অনামিকা খানম চব্বিশ বছরের এক তরুনী। প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ে বিবিএ অধ্যয়নরতা। নবম শ্রেণীতে পড়ার সময় বিভিন্ন নেশায় জড়িয়ে পড়ে সে। একসময় ড্যান্স ক্লাবের সদস্য ছিল, ডিজে পার্টিও করত সে।
অনামিকা ভুয়া পরিচয়ে ফেসবুক আইডি খোলে তাতে নানান মিথ্যা জিনিষে অলংকৃত করে উচ্চবিত্ত পরিবারের সন্তান, বিশেষ করে প্রশাসনের বিভিন্ন কর্মকর্তা ও রাজনীতিবিদদের টার্গেট করে বন্ধুত্ব করতেন। সেখানে নিজেকে কৃত্রিমভাবে সুন্দর ও আকর্ষণীয় করে উপস্থাপন করতেন। নানান ফন্দিফিকিরে অনলাইনে মুহূর্তেই পরিচয়, বন্ধুত্ব এবং ঘনিষ্ঠ করে তোলতেন নিজেকে। প্রেমের ফাঁদে ফেলে যে কাউকে তার সহজ শিকারে পরিণত করতে খুব বেশি সময় নিতনা সে। অতপর ভিডিও কলের রঙিন নেশায় নিয়মিত সংযুক্ত রাখতো তাদেরকে। সুকৌশলে একান্ত মুহূর্তের ব্যক্তিগত ছবি ও ভিডিও ধারণ করে নিতো চতুর অনামিকা।
এরপর অনামিকা তার আসল রূপে ফিরতো। একান্ত ছবি ও ভিডিওর মাধ্যমে তাদেরকে ভয়-ভীতি দেখিয়ে ব্ল্যাকমেইল করতে থাকে। অনামিকার ফাঁদে পড়া লোকদের কাছে বিরাট অংকের চাঁদা দাবি করে। নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে টাকা দিতে অপারগতা প্রকাশ করলে এসব অশ্লিল ছবি ভিডিও তাদের আত্মীয়-স্বজনসহ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল করার হুমকি দিতে থাকে। বিগত কয়েক বছর যাবত অসংখ্য লোকজনের সাথে এসব অনৈতিক কাজ করে প্রচুর টাকা পয়সা হাতিয়ে নেয় সে।
কিন্তু শেষরক্ষা হলোনা অনামিকার। এক মহিলা ভুক্তভোগীর করা মামলার ভিত্তিতে তাকে নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লা এলাকা থেকে গ্রেফতার করে সিআইডি সাইবার ইন্টেলিজেন্স -এর বিশেষ একটি টিম। উদ্ধার করা হয় প্রতারণা এবং ব্ল্যাকমেইলিং এর কাজে ব্যবহৃত তিনটি মোবাইল ফোন। মোবাইল ফোনে অসংখ্য লোকজনকে ব্ল্যাকমেইল করার তথ্য পাওয়া যায়। বিকাশ নগদের মাধ্যমে বিপুল পরিমান টাকা হাতিয়ে নেওয়ার আলামতও পাওয়া যায়। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে বিভিন্ন প্রতারণাসহস সকল অপকর্মের কথা স্বীকার করেছে। মূলত নেশার টাকা যোগাড় করতেই এই অনৈতিক পথ বেছে নেয় সে।
পরিচয় নিশ্চিত না হয়ে বাইরের চাকচিক্য এবং আকর্ষণীয় ফেসবুক আইডি রিকোয়েস্ট গ্রহণ না করাই স্রেয়:
ফেসবুকসহ সকল সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমে ভিডিও কলের ব্যাপারে অনেক বেশী সতর্ক হওয়া প্রয়োজন:
অবৈধভাবে চাকরি, বদলি বা বিদেশ যাওয়ার জন্য কিংবা যেনতেনভাবে টাকার লেনদেন না করা ।