পৃথিবীর দ্বিতীয় বৃহত্তম দেশ কানাডা! যা কেবল প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের জন্যই নয় বরং কোয়ালিটি লাইফস্টাইল, ভালো পড়াশোনার সুযোগ এবং ভালো জব অপরচুনিটির জন্য বিখ্যাত। অনেকেই বলে থাকেন, কানাডায় একবার গেলে আর ফিরে আসতে মন চায় না। কেনো বলে জানেন? চলুন আজ সে প্রশ্নের উত্তর খুঁজি! জানার চেষ্টা করি কানাডার সকল অজানা তথ্য ও সুযোগ-সুবিধা!
আপনি কি জানেন, অন্যান্য উন্নত দেশের তুলনায় কানাডার জনসংখ্যার ঘনত্ব অবিশ্বাস্যভাবে কম? হ্যাঁ! দেশটির একটি বিশাল অংশে মানুষ বাসই করে না। সবচেয়ে মজার ব্যাপার হলো, কানাডার অধিকাংশ মানুষ দেশের দক্ষিণাংশে বসবাস করে।
বিশেষ করে কানাডা-যুক্তরাষ্ট্র সীমান্তের কাছাকাছি এলাকায় বসবাস করে। আর এর মূল কারণ হলো দেশের উত্তরাঞ্চলের ভয়াবহ আবহাওয়া। উত্তরাঞ্চলে শীতকালে তাপমাত্রা অস্বাভাবিকভাবে কমে যায়। সাথে ভারী তুষারপাত হয় এবং শক্তিশালী বাতাস বইতে থাকে।
এই কারণে সেই এলাকায় মানুষের জীবনযাপন প্রায় অসম্ভব হয়ে পড়ে। ফলে কানাডায় মানুষের বসবাস দক্ষিণাঞ্চলেই সীমাবদ্ধ থাকে!
কানাডাকে অনেকেই বলে থাকেন হ্রদের দেশ। কানাডার সকল অজানা তথ্যের মাঝে এটি অন্যতম। বিশেষ করে উত্তর আমেরিকার পাঁচটি বিখ্যাত গ্রেট লেকস কিন্তু কানাডাতেই অবস্থিত। যেমন:
এছাড়াও কানাডার রয়েছে মনোরম দ্বীপপুঞ্জ, সবুজ মাঠ, বিস্তৃত উপকূলরেখা এবং পাহাড়ি এলাকা। যার সৌন্দর্য মানুষকে সবসময় ফুরফুরে মেজাজে থাকতে সাহায্য করে।
আপনি কি জানেন, আইস হকি খেলার জন্ম কানাডাতেই? হ্যাঁ! ১৯ শতকের দিকে কানাডায় প্রথম আইস হকি খেলা শুরু হয়। পরে এটি দেশের জাতীয় শীতকালীন খেলা হিসেবে স্বীকৃতি পায়। বর্তমানে কানাডায় হকি শুধু খেলা নয়! বরং এটি একটি সংস্কৃতি এবং কানাডার মানুষের গর্বের প্রতীক।
কানাডায় গেলে ফিরে আসতে না চাওয়ার রহস্যের মাঝে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্ট হলো এটি। অর্থ্যাৎ স্কলারশিপ ও পড়াশোনা! প্রতিবছর বাংলাদেশসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে হাজার হাজার শিক্ষার্থী কানাডায় পড়াশোনা করতে যায়। বিশেষ করে যারা উন্নত মানের উচ্চশিক্ষা এবং রিসার্চের সুযোগ খুঁজছেন, তাদের জন্য কানাডা অন্যতম সেরা গন্তব্য।
যারা স্নাতক পড়াশোনার জন্য কানাডায় যেতে চান, তারা আন্তর্জাতিক অফিসের সাথে যোগাযোগ করে তথ্য সংগ্রহ করতে পারেন।
ভর্তির জন্য IELTS বা সমমানের ইংরেজি দক্ষতা পরীক্ষা পাস করতে পারলেই আপনি ইজিলি স্কলারশিপ পেয়ে যাবেন। তাছাড়া কিছু বিশ্ববিদ্যালয়ে সরাসরি ভর্তিরও সুযোগ থাকে।
কানাডায় মাস্টার্স প্রোগ্রাম দুই ধরনের হয়! এর মধ্যে একটি হলো রিসার্চ বেইজড! এখানে এন্ট্রান্স স্কলারশিপ, ফরেন স্টুডেন্ট স্কলারশিপ এবং গবেষণার জন্য বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃক আপনাকে আলাদাভাবে অর্থ দেওয়া হবে। আর বাকি যে মাস্টার্স প্রোগ্রাম আছে তার নাম কোর্সভিত্তিক প্রোগ্রাম। এই প্রোগ্রামে সাধারণত স্কলারশিপ খুব সীমিত হয়ে থাকে।
অনেক শিক্ষার্থীর সবচেয়ে বড় প্রশ্ন হলো কানাডায় পড়াশোনা করতে কত খরচ হয়! বলে রাখি এই খরচ মূলত তিনটি বিষয়ের উপর নির্ভর করবে। এগুলি হলো:
তবে সবমিলিয়ে প্রায় ১,৭০,০০০-১,৮০,০০০ টাকার মতো খরচ হবে।
আপনি যদি কানাডায় পড়াশোনার পাশাপাশি কাজের সুযোগ চান সেক্ষেত্রে আইন অনুযায়ী প্রতি সপ্তাহে ২০ ঘণ্টা পর্যন্ত কাজের অনুমতি পাবেন। আর গ্রীষ্মকালীন সেমিস্টারে বিশেষ করে মে থেকে আগস্ট পর্যন্ত ফুল-টাইম কাজ করতে পারবেন। আর এই সিস্টেমে কিন্তু কানাডায় ইজিলি বাংলাদেশি টাকায় প্রায় ১,৩৫,০০০ টাকার মতো ইনকামের সুযোগ থাকবে।
এবার আসি কানাডার প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের ব্যাপারে। কানাডা এমন একটি দেশ যেখানে প্রকৃতি এবং আধুনিক জীবন একসাথে মিশে গেছে। কানাডায় একদিকে রয়েছে কানাডার প্রতীক ম্যাপল সিরাপ! অন্যদিকে রয়েছে বিশাল পাহাড়ি এলাকা যেমন রকি মাউন্টেনস এবং সুন্দর হ্রদ ও নদী।
অনেকেই কানাডায় পড়াশোনা শেষ করে স্থায়ীভাবে কানাডায় বসবাস করতে চান। আর যেসব কারণে অনেকেই কানাডায় গিয়ে আর দেশে ফিরতে চান না সেসব কারণ হলো:
মনে রাখবেন কানাডা শুধু একটি দেশ নয়! বরং এটি একটি স্বপ্ন। উন্নত শিক্ষা, কর্মসংস্থান, প্রাকৃতিক সৌন্দর্য এবং নিরাপদ লাইফস্টাইল সবই এখানে সম্ভব। আপনি যদি বিদেশে পড়াশোনা বা ক্যারিয়ার গড়ার কথা ভাবেন, তাহলে কানাডা হতে পারে আপনার বেস্ট চয়েজ!