কুমিল্লার চৌদ্দগ্রামে জান্নাতুল ফেরদৌস টুম্পা (২৫) নামে গৃহবধূর লাশ কৌশলে শ্বশুরবাড়ি পৌঁছে দিয়ে পালিয়ে যায় স্বামী। পালিয়ে বিদেশ যাওয়ার সময় স্বামী সাইফুল ইসলামকে চট্টগ্রাম থেকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
তাঁর বিরুদ্ধে স্ত্রীকে হত্যার অভিযোগ উঠেছে। গৃহবধূ টুম্পা জগন্নাথদীঘি ইউনিয়নের খাজুরিয়া গ্রামের কাজী শফিকুর রহমানের মেয়ে। তাঁর লাশ ময়নাতদন্তের জন্য রোববার মর্গে পাঠানো হয়েছে। এই তথ্য জানান থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা শুভ রঞ্জন চাকমা।
টুম্পার বাবা কাজী শফিকুর রহমান বলেন, ‘জামাতা সাইফুল ইসলাম গত ২৮ জুলাই বাহরাইন থেকে দেশে আসেন। এ সময় টুম্পা আমাদের বাড়িতে ছিল। দুই দিন আমাদের বাড়িতে বেড়ানো শেষে শনিবার দুপুরের খাবার খেয়ে টুম্পাকে নিয়ে পাশের গ্রাম বড়পুষ্করনীর নিজ বাড়িতে যান সাইফুল।
কিন্তু সন্ধ্যার কিছু আগে টুম্পাকে অচেতন অবস্থায় একটি সিএনজিচালিত অটোরিকশায় করে আমাদের বাড়ির সামনে নিয়ে আসেন সাইফুল। এসে বলেন– আপনাদের মেয়ে অসুস্থ তাকে হাসপাতালে নিতে হবে। আপনারা আমার সঙ্গে আসেন। এ সময় টুম্পার মা নাসিমা বেগমসহ এক আত্মীয় মেয়েকে নিয়ে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে যান। সেখানে চিকিৎসক টুম্পাকে মৃত ঘোষণা করেন।’
তিনি বলেন, ‘টুম্পাকে মৃত ঘোষণা করলেও সাইফুল তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য কুমিল্লা নেবেন বলে কৌশলে অ্যাম্বুলেন্সে তুলে আমাদের বাড়িতে নিয়ে আসেন এবং ঘরে রেখে উধাও হয়ে যান।’
নাসিমা বেগমের ভাষ্য, তারা কিছু বুঝে ওঠার আগেই টুম্পার লাশ ঘরে রেখে পালিয়ে যায় সাইফুল। তাঁর মেয়ের শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। টুম্পাকে বাড়িতে নিয়ে পরিকল্পিতভাবে নির্যাতন করে হত্যা করেছে সাইফুল।
উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক সোলেমান বাদশা জানান, হাসপাতালে নিয়ে আসার আগেই মারা যান ওই গৃহবধূ। তাঁর শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাতের কালো চিহ্ন রয়েছে।
চৌদ্দগ্রাম থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শুভ রঞ্জন চাকমা বলেন, ‘সাইফুল ইসলামকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তিনি চট্টগ্রাম বিমানবন্দর দিয়ে বাহরাইন পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছিলেন। গৃহবধূর মৃত্যুর কারণ জানতে তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।’