দক্ষিণ কোরিয়া হলো স্কলারশিপ নিয়ে পড়তে চাওয়া স্বপ্নদর্শীদের মিলনমেলা। দক্ষিণ কোরিয়ায় পড়াশোনায় আজকাল বেশ ভালো জবের সুযোগ রয়েছে। রয়েছে স্কলারশিপের সুযোগ।
তবে মাথায় রাখতে হবে দক্ষিণ কোরিয়ায় পড়াশোনা করতে গেলে বেশকিছু ভুল থেকে নিজেকে বিরত রাখতে হবে। কি কি ভুল থাকতে পারে এই তালিকায়? জানতে হলে আমাদের আজকের এই পুরো আর্টিকেলের সাথে থাকতে হবে। জানতে হবে মূল পয়েন্ট এবং গুরুত্বপূর্ণ তথ্য।
দক্ষিণ কোরিয়াতে প্রচুর পাবলিক ট্রান্সপোর্ট সুবিধা পাবেন। কিন্তু এসব সুবিধা ব্যবহার করতে গিয়ে আপনাকে অনেক সমস্যায় পড়তে হবে। বিশেষ করে সব জায়গায় আসা-যাওয়া করতে এসব পাবলিক ট্রান্সপোর্ট সুবিধা গ্রহণ করতে না পারার বিষয়টি আপনাকে অনেক ভাবাবে।
পাবলিক ট্রান্সপোর্টের পরিবর্তে চাইলে সাবওয়ে, ট্রেন এবং বাস রুট ব্যবহার করতে পারেন। আর অর্থ সাশ্রয়ে জন্যে ব্যবস্থা করে নিতে পারেন পাবলিক ট্রান্সপোর্ট কার্ড। যা কিভাবে তৈরি করতে হয় জানতে ইউটিউব সার্চ করুন।
ইন্ট্রোভার্ট হওয়ার কারণে দক্ষিণ কোরিয়ায় পড়াশোনা করতে গিয়ে কারো সাথে না মেশা, কথাবার্তা না বলা হলো আরেকটক মস্তবড় ভুল। যা করা যাবে না। কারণ এই ভুল আপনার একাডেমিক, প্রফেশনাল এবং পার্সোনাল লাইফকে পুরোপুরি ক্ষতিগ্রস্ত করে তুলবে।
এই ভুল এড়াতে বিভিন্ন ইভেন্টে অংশ নিতে পারেন, জয়েন হতে পারেন বিভিন্ন স্টুডেন্ট ক্লাবে, প্রফেসর ক্লাসমেট এমনকি লোকালদের সাথে কথা বলেও তৈরি করতে পারেন স্ট্রং নেটওয়ার্ক।
দক্ষিণ কোরিয়ায় পড়াশোনাকে বোরিং না বানাতে চাইলে সেখানকার বিভিন্ন ফুড ট্রাই করতে পারেন। কারণ কোরিয়ান ট্রেডিশনালের ফুডের অনেক অপশন রয়েছে। যা সারাবছর ট্রাই করেও শেষ করা যাবে না। কোরিয়াতে বর্তমানে বিভিন্ন হালাল রেস্টুরেন্ট রয়েছে। চাইলে সেসব রেস্টুরেন্টের খাবার ট্রাই করতে পারেন৷
কোরিয়ায় তাপমাত্রা অনেক বেশি ম্যাটার করে। এখানে অনেক বেশি গরম যেমন পড়ে, ঠিক তেমনই বেশ ঠান্ডাও পড়ে। পাশাপাশি হুটহাট বৃষ্টির কারণেও দক্ষিণ কোরিয়া বেশ জনপ্রিয়।
সুতরাং পড়াশোনার ক্ষেত্রে এসব বিষয় ইগনোর করলে শরীর যেমন খারাপ করবে ঠিক তেমনই ক্লাস করতে গিয়ে পথিমধ্যে পড়তে হবে চরম ভোগান্তি। কোরিয়ান ওয়েদারের ধরণ বুঝতে বিভিন্ন আর্টিকেল পড়ুন, ভিডিও দেখুন, অভিজ্ঞদের পরামর্শ নিন৷
অনেকেই দক্ষিণ কোরিয়ায় পড়াশোনা করতে গিয়ে একাডেমিক লাইফ নিয়ে অনেক বেশি চিন্তিত থাকেন। নিয়ে ফেলেন অনেক বেশি প্রেশার। ফলে দিনশেষে না হয় সুষ্টু একাডেমিক লাইফের নিশ্চয়তা, না হয় এক্সট্রা কারিকুলাম এক্টিভিটিসে নিজেকে সংযুক্ত করা।
