ইউরোপের যে ৭ টি দেশের ভিসা পাওয়া অনেকটাই সহজ। দেশের অধিকাংশ মানুষ বিদেশে যাওয়ার ক্ষেত্রে ইউরোপের দেশগুলোকে প্রাধান্য দিয়ে থাকে। কারণ, ইউরোপের শেনজেনভুক্ত একটি দেশের ভিসা পেলে ২৭টি দেশে বিনা ভিসায় ভ্রমণ করা যাবে। এছাড়া ইউরোপের প্রায় সব দেশেই জীবনযাত্রার মান বেশ উন্নত। আবার যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা, অস্ট্রেলিয়ার চেয়ে ইউরোপের দেশগুলোতে স্টুডেন্ট ভিসা ও ভিজিট ভিসা প্রাপ্তি যেমন সহজ, তেমনি খরচও অনেক কম।
বর্তমানে ইউরোপের যে দেশগুলোর ভিসা সহজে পাওয়া যায় সেগুলোর মধ্যে রয়েছে— ফ্রান্স, পর্তুগাল, মাল্টা, সুইজারল্যান্ড, নেদারল্যান্ডস, হাঙ্গেরি, লিথুনিয়া, লাটভিয়া ইত্যাদি।
এছাড়া অস্ট্রিয়া, বেলজিয়াম, চেক প্রজাতন্ত্র, ডেনমার্ক, এস্তোনিয়া, ফিনল্যান্ড, ফ্রান্স, জার্মানি, গ্রীস, হাঙ্গেরি, আইসল্যান্ড, ইতালি, লাটভিয়া, লিথুয়ানিয়া, লুক্সেমবার্গ, মাল্টা, নেদারল্যান্ডস, নরওয়ে, পোল্যান্ড, এই ভিসার মাধ্যমে, আপনি এই ২৬ টি ইউরোপীয় দেশে অবাধে ভ্রমণ করতে পারবেন এবং সর্বোচ্চ ৯০ দিন থাকতে পারবেন।
ফ্রান্স:
ফ্রান্স অর্থনৈতিকভাবে বেশ শক্তিশালী একটি দেশ। ফ্রান্সে টুরিস্ট ভিসা পাওয়া যায় সহজেই। তবে সেক্ষেত্রে ভিসাপ্রাপ্তির ক্ষেত্রে শর্তগুলো পূরণ করতে হবে। ফ্রান্সে স্টুডেন্ট ভিসাও সহজে পাওয়া যায়। কিন্তু কাজের জন্য ভিসা পাওয়া কিছুটা কঠিন। তবে নিয়ম মেনে চেষ্টা করলে খুব সহজেই কাজের জন্য ভিসা পেয়ে যাবেন।
পর্তুগাল:
অভিবাসীদের স্বর্গ বলা হয় পর্তুগালকে। কারণ, পর্তুগালে নাগরিকত্ব পাওয়া সবচেয়ে সহজ। পর্তুগালে কাজের জন্য ভিসা পাওয়া বেশ সহজ। এছাড়া ভ্রমণ ও পড়াশোনার জন্য সহজেই ভিসা পাওয়া যায়। তবে স্টুডেন্ট ভিসা পেতে আইইএলটিএস স্কোর কমপক্ষে ৬.০০ থাকতে হবে।
মাল্টা:
মাল্টা ইউরোপের শেনজেনভুক্ত একটি দেশ। বর্তমানে প্রতিবছরই বিভিন্ন দেশ থেকে মাল্টায় কাজের উদ্দেশ্যে পাড়ি জমায়। ইউরোপের এই দেশে কাজের জন্য ভিসা পাওয়া অনেকটাই সহজ। বর্তমানে বাংলাদেশ ও ভারত থেকে কাজ নিয়ে মাল্টায় যাচ্ছেন অনেকেই। এছাড়া টুরিস্ট ও স্টুডেন্ট ভিসাপ্রাপ্তিও বেশ সহজ। ইউরোপের অন্যদেশগুলোর তুলনায় মাল্টায় যেতে খরচও বেশ কম।
সুইজারল্যান্ড:
