বাবার মৃত্যুর পর সংসারের হাল ধরেন মা। পরিবারে আয়ের উৎস বলতে একটি গাভি। সেই গাভির দুধ বিক্রির আয়ে চলে সংসার। মাকে সাহায্য করতে অন্যের বাড়িতে কাজ করে মেয়েটি। কাজের ফাঁকে ফাঁকে পড়ালেখা। তাতে নিয়মিত বিদ্যালয়েও যাওয়া হয়নি। সেই মেয়েটিই এবার এসএসসিতে জিপিএ ৫ পেয়েছে।
পিরোজপুরের ইন্দুরকানী উপজেলার চণ্ডীপুর গ্রামের মেয়েটির নাম হৈমন্তী রানী দত্ত। তার বাবার নাম শিশির রঞ্জন দত্ত, মায়ের নাম স্মৃতি রানী দত্ত। উপজেলার কলারণ চণ্ডীপুর আদর্শ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের মানবিক বিভাগ থেকে পরীক্ষা দেয় হৈমন্তী। বিদ্যালয়টি থেকে এবার ৭২ শিক্ষার্থী পরীক্ষায় অংশ নেয়। এর মধ্যে হৈমন্তী একাই জিপিএ ৫ পেয়ে বিদ্যালয়টি থেকে।
দিনাজপুর শিক্ষাবোর্ডে চলতি বছরের এসএসসি পরীক্ষায় আদিবাসী যমজ তিন ভাই-বোন পেয়েছেন জিপিএ-৫। তারা বিরামপুর পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ের এসএসসি পরীক্ষার্থী ছিলেন। যমজ তিন ভাই-বোন, ভাই লাসার সৌরভ মুর্মু, বোন মেরি মৌমিতা মুর্মু ও মারতা জেনিভিয়া মুর্মু।
বিরামপুর উপজেলার পলিপ্রয়াগপুর ইউনিয়নের চন্ডিপুর গ্রামের বাসিন্দা ।
প্রথম শ্রেণিতে পড়ার সময়ে বাসার তিনতলা সিঁড়ি থেকে পড়ে চিরদিনের জন্য চলৎশক্তি হারায় ইয়ামিনা বিনতে মাহমুদ। এরপর থেকে হুইলচেয়ারই তার সঙ্গী।
ইয়ামিনা এবার রাজধানীর উত্তরায় অবস্থিত মাইলস্টোন কলেজ থেকে এসএসসি পরীক্ষায় অংশ নিয়ে বিজ্ঞান বিভাগ থেকে জিপিএ-৫ পেয়েছে।
ঝালকাঠি সদর উপজেলার নথুল্লাবাদ ইউনিয়নের দিবাকরকাঠি গ্রামের প্রকৌশলী মাহামুদ হাসান সেলিমের একমাত্র মেয়ে ইয়ামিনা। বর্তমানে তারা কর্মক্ষেত্রের সুবাদে ঢাকায় বসবাস করেন। হুইলচেয়ারে বসেই অদম্য মেধার স্ফুরণ ঘটিয়েছে তার এই মেয়েটি।
রংপুর জেলা স্কুল থেকে মাধ্যমিক পরীক্ষায় অংশ নিয়েছিল আব্দুল্লাহ আল মামুন। শুক্রবার ফল প্রকাশের পর জানা যায় জিপিএ-৫ পেয়েছে সে।
দীর্ঘদিন ধরে রক্ত শূন্যতায় ভুগছিল মামুন। গতকাল বৃহস্পতিবার বিকেলে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যায় সে।
এ দিকে প্রিয় শিক্ষার্থীর মৃত্যুতে শোকার্ত রংপুর জিলা স্কুলে তার সহপাঠী, শিক্ষার্থী ও শিক্ষক-কর্মচারীরা। ফল প্রকাশের দিনে তাদের মনে নেই তেমন আনন্দ।
টাঙ্গাইল জেলার সখীপুরে একসঙ্গে এসএসসি পরীক্ষা দেওয়া তিন বোন পাস করেছে। সবার বড় বোন সুমাইয়া ইসলাম জিপিএ-৪.০০, মেজ বোন সাদিয়া ইসলাম জিপিএ-৪.৫৬ ও ছোট বোন রাদিয়া ইসলাম জিপিএ-৩.৯৮ পেয়েছে।
তারা সখীপুর পাইলট বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের মানবিক বিভাগ থেকে এবার এসএসসি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করেছিল।
শুক্রবার এসএসসি পরীক্ষার ফল বের হলে প্রধান শিক্ষক তাদের ফলাফলের এ তথ্য জানান। ওই তিন বোন সখীপুর পৌরসভার ৫ নম্বর ওয়ার্ডের বজু ফকিরের চালা এলাকার শফিকুল ইসলামের মেয়ে। ফলাফল পেয়ে দারুণ খুশি বলে জানায় তারা।