কানাডার নাম শুনলেই আমাদের চোখের সামনে ভেসে উঠে স্নোফল, ঠান্ডা একটি দেশ এবং হাই লাইফস্টাইল। সাথে হাই পেয়িং জবের জন্যেও কানাডার যেনো জুড়ি মেলা ভার। কিন্তু অনেকেই মনে করেন বাংলাদেশ থেকে কানাডায় যাওয়ার মতো কঠিন কাজ দুনিয়াতে হতো আরেকটি নেই! অথচ কানাডা যাওয়ার সহজ উপায় সম্পর্কে আইডিয়া থাকলে কাজটা পানির মতো সহজ। আসুন আজ এব্যাপারে বিস্তারিত কথা বলি।
বাংলাদেশ থেকে কানাডা যাওয়ার সহজ কিছু উপায়
স্টাডি পারমিশন: স্টুডেন্ট ভিসা
বাংলাদেশ থেকে কানাডা যাওয়ার সবচেয়ে সহজ উপায় হলো স্টুডেন্ট ভিসা। আপসি চাইলে ফ্রিতেও কানাডায় পড়াশোনা করতে পারবেন। এক্ষেত্রে আপনাকে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় এবং কলেজের হোস্ট করা স্কলারশিপগুলির ব্যাপারে প্রচুর রিসার্চ করতে হবে এবং নিজেকে প্রস্তুত করে নিতে হবে। কানাডায় পড়াশোনার পাশাপাশি কিন্তু আপনি চাইলে পার্ট টাইম জবও করতে পারেন।
যোগ্যতা
যারা কানাডায় পড়াশোনা করতে চান তাদের মাস্ট স্বীকৃত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান থেকে অফার লেটার পেতে হবে এবং কানাডা হাইকমিশনে শিক্ষার্থী ভিসার জন্য আবেদন করতে হবে।
টেম্পোরারি ভিসা: ভিজিটর ভিসা
কানাডা যাওয়ার সহজ উপায় হিসাবে আপনি ভিজিটা ভিসাও ট্রাই করতে পারেন। যা টেম্পোরারি ভিসা হিসাবে কাজ করতে। অর্থ্যাৎ বেশিদিন এই ভিসার আন্ডারে আপনি কানাডায় থাকতে পারবেন না। ভ্রমণ, ব্যবসা বা পরিবারিক উদ্দেশ্যকে সামনে রেখে মূলত আপনাকে এই ভিসার জন্য এপ্লাই করতে হবে।
যোগ্যতা
যারা ভিজিটর ভিসায় কানাডা যেতে চান তারা ভিজিটর ভিসার জন্য আবেদনপত্র পূরণ করে অনলাইনে এপ্লাই করুন। ভিসা ফি পরিশোধ করার পর আপনাকে কিন্তু ইন্টারভিউর জন্যেও ডাকা হতে পারে।
এক্সপ্রেস এন্ট্রি সিস্টেম: পার্মান্যান্ট ভিসা
এক্সপ্রেস এন্ট্রি সিস্টেম হলো এমন একটি সিস্টেম যার সাহায্যে আপনি কানাডার স্থায়ী বাসিন্দা হতে পারবেন। তবে আপনাকে এক্ষেত্রে যেকোনো একটি সেক্টরে সিক্লড হতে হবে। বলে রাখা ভালো এই সিস্টেমটি কম্প্রিহেনসিভ র্যাংকিং সিস্টেম (CRS) নামে একটি পয়েন্ট ভিত্তিক পদ্ধতি ব্যবহার করে থাকে। বয়স, শিক্ষা, কাজের অভিজ্ঞতা এবং ভাষাগত দক্ষতার উপর আপনাকে এই পয়েন্ট দেওয়া হবে।
যোগ্যতা
আপনি যদি কানাডায় জব করতে চান এবং আপনার যদি ভালো স্কিল থাকে সেক্ষেত্রে এই সিস্টেমটি ট্রাই করতে পারেন। অনলাইন প্রোফাইল ফিলআপ করলে আপনার যোগ্যতা, কাজের অভিজ্ঞতা এবং ভাষাগত দক্ষতার উপর ভিত্তি করে আশা করি সুযোগ পেয়ে যাবেন।
প্রভিন্সিয়াল নোমিনি প্রোগ্রাম: PNP সিস্টেম
