আচ্ছা আমরা যখন আমাদের দেশের গার্মেন্টসে চাকরি করি তখন কত টাকা ইনকাম করতে পারি? একজন সাধারণ শ্রমিক হিসাবে নিশ্চয় ৭/৮ হাজার টাকার বেশি না, তাই না?
কিন্তু কেমন হয় আমি যদি বলি আপনি গার্মেন্টসের একজন সাধারণ কর্মী হয়েই ৩০,০০০ থেকে ৪০,০০০ টাকার বেশি ইনকাম করতে পারবেন, তাও প্রতি মাসে? আপনার কি বিশ্বাস হবে?
হ্যাঁ! হতে হবে। কারণ কাজটা আপনি করবেন মিশরের কোনো গার্মেন্টসে! প্রাচীন সভ্যতা এবং পিরামিডের জন্য বিশ্ববিখ্যাত মিশর। তার পাশাপাশি দেশটি বর্তমানে গার্মেন্টস শিল্পে বৈশ্বিক মানচিত্রে একটি গুরুত্বপূর্ণ স্থান দখল করে রেখেছে।
চলুন তবে আজ এরই প্রেক্ষিতে মিশর গার্মেন্টস ভিসা সম্পর্কে বিস্তারিত জানি। জানার চেষ্টা করি মিশর গার্মেন্টস ভিসা পেতে কত টাকা লাগবে, কিভাবে পাওয়া যাবে, কি কি ডকুমেন্টস লাগবে এবং কত টাকা ইনকাম করা যাবে।
মিশর গার্মেন্টস ভিসা পেতে কি কি যোগ্যতা লাগবে?
মূলত মিশর গার্মেন্টস ভিসা পেতে হলে আপনাকে কিছু নির্দিষ্ট যোগ্যতার সাথে নিজেকে ম্যাচ করাতে হবে। যেমন:
১. শিক্ষাগত যোগ্যতা হিসাবে সাধারণত মাধ্যমিক বা উচ্চ মাধ্যমিক পাস হওয়া আবশ্যক। তবে, বিশেষ দক্ষতার জন্য বৃত্তিমূলক প্রশিক্ষণ বা ডিপ্লোমারও দরকার পড়তে পারে।
২. কাজের অভিজ্ঞতা হিসাবে থাকতে হবে গার্মেন্টস খাতে পূর্ব অভিজ্ঞতা! এক্ষেত্রে আপনি ভিসা পাওয়ার আগে কয়েকমাস দেশের কোনো একটি গার্মেন্টসে ইন্টার্নশিপ করতে পারেন। বিশেষ করে সেলাই, কাটিং বা প্রোডাকশনে আপনার এক্সপেরিয়েন্স থাকাটা অনেক জরুরি।
৩. মিশর গার্মেন্টস ভিসা পেতে হলে স্কিল হিসাবে দরকার সেলাই, কাটিং, প্যাটার্ন মেকিং এবং প্রোডাকশনের উপর ভালো দখলদারিত্ব!
মিশর গার্মেন্টস ভিসার জন্য আবেদন কিভাবে করবো?
এবার আসি মিশর গার্মেন্টস ভিসার জন্য আবেদন কিভাবে করবেন সে ব্যাপারে। অন্যান্য দেশের যেকোনো জবের ভিসার জন্য আপনি যেভাবে আবেদন করেন কিংবা যেসব ডকুমেন্টস লাগে সেসব ডকুমেন্টস দিয়েই আপনি এই কাজটা সেরে নিতে পারবেন। যেমন:
মিশর গার্মেন্টস ভিসার জন্য ঘরে বসেই আবেদন
সময়টা যখন ডিজিটাল তখন আপনাকে আর বাইরে দৌড়াদৌড়ি করে মিশর গার্মেন্টস ভিসার জন্য আবেদন করতে হবে না। এক্ষেত্রে আপনি মিশরের ইমিগ্রেশন ওয়েবসাইটে গিয়েই আবেদন করতে পারবেন।
আবেদনের পর প্রয়োজনীয় ডকুমেন্ট আপলোড করলেই আপনার আবেদন কতৃপক্ষ রিসিভ করে নিবে। এক্ষেত্রে বলে রাখা ভালো ভিসার ধরন ও মেয়াদের উপর নির্ভর করে আবেদন ফি নির্ধারিত হবে।
মিশর গার্মেন্টস ভিসার জন্য আবেদন করতে কত টাকা লাগবে?
মিশর গার্মেন্টস ভিসার জন্য মোট খরচ কত টাকা পড়বে তা নির্ভর করবে আপনার এজেন্সির উপর। অনেক সময় এক্ষেত্রে ভিসা ফি, বিমান ভাড়াও ম্যাটার করে। তবে সাধারণত, পুরো প্রক্রিয়ায় ২ থেকে ৩ লাখ টাকা খরচ হতে পারে। নির্দিষ্ট এজেন্সি এবং সময়ের সাথে সাথে আবার এই টাকার পরিমাণে তারতম্য দেখা দিতে পারে। সবচেয়ে ভালো হয় এ ব্যাপারে এজেন্সি কিংবা অভিজ্ঞ কারো সাথে কথা বলে নিতে পারলে!
মিশর গার্মেন্টস ভিসার আন্ডারে কত টাকা ইনকাম করা যাবে?
কাজের ধরণ, দক্ষতা এবং অভিজ্ঞতার উপর আপনি এই ভিসার আন্ডারে মাসে প্রায় ৩০০ থেকে ৪০০ মার্কিন ডলার ইনকাম করতে পারবেন। যা বাংলাদেশি টাকায় প্রায় ৩০,০০০ থেকে ৪০,০০০ টাকার সমান হবে। আর যারা দিনের পর দিন কষ্ট করে নিজেকে এক্সপেরিয়েন্সড সুপারভাইজার এবং অভিজ্ঞ কর্মী হিসাবে গড়ে তুলতে পারবেন তাদের ইনকাম রেঞ্জ আরো বেড়ে যাবে।
মিশর গার্মেন্টস ভিসার সুবিধা এবং অসুবিধা
সবশেষে চলুন কথা বলি মিশর গার্মেন্টস ভিসার সুবিধা এবং অসুবিধার ব্যাপারে। এই ধরণের কাজের সবচেয়ে বড় সুবিধা হলো আপনি অতিরিক্ত আয়ের জন্য ওভারটাইম কাজ করতে পারবেন। তাছাড়া আন্তর্জাতিক মানের কাজের অভিজ্ঞতা অর্জন করার পাশাপাশি ফ্রিতে থাকা-খাওয়ার সুযোগ তো থাকছেই!
তবে হ্যাঁ! অসুবিধাও আছে। বিশেষ করে ভিসা প্রতারণার ঝুঁকি, ভাষা নিয়ে বিপাকে পড়া কিংবা ভিসা, আসা-যাওয়ার খরচ ইত্যাদি পয়েন্ট যথেষ্ট চ্যালেঞ্জিং। তবে মোকাবিলা করতে পারলে দেখবেন আরামসে কাজ করে দেদারসে টাকা ইনকাম করতে পারছেন!