমরা সবাই দূরে চলে আসি। মহিলাটি বাচ্চাটাকে দূরে ছুড়ে মারে। পরের বাচ্চাটিকে উদ্ধার করে এলাকাবাসীরা হাসপাতালে নিয়ে যায়। অন্যদিকে, আমরা আমাদের বন্ধু অনিককে সোহরাওয়ার্দী হাসপাতালে নিয়ে যাই।
নিহত মিজানের বাবা নাছির হাওলাদার সংবাদমাধ্যমকে, গত বুধবার রাতে মিজান বরিশাল থেকে এসেছে। এরপর বউ-বাচ্চাদের নিয়ে শ্বশুরের বাসা থেকে নিজেদের বাসায় ফিরছিল। নিজ গ্রাম বরিশালের ঝালকাঠি থানার বিকনার গ্রামে তাদের মরদেহ নিয়ে যাওয়া হবে।
মিজানের শ্বশুর ও মুক্তার বাবা মো. লিটন মিয়া সংবাদমাধ্যমকে বলেন, মেয়ে ও জামাইয়ের সঙ্গে দুপুরে কথা হয়। তারা চিড়িয়াখানার দিকে মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্সে ভাড়া থাকত। সেখানে যাওয়ার সময় আমার মেয়ে, জামাই ও নাতনি মারা যায়।
এদিকে এ দুর্ঘটনার একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। এতে দেখা যায়, একটি শিশুকে পানি থেকে তোলা হচ্ছে। এ ছাড়া অন্য এক জায়গায় ৩ জন পড়ে আছে।
বৃহস্পতিবার সন্ধ্যার পর থেকেই বৃষ্টিতে অচল হয়ে পড়ে রাজধানী ঢাকা। আর এতে রাজধানী বিভিন্ন সড়কে দেখা দেয় জলাবদ্ধতা। ফলে বিভিন্ন সড়কে যানবাহন চলাচলে দেখা দেয় ধীরগতি। যার পরিণতি ভয়াবহ যানজট। আর এতে ভোগান্তিতে পড়েন কর্মক্ষেত্র থেকে ঘরে ফেরা মানুষজন। লম্বা সময় ধরে একই স্থানে আটকে থাকে অসংখ্য যানবাহন।