চলছে ঠান্ডার সময়। চারদিকে এখন কাশির সমস্যা, সর্দির সমস্যা আর জ্বরের ঘোরে কাটানো খারাপ মুহুর্ত ছড়িয়ে বেড়াচ্ছে। পাশাপাশি বিভিন্ন ক্ষতিকারক ভাইরাসের সংক্রমণের আশংকা তো থাকছেই। মূলত অ্যালার্জি, সংক্রমণ এবং অ্যাসিড রিফ্লাক্স খুসখুসে বিরক্তিকর কাশি দেখা দিতে পারে। এমন পরিস্থিতিতে খুসখুসে বিরক্তিকর কাশি দূর করার উপায় হিসাবে নিচের টিপসগুলি ফলো করতে পারেন।
খুসখুসে বিরক্তিকর কাশি দূর করার উপায় হিসাবে মধু ব্যবহার করা যেতে পারে। ২০২১ সালের একটি রিসার্চ টিমের তথ্য অনুযায়ী কাশি দমনে এবং অ্যান্টিবায়োটিকের প্রয়োজনীয়তা প্রতিরোধে সহায়তা করে থাকে এই মধু।
এছাড়াও অন্য একটি গবেষণায় দেখা যায় গবেষকরা মধুকে ডেক্সট্রোমেথরফানের সাথে তুলনা করে সফল হয়েছেন। খুসখুসে বিরক্তিকর কাশি দূর করার উপায় ফলো করতে নিচের টিপস অনুযায়ী মধু খেতে পারেন:
যারা মধুকে স্বাস্থ্যগত বিভিন্ন সমস্যার কারণে খুসখুসে বিরক্তিকর কাশি দূর করার উপায় হিসাবে ফলো করতে চান না তারা আদা ব্যবহার করতে পারেন। এই আদাতে সর্বমোট ১০ প্রাকৃতিক মেডিসিন রয়েছে। যা অনেকগুলি ঔষধে থাকা উপাদানের সমতুল্য।
কাশি সারাতে আদা ছেঁচে নিয়ে তা পানিতে সিদ্ধ করে খেতে পারেন। পাশাপাশি কাঁচা আদা বা আদা চাও পান করা যেতে পারে। তবে এক্ষেত্রে মনে রাখতে হবে অতিরিক্ত আদা চা পান করলে ব্যাক্তির পেট খারাপ বা অম্বল হতে পারে।
অন্য একটি ভিন্ন খুসখুসে বিরক্তিকর কাশি দূর করার উপায় হলো বেশি বেশি গরম পানীয় পান করা। বিশেষ করে স্বাস্থ্যসম্মত চা পান করার ব্যাপারে একেবারে কিছু না বললেই নয়।
শুধু কাশি বা হাঁচির সমস্যায় ভোগা ব্যাক্তিরাই নন বরং অতিরিক্ত ঠান্ডা বা ফ্লুর উপসর্গযুক্ত ব্যক্তিরাও এই টিপস ফলো করে উপকৃত হতে পারেন। গরম পানীয়ের অংশ হিসাবে নির্দ্বিধায় নিচের অপশনগুলি ব্যবহার করা যেতে পারে:
গলা ব্যথা এবং সাধারণ সর্দির পাশাপাশি কাশির সমস্যা দূর করতে গার্গল করতে পারেন। রোগ সারানোর চাইতেও এই টিপস আপনাকে ব্যথা উপশম করতে সাহায্য করবে। আপনি জেনে অবাক হবেন সম্প্রতি কোভিডের বিস্তার রোধ করতে বিভিন্ন অ্যান্টিসেপটিক মাউথওয়াশের সাথে তুলনা করা হয়েছে এই গার্গল সিস্টেমটিকে।
যাইহোক! খুসখুসে বিরক্তিকর কাশি দূর করার উপায় হিসাবে গার্গলের মতো ম্যাজিকাল টেকনিকটি ব্যবহার করতে নিচের টিপসগুলি ফলো করুন:
তবে অল্পবয়সী শিশু এবং উচ্চ রক্তচাপে আক্রান্ত রোগীদের লবণ ইগনোর করার অনুরোধ রইলো। এই ক্যাটাগরির ব্যাক্তিরা লবণ ছাড়াই সাধারণ কুসুম গরম পানিতে গার্গল করে নিতে পারেন।
