যারা একটু ঐতিহাসিক জায়গায় নিয়ে জব করতে চান বা বসবাস করতে চান তারা ইতালিকে বেছে নিতে পারেন। ইতালির জীবনমান যেমন উন্নত তেমনই দেশটিতে জব করে ভালো এমাউন্টের টাকা পাওয়া যায়।
তবে হ্যাঁ! ইতালিতে জব করার আগে আপনাকে নিশ্চিত করতে হবে ইতালি ওয়ার্ক পারমিট ভিসা। যা পেতে হলে কি কি করতে হবে এবং কতদিনে পাবেন সবকিছু জানতে আমাদের সাথেই থাকুন।
ইতালি ওয়ার্ক পারমিট ভিসা হলো ইতালিতে বৈধভাবে কাজ করার অনুমতি। যা আপনাকে ডকুমেন্ট আকারে দেওয়া হবে। এই ডকুমেন্টটি দেখিয়ে আপনি ইতালিতে কাজ করতে পারবেন, জব করতে পারবেন। ইতালিতে মূলত একটি আইন আছে। যাকে বলা হয় Decreto Flussi বা ফ্লো ডিক্রি।
এই আইন অনুসারে ইতালি ওয়ার্ক পারমিট ভিসা ছাড়া বাইরের কোনো ব্যাক্তি ইতালিতে জব করতে পারবে না। বলে রাখা ভালো এই ওয়ার্ক পারমিটের জন্য বার্ষিক হারে একটা এমাউন্ট কাটা হবে। নির্দিষ্ট সময়ের জন্য ইতালিতে বসবাস ও কাজ করার সুযোগ পেতে একটি ইতালি ওয়ার্ক পারমিট ভিসার গুরুত্বপূর্ণ অপরিসীম।
এবার আসি ইতালি ওয়ার্ক পারমিট ভিসা পাওয়ার উপায়ের ব্যাপারে। ইতালি ওয়ার্ক পারমিট ভিসা পেতে নিচের স্টেপগুলি ফলো করতে পারেন:
১. প্রথমে আপনার একজন ইতালীয় নিয়োগকর্তার কাছ থেকে চাকরির অফার পেতে হবে। এক্ষেত্রে অনলাইনে বিভিন্ন জব প্ল্যাটফর্ম চেক করতে পারেন। অনেক সময় বিভিন্ন জাতীয় পত্রিকাতেও এসব জব সার্কুলার দেওয়া থাকে।
২. আপনি যে নিয়োগকর্তার কাছ থেকে জব অফার পাবেন সেই নিয়োগকর্তাকে অবশ্যই ইতালির ইমিগ্রেশন অফিস থেকে অনুমোদন বা ইতালীয় ভাষায় নুলা ওস্তা পেতে হবে।
৩. নিয়োগকর্তা একবার নুলা অস্তা প্রাপ্ত হয়ে গেলে, আপনি বাংলাদেশে ইতালীয় দূতাবাস বা কনস্যুলেটে ইতালি ওয়ার্ক পারমিট ভিসার জন্য আবেদন করতে পারবেন।
৪. এবার ভিসা অফিসে ডকুমেন্টস হিসাবে চাকরির অফার পেপার, নুলা ওস্তা, পাসপোর্ট, আপনি যেখানে থাকেন তার প্রমাণ এবং অন্য যেকোনো প্রয়োজনীয় কাগজপত্র জমা দিন।
৫. ভিসা অফিসে বসে ইতালি ওয়ার্ক পারমিট ভিসার আবেদন ফরমটি ফিলআপ করুন এবং সব ডকুমেন্টস জমা দিয়ে অপেক্ষা করুন ভিসা অনুমোদন হওয়া পর্যন্ত। আশা করি সবকিছু ঠিক থাকলে আপনার ইতালি ওয়ার্ক পারমিট ভিসাটি অতিদ্রুত পেয়ে যাবেন।
যাদের ইতালি ওয়ার্ক পারমিট ভিসা ওখানে পাওয়াটা জরুরি হয়ে যাবে তারা ওয়ার্ক পারমিট ভিসার জন্য ইতালিতে আবেদন করার নিয়মটি জেনে নিতে পারেন:
একটি ইতালি ওয়ার্ক পারমিট ভিসার জন্য আপনাকে মোটামুটি ৩০ থেকে ৬০ দিনের মতো অপেক্ষা করতে হবে। হিসেব করলে এই সময়টুকু প্রায় ১ মাস বা ২ মাসের মতো গিয়ে দাঁড়ায়। যাদের তাড়া আছে তারা দ্রুত আবেদনপর্ব সেরে ফেলতে পারেন। আশা করি দ্রুত আপনার ইতালির ভিসাটি বের হয়ে যাবে।
এবার আসি সবচেয়ে কমন প্রশ্ন ইতালিতে গেলে কত টাকা লাগবে সে ব্যাপারে৷ ইতালির ফ্লাইটের টিকিটের খরচ পড়বে ৫০ থেকে ৬০ হাজার টাকার মতো। আর ভিসার দাম পড়তে পারে ৪/৫ লক্ষ টাকার মতো। শহর এবং জীবনযাত্রার উপর নির্ভর করে প্রাথমিক খরচ হিসাবে মাসে গুনতে হবে ২০/৩০ হাজার টাকা।
ইতালিতে প্রবাসী শ্রমিকদের বেতন ধরা হয় ১ লাখ ৪০ হাজার টাকার মতো