রিয়াদের ডিজিটাল সিটিতে অবস্থিত ক্রাউন প্লাজা হোটেলে ৩০-৩১ অক্টোবর তারিখে ০২ দিনব্যাপী যৌথ কমিশনের এ সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় বাংলাদেশ প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব দেন অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের সচিব শরিফা খান। সৌদি পক্ষে নেতৃত্ব দেন এ দেশের মানব সম্পদ ও সামাজিক উন্নয়ন বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের ভাইস মিনিস্টার ডঃ আব্দুল্লাহ বিন নাসের বিন মোহাম্মাদ আবুথনাইন।
সভায় সৌদি আরব ও বাংলাদেশের মধ্যে জ্বালানী সহযোগিতা বৃদ্ধিতে একটি টাস্ক ফোর্স গঠনে সম্মত হয়। টাস্ক ফোর্স জ্বালানী খাতে সহযোগিতার বিষয়ে দুদেশের সুবিধাজনক সময়ে নিয়মিত সভা করার বিষয়ে সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। এছাড়া জরুরী ভিত্তিতে বাণিজ্যিকভাবে এলএনজি সরবরাহ ও ইষ্টার্ণ রিফাইনারি ইউনিট ২ প্রকল্পে সৌদি বিনিয়োগের জন্য বাংলাদেশ সৌদি আরবকে অনুরোধ জানালে সৌদি আরব সহযোগিতার আশ্বাস দেয়। সভায় সৌদি আকওয়া পাওয়ার এর বাংলাদেশে ১০০০ মেগাওয়াট সোলার পাওয়ার ও ৭৩০ মেগাওয়াট এর গ্যাস বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মানের বিষয়ে আলোচনা অনুষ্ঠিত হয়।
সভায় দুদেশের নৌ পেশাজীবীদের মধ্যে নিয়োগ, প্রশিক্ষণসহ অন্যান্য সম্ভাব্য সকল ক্ষেত্রে পারস্পারিক সহযোগিতা বৃদ্ধির জন্য বাংলাদেশের নৌ পরিবহন মন্ত্রণালয় এবং সৌদি আরবের যোগাযোগ মন্ত্রণালয়ের মধ্যে একটি সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরিত হয়। বাংলাদেশের পক্ষে সৌদি আরবে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত ডঃ মোহাম্মদ জাবেদ পাটোয়ারী, বিপিএম (বার) সমঝোতা স্মারকে স্বাক্ষর করেন। সৌদি পক্ষে সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর করেন মেরিটাইম ট্রান্সপোর্ট এর ডেপুটি আব্দুল রহমান এম আল থুনায়েন।
বৈঠকে এফবিসিসিআই, বাংলাদেশ এবং ফেডারেশন অব সৌদি চেম্বার এন্ড কমার্স এর মধ্যে বাণিজ্য বৃদ্ধির লক্ষ্যে একটি জয়েন্ট বিজনেস কাউন্সিল গঠনে সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরিত হয়। এ সমঝোতা স্মারকে বাংলাদেশের পক্ষে এফবিসিসিআই এর ভাইস প্রেসিডেন্ট হাবিব উল্লাহ ডন স্বাক্ষর করেন। সৌদি চেম্বার এর পক্ষে ভাইস চেয়ারম্যান প্রকৌশলী তারিক আল হায়দারী সমঝোতা স্মারকে স্বাক্ষর করেন।
সৌদি আরবের স্বাস্থ্য খাতে বাংলাদেশ হতে পেশাজীবি নিয়োগের বিষয়ে বাংলাদেশের স্বাস্থ্য শিক্ষা ও পরিবার কল্যাণ বিভাগ এবং সৌদি আরবের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের মধ্যে একটি ‘এক্সিকিউটিভ প্রোগ্রাম’ বাস্তবায়নের জন্য দ্রুত চুক্তি স্বাক্ষরের বিষয়ে সমঝোতা হয়। এছাড়া, দুদেশের শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মধ্যে বিজ্ঞান ও শিক্ষার সকল ক্ষেত্রে কার্যকরী দ্বিপাক্ষিক সহায়তা বৃদ্ধির লক্ষ্যে আরেকটি সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরের বিষয়ে ঐক্যমত্য পোষণ করা হয় হয়।
যৌথ অর্থনৈতিক কমিশনের বৈঠকে দু দেশের মধ্যে দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য, বিনিয়োগ, শিক্ষা, স্বাস্থ্য, আইসিটি, কৃষি, পরিবেশ, ধর্মীয় মূল্যবোধ, ইত্যাদি বিষয়ে স্বার্থসংশ্লিষ্ট আলোচনা এবং পারস্পারিক সহযোগিতা বৃদ্ধির বিষয়ে গুরুত্বারোপ করা হয়। সভা শেষে একটি যৌথ কার্যবিবরনী স্বাক্ষর করা হয়।
যৌথ অর্থনৈতিক কমিশনের বৈঠকে বাংলাদেশের বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের ৮ সদসস্যের একটি প্রতিনিধি দল অংশগ্রহন করে। এছাড়া বাংলাদেশ দূতাবাস ও জেদ্দাস্থ কনস্যূলেটের কর্মকর্তারা এতে যোগ দেন।