PNP সিস্টেম বা প্রভিন্সিয়াল নোমিনি প্রোগ্রাম হলো তাদের জন্য যারা কানাডার কোনো একটি প্রদেশে পার্মান্যান্টলি থাকার জন্য চেষ্টা করতে চান। বিভিন্ন প্রদেশ ও অঞ্চলে বিশেষ মানদণ্ডের উপর ভিত্তি করে এই প্রোগ্রামের আন্ডারে স্থায়ী বাসিন্দা হওয়ার পারমিশন দেওয়া হয়। তবে হ্যাঁ! দক্ষতা, শিক্ষা এবং কাজের অভিজ্ঞতা না থাকলে এখানে আবেদন করতে পারবেন না।
যোগ্যতা
আপনি যে প্রদেশে বসবাস করতে চান, সে প্রদেশের নির্দিষ্ট মানদন্ড জেনে তা নিজের মধ্যে আছে কিনা চেক করে দেখুন। সবকিছু ঠিক থাকলে তবেই আবেদনের প্ল্যানিং করবেন।
ফ্যামিলি স্পনসরশিপ: স্পনসরশিপ প্রোগ্রাম
আপনার যদি কানাডায় কোনো স্থায়ী পরিচিত বা পরিবারের সদস্য থাকে তাহলে আপনি পারিবারিক স্পনসরশিপ প্রোগ্রামের মাধ্যমে কানাডায় স্থায়ী বসবাসের জন্য আবেদন করতে পারবেন। এক্ষেত্রে পরিবারের সদস্য হিসাবে স্বামী/স্ত্রী, সন্তান, পিতা-মাতা, বা দাদী/দাদী যে কাউকে কানাডার পার্মানেন্ট বাসিন্দা হতে হবে।
যোগ্যতা
এই উপায়ে কানাডায় যেতে হলে সেই নাগরিক বা স্থায়ী বাসিন্দার ডকুমেন্টসসহ আপনাকে স্পনসরশিপের জন্য আবেদন করতে হবে।
স্টার্ট-আপ ভিসা প্রোগ্রাম
স্টার্ট-আপ ভিসা প্রোগ্রাম শুধুমাত্র উদ্যোক্তাদের জন্য। অনেকেই কানাডায় নতুন ব্যবসা প্রতিষ্ঠা করতে চান। যদি আপনার আইডিয়া ভালো হয়, স্কেলযোগ্য এবং চাকরি তৈরি করতে পারে এমন আইডিয়া থাকে সেক্ষেত্রে এই প্রোগ্রামের জন্য আবেদন করতে পারেন৷ আপনি চাইলে এই প্রোগ্রামের আন্ডারে কিন্তু পার্মান্যান্টলিও কানাডায় থাকতে পারবেন।
যোগ্যতা
অ্যাটলান্টিক ইমিগ্রেশন প্রোগ্রাম: AIP
অ্যাটলান্টিক ইমিগ্রেশন প্রোগ্রাম বা AIP হলো তাদের জন্য যারা কানাডার আটলান্টিক অঞ্চলে থাকতে চান বা যেতে চান। এই এরিয়াগুলির মধ্য মূলত পড়বে নোভা স্কোটিয়া, নিউ ব্রান্সউইক, নিউফাউন্ডল্যান্ড ও ল্যাব্রাডর, এবং প্রিন্স এডওয়ার্ড আইল্যান্ড। আপনি যদি দক্ষ কর্মী বা ভালো ইন্টারন্যাশনাল স্টুডেন্ট হোন সেক্ষেত্রে এই অ্যাটলান্টিক ইমিগ্রেশন প্রোগ্রাম (AIP) এর জন্য আবেদন করতে পারেন।
যোগ্যতা
যারা এই অ্যাটলান্টিক ইমিগ্রেশন প্রোগ্রামের আন্ডারে কানাডা যেতে চান তারা জব পেতে বিভিন্ন অনলাইন ওয়েবসাইটের সাহায্য নিতে পারেন৷ তাছাড়া এসব অঞ্চলে কাজের সুবিধা, থাকার সুবিধা নেহায়েত কম নয়!
ইতি কথা
আজ আলোচিত এসব উপায় ছাড়াও কানাডা যাওয়ার সহজ উপায় হিসাবে আরো অনেক অপশন আপনি অনলাইনে ঘাটাঘাটি করলেই পেয়ে যাবেন। তবে হ্যাঁ এক্ষেত্রে আপনাকে দেখতে হবে আপনার কাজের সাথে, স্কিলের সাথে এবং উদ্দেশ্যের সাথে কোন উপায়টি বা প্রোগ্রামটি স্যুট করে।