এই ভুল থেকে বাঁচতে নিজের ইচ্ছাকে গুরুত্ব দিন। নিজের ইচ্ছার সাথে যায় এমন সেক্টর বেছে নিন এবং পড়াশোনায় আনন্দ খুঁজে নিন।
আপনি যদি দক্ষিণ কোরিয়ায় পড়াশোনা করতে গিয়ে অসুস্থতার খরচ বাড়াতে না চান তাহলে হেল্থ ইনসুরেন্সের সাহায্য নিতে পারেন। যা অনেকেই করেন না। ফলে দিনশেষে কোরিয়ায় অসুস্থ হয়ে পড়লে চিকিৎসা খরচ অনেকটা বেড়ে যায়।
হেল্থ ইনসুরেন্স সিস্টেম সম্পর্কে জানতে যে প্রতিষ্ঠানে পড়াশোনা করবেন সে প্রতিষ্ঠানের যোগাযোগ করতে পারেন বা সংশ্লিষ্টজনদের সাথে এ ব্যাপারে আলাপ করতে পারেন।
মনে রাখবেন স্কলারশিপ উল্লেখযোগ্যভাবে বিদেশে পড়াশোনার আর্থিক বোঝা কমাতে পারে। সুতরাং স্কলারশিপের সুযোগ ইগনোর করলে, কাঁদতে হবে আড়ালে।
এই ভুল জীবনে করতে না চাইলে বিশ্ববিদ্যালয়, সরকারী সংস্থা এবং বেসরকারী সংস্থাগুলি দ্বারা প্রদত্ত বিভিন্ন স্কলারশিপ নিয়ে আগে থেকেই রিসার্চ করতে পারেন এবং সুযোগ বুঝে আবেদনও করতে পারেন।
যারা ইতিমধ্যেই দক্ষিণ কোরিয়ায় পড়াশোনা করার সুযোগ পেয়ে গেছেন তারা অবশ্যই সঠিক বাজেট না করার মতো ভুল এড়িয়ে চলবেন। কারণ দক্ষিণ কোরিয়া একটি ব্যয়বহুল দেশ। বিশেষ করে সিউলের মতো শহরে বাঁচতে হলে আপনার প্রচুর অর্থ থাকা লাগবে।
সুতরাং কোরিয়ায় যাবার আগে থেকেই রিসার্চ করে টিউশন, বাসস্থান, খাবার, পরিবহন এবং ব্যক্তিগত খরচের জন্য আলাদা বাজেট করে রাখবেন। এক্ষেত্রে সাহায্য নেবেন ইউটিউব, ফেসবুক এবং গুগলের।
কোরিয়ান রীতিনীতি না জেনে কোরিয়ায় যাওয়াটা হবে অনেক বড় ভুল। কোরিয়ান রীতিনীতি সম্পর্কে অজ্ঞতা আপনাকে দেশটিতে বিভিন্ন খারাপ পরিস্থিতির মুখোমুখি হতে বাধ্য করবে।
সুতরাং বাংলাদেশ ছাড়ার আগে কোরিয়ান সংস্কৃতি নিয়ে রিসার্চ করুন, লোকাল কোরিয়ানদের ফলো করুন, কোরিয়ান রীতিনীতি বা নিয়মাবলী শেখার এবং মানিয়ে নেওয়ার জন্য নিজেকে প্রচুর সময় দিন।
অনেকেই কোরিয়ান ভাষা শেখাটাকে দক্ষিণ কোরিয়ায় পড়াশোনার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ মন করেন না। অথচ কোরিয়ানরা কোরিয়ান ভাষাতেই কথাবার্তা বলতে সবচেয়ে বেশি স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করে। সুতরাং কোরিয়ান কমন কিছু শব্দ, বাক্য এবং নিজের ভাষাগত ত্রুটি দূর করে তবেই কোরিয়ার উদ্দেশ্যে দেশ ছাড়ুন।
উপরিউক্ত ভুলগুলি যদি এড়িয়ে চলতে পারেন তাহলে আপনি একাই দক্ষিণ কোরিয়ায় পড়াশোনার জন্যে যেতে পারবেন, সার্ভাইব করতে পারবেন এবং এক্ষেত্রে কারো সাহায্যের প্রয়োজন পড়বে না। তাছাড়া যেকোনো সমস্যা সমাধানে যদি টেকনোলজির সাহায্য নিতে পারেন এবং রিসার্চ করে সমাধান বের করতে পারেন তাহলে আশা করি আপনার পরবর্তী কোরিয়ান স্কলারশিপ লাইফ হবে সবচেয়ে সহজ, সুন্দর এবং সাবলীল।