খুসখুসে বিরক্তিকর কাশি দূর করার উপায় হিসাবে গরম গরম ভাপ বেশ কার্যকরী টিপস। বিশেষ করে কাশির সাথে যাদের কফের সমস্যা আছে তারা এই গরম বাপের সাহায্য নিয়ে ভালোই উপকৃত হতে পারবেন।
কিভাবে গরম ভাব নিলে দ্রুত আপনার কাশি সেরে যাবে সে ব্যাপারে আলোচনার পূর্বে বলে রাখি কাশি দূর করতে আপনি চাইলে গরম পানিতে গোসল করতে পারেন। সেই সাথে ঘন ঘন গরম লিকুইড নিতে পারবেন। যাইহোক…কার্যকর পদ্ধতিতে গরম ভাপ নেওয়ার টিপসগুলি হলো:
হট শাওয়ার বা গরম পানিতে গোসল করার অভ্যাস আপনাকে স্ট্রেস কমাতে সাহায্য করার পাশাপাশি কাশি দূর করতেও সাহায্য করবে। গবেষকদের মতে কনজেশন, কাশি এবং সাইনাসের চাপের মতো সাধারণ ঠান্ডা উপসর্গগুলি তাড়াতে এই গরম পানিতে গোসল করার ব্যাপারটি যথেষ্ট কার্যকর ভুমিকা পালন করে।
এভাবে গোসল করলে রোগীর ভালোভাবে শ্বাসনালী খুলে যায়। ফলে শ্বাস নিতে খুব একটা সমস্যা হয় না এবং আলাদা প্রশান্তি কাজ করে।
অনেকেই পানি পান করাকে খুসখুসে বিরক্তিকর কাশি দূর করার উপায় হিসাবে ধরে নিতে নারাজ। যা মোটেও সঠিক নয়। দেহে যেকোনো রোগ থাকুক বা না থাকুক আপনার হাইড্রেশন মেইনটেইন করাটা সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ কাজ।
তাছাড়া সবসময় হাইড্রেটেড থাকলে আপনার খুসখুসে কাশি সহজ হওয়ারও চান্স থাকে। ফলে কাশির আসার সময় যে গলা এবং বুকে ব্যাথা অনুভুত হয় তা অনেকাংশে কমে যায়।
কাশি দূর করার জন্য টেসালন পার্লেসের মতো বেনজোনাটেট ঔষধ ব্যবহার করতে পারেন। তবে যেকোনো ক্যাটাগরির ঔষধ সেবনের পূর্বেই ডাক্তারের সাথে তা পরামর্শ করে নেবেন। মোটকথা অবশ্যই আপনার নিজের ডাক্তার আপনার জন্য কী সঠিক তা নির্ধারণ করে দেবেন।
সেই সাথে যেকোনো ধরণের কাশির ঔষধ কেনার পূর্বেই এর বোতলের লেবেল চেক করে নিতে ভুলবেন না। বিশেষ করে এর প্বার্শপ্রতিক্রিয়া সম্পর্কে সচেতন থাকার চেষ্টা করবেন।
উপরোক্ত খুসখুসে বিরক্তিকর কাশি দূর করার উপায়গুলি ফলো করার পাশাপাশি গলা ব্যথার জন্য অস্থায়ী উপশম হিসাবে বিভিন্ন থ্রোট স্প্রে ব্যবহার করতে পারেন। এসব স্প্রে যেকোনো ফার্মেসিতে সুলভ মূল্যেই পেয়ে যাবেন আশা করি। মনে রাখবেন স্বাস্থ্যই সকল সুখের মূল।
সুতরাং রোগে প্রতিকার করার পূর্বে এর প্রতিরোধ করাটা জরুরি। সামনের দিনগুলিতে নিজেকে ভালো রাখতে এখন থেকে ঠান্ডা পরিবেশকে ইগনোর করুন। নিজের যত্ন নিন এবং নিজের সুস্বাস্থ্য নিশ্চিত করুন।