আমাদের মধ্যে অনেকেরই ইচ্ছা থাকে প্রাইমারি শিক্ষক হওয়ার। কিন্তু আমরা অনেকেই জানিনা যে, প্রাইমারি শিক্ষক হিসেবে নিয়োগ পেতে হলে কিছু নির্দিষ্ট যোগ্যতার প্রয়োজন। আপনি যদি প্রাইমারি শিক্ষক হতে চান তাহলে আপনার এই যোগ্যতাগুলো থাকা বাঞ্ছনীয়। আর আমাদের আজকের এই আর্টিকেলে আপনি জানতে পারবেন কিভাবে আপনি প্রাইমারি শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষায় চান্স পেতে পারেন ১০০% কনফিডেন্স নিয়ে শুধু পরিশ্রম নয়, বুদ্ধি দিয়ে!
প্রথমে জানা দরকার প্রাইমারি শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষা কী আসে। মুলত তিন ধাপে এই পরীক্ষা হয়ে থাকে। লিখিত পরীক্ষা MCQ ৮০ নম্বর। মৌখিক পরীক্ষা ২০ নম্বর এবং সার্বিক মেধা তালিকা। চলুন, এবার স্টেপ বাই স্টেপ MCQ ভাগের breakdown করে আসা যাক। এক্ষেত্রে বাংলা থেকে ২০ নম্বরের, ইংরেজি থেকে ২০ নম্বরের, গণিত থেকে ২০ নম্বর এবং সাধারণ জ্ঞান ও ICT থেকে ২০ নম্বরের এমসিকিউ প্রশ্ন হবে।
একটা প্রোপার গাইডেড মাস্টারপ্ল্যান আপনাকে আপনার স্বপ্ন পূরণে সামনে এগিয়ে নিতে পারে স্মুথলি। তাই একটা প্রিপারেশন প্ল্যান থাকা আবশ্যক।
প্রথমেই বাংলা নিয়ে আলোচনা করা যাক। এই সাবজেক্টে নিয়ম জানলেই ২০ এ ২০। বাংলার পড়ার টপিকগুলো হলো ব্যাকরণের বানান, বিপরীত শব্দ, এককথায় প্রকাশ, কারক-বিভক্তি, সমাস, উপসর্গ-প্রত্যয়। আর সাহিত্যের গুরুত্বপূর্ণ পড়ার মতো অংশ হলো কবি-সাহিত্যিক, সাহিত্য ধারার নাম, প্রবাদ-প্রবচন, বানান বিশুদ্ধতা ইত্যাদি।
এবার আসি ইংরেজি নিয়ে। ইংরেজিতে দরকারি টপিক হলো Grammar + Translation। আর মোস্ট ইমপরটেন্ট টপিকসগুলো হলো:
এক্ষেত্রে সহজেই ইংরেজি ক্লিয়ার করতে আপনারা ইংলিশ ফর কম্পিটিটিভ এক্সাম বইটি ব্যবহার করতে পারেন।
প্রাইমারি শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষার আরেকটা গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো গণিত। বিশেষ করে বেসিক ম্যাথস। একটু বুঝে পড়লেই ২০ এ ১৮ পাওয়া যায় এতে। গণিতের মোস্ট ইমপরট্যান্ট টপিকসগুলো হলো শতকরা, লাভ-ক্ষতি, সুদ, ভগ্নাংশ, বীজগণিত, শতকরা হিসাব, পাটিগণিতের সহজ কৌশল ইত্যাদি।
প্রাইমারি শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষার মোস্ট ইমপরট্যান্ট বিষয় হলো সাধারণ জ্ঞান ও ICT। একে যতটা সহজ ভাবেন, আসলে ঠিক ততটাই কঠিন। কিন্তু স্ট্রাটিজি মেইনটেইন করে পড়লেই আপনার কাছে সাধারণ জ্ঞান ও ICT সহচেই ধরা দেবে।