পর্যটনের অন্যতম দেশ সুইজারল্যান্ড। সবসময় বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে সুইজারল্যান্ডের প্রাকৃতিক সৌন্দর্য দেখতে যান পর্যটকরা। বাংলাদেশ থেকে স্টুডেন্ট ভিসা ও টুরিস্ট ভিসা নিয়ে সুইজারল্যান্ডে যাওয়া যায়। বাংলাদেশের অধিকাংশ মানুষ টুরিস্ট ভিসা নিয়ে সুইজারল্যান্ডে যান। কারণ, সহজেই সুইজারল্যান্ডের টুরিস্ট ভিসা পাওয়া যায়। কিন্তু কাজের জন্য সুইজারল্যান্ডের ভিসা পাওয়া বেশ কঠিন। আবার পড়াশোনা জন্য ভিসাপ্রাপ্তি সহজ। সেক্ষেত্রে ভালো আইইএলটিএস স্কোর ও শিক্ষাগত যোগ্যতা থাকতে হবে।
হাঙ্গেরি:
বাংলাদেশ থেকে হাঙ্গেরিতে পড়াশোনার জন্য ভিসাপ্রাপ্তি অনেক সহজ। এক্ষেত্রে অবশ্যই সকল শর্ত পূরণ করতে হবে। সেই শর্তগুলোও বেশ সহজ। এছাড়া হাঙ্গেরিতে কাজের জন্য ভিসা চালু করা হচ্ছে। বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী দেখা গিয়েছে, ২০২১ সালে আবেদনকারীদের মধ্যে ৯৫ শতাংশ হাঙ্গেরির ভিসা পেয়েছে। বাকী ৫ শতাংশ ভিসা কাগজপত্রের গরমিলের জন্য বাতিল করা হয়।
নেদারল্যান্ড:
বর্তমানে নেদারল্যান্ডসের স্টুডেন্ট ভিসাও অনেক সহজ। বিগত কয়েক বছরের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, যেসব শিক্ষার্থী নেদারল্যান্ডসে স্টুডেন্ট ভিসার আবেদন করেছে, তাদের সকলেই ভিসা পেয়েছে। কিন্তু সেক্ষেত্রে আইইএলটিএস স্কোর কমপক্ষে ৬.৫০ থাকতে হবে।
লিথুয়ানিয়া:
সুইডেনের বিপরীত পাশে অবস্থিত লিথুয়ানিয়ার শিক্ষার হার প্রায় ৯৯ শতাংশ। বর্তমানে বাংলাদেশ থেকে সবচেয়ে বেশি স্টুডেন্ট ভিসায় সুবিধা পাওয়া যায় এই দেশটিতে। তবে লিথুনিয়ায় কাজের জন্য ভিসা পাওয়া বেশ কঠিন।
লাটভিয়া:
বাল্টিক সাগরের পূর্বদিকে অবস্থিত লাটভিয়া। দেশটিতে স্টুডেন্ট ভিসার প্রক্রিয়া বেশ সহজ। এছাড়া কাজের জন্যও ভিসা দিয়ে থাকে দেশটি।সাম্প্রতিক পরিসংখ্যান অনুযায়ী ইউরোপের এই দেশগুলোতে ভিসা প্রাপ্তির হার অনেক বেশি। সকল প্রক্রিয়া সঠিকভাবে সম্পন্ন করলে খুব সহজেই ভিসা পেয়ে যাবেন। ভিসার জন্য আবেদন করতে পারবেন অনলাইনেই। এছাড়া যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা, অস্ট্রেলিয়ার চেয়ে খরচ তুলনামূলকভাবে অনেক কম।
এর মধ্যে রোমানিয়া, ফ্রান্স, পর্তুগাল, সুইজারল্যান্ড, নেদারল্যান্ড, মালটা এই দেশগুলোতে আপনি অনেক কম খরচে যেতে পারবেন।
বাংলাদেশ থেকে রোমানিয়া যেতে সাধারণত মোট ৮ লাখ থেকে ৯ লাখ টাকা খরচ করতে হবে। ট্যুরিষ্ট ভিসা, ওয়ার্ক ভিসা সহ উচ্চ শিক্ষার জন্য কম খরচে ফ্রান্স যেতে পারবেন। মাত্র ৮ লাখ থেকে ১০ লাখ টাকা খরচ করে যেতে পারবেন পর্তুগাল। মাল্টা যেতে আপনার মোট খরচ এর পরিমান হবে, ৭ লাখ থেকে ১০ লাখ টাকা পর্যন্ত।