গুরুত্বপূর্ণ পড়ার টপিক হলো বাংলাদেশ বিষয়াবলি, মুক্তিযুদ্ধ, সংবিধান, প্রশাসন ইত্যাদি। তাছাড়া আন্তর্জাতিক আ্যফেয়ারস, জাতিসংঘ, সার্ক ইত্যাদি সম্পর্কে ধারণা ধাকতে হবে।ICT `র জন্য Excel, Word, Basic Shortcuts জানা থাকা লাগবে।
প্রাক্টিস মেইকস এ ম্যান পারফেক্ট। আপনি যত বেশি প্রাক্টিস করবেন ততই এক্সাম হলে ভালো ডেলিভার করতে পারবেন। আর প্রাইমারি শিক্ষক হিসেবে নিয়োগ পেতে আপনার যা করতে হবে বা যেভাবে প্রাক্টিস করা উচিত সেই প্রসেসটা হলো:
ডেইলি মডেল টেস্ট দিন, কমপক্ষে পাচঁ বছর পর্যন্ত আগের বছরের প্রশ্ন সলভ করুন, প্রতি সাত দিনে একবার পুরো সপ্তাহের পড়া রিভিশন দিন এবং বন্ধুদের নিয়ে Group Study করুন।
আমাদের সবার মধ্যেই ভাইবা নিয়ে একটা নারভাসনেস কাজ করে। তো চলুন, এখন জেনে আসি প্রাইমারি শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষায় সাধারণত কোন ধরণের প্রশ্ন করা হয়। প্রথমেই নিজেকে পরিচয় জানতে চাওয়া হয়, কেন শিক্ষক হতে চান, আপনার জেলার ইতিহাস, সাম্প্রতিক ঘটনাবলির থেকে যেকোনো প্রশ্ন।
এই প্রকমাক্টিসটা কিন্তু অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে কথা বলুন। YouTube এ সরকারি Viva প্রশ্ন শুনে অনুশীলন করুন। আর শিক্ষকের মতো গম্ভীর ভঙ্গিতে বলার প্র্যাকটিস করুন।
আমাদের দেয়া এই ৩০ দিনের চ্যালেঞ্জ যদি আপনি ফুলফিল করতে পারেন, তাহলে আপনার প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষায় চান্স পাওয়ার প্রোবাবিলিটি অনেক বেড়ে যাবে। আপনি নিজের মতো করে টাইম সেট করে ত্রিশ দিনে নিচের দেয়া টপিকসগুলো কমপ্লিট করবেন। এগুলো কমপ্লিট করলেই তা পরীক্ষার জন্য যথেষ্ট হবে।
প্রথম ৭ দিনে বাংলা, ইংরেজি এবং গণিত কমপ্লিট করবেন। সাথে জেনারেল নলেজও কমপ্লিট করার ট্রাই করবেন। এই প্রথম সময়ে ইন ডিটেইলস শেষ করার দরকার নেই। জাস্ট বেসিকটাই রিভিশন দেবেন।
পরবর্তী ১৪ দিনে ব্যাকরণ, Tense & Voice, শতকরা, মুক্তিযুদ্ধ, সাহিত্য, Parts of Speech লাভ-ক্ষতির ম্যাথস,ICT Basics, বানান + প্রবাদ, Narration + Vocab বেসিক বীজগণিত এবং কারেন্ট অ্যাফেয়ারস শেষ করবেন।
আর মাসের শেষ ৭ দিনে আপনি মিক্সড টপিক সহ যা যা পগেছেন সবকিছুকে একেবারে ফাইনালি রিভিশন করবেন।
সবসময় মনে রাখবেন যে পরিশ্রম করবে আল্লাহ কিন্তু তাকেই পুরস্কৃত করবেন। আর প্রাইমারি শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষা বাংলাদেশের ওয়ান অফ দ্যা মোস্ট কম্পিটিটিভ এক্সাম। তাই যুদ্ধের জন্য নিজেকে সর্বোত্তমভাবে প্রস্তুত করুন। ইনশাআল্লাহ, জয় আপনজরই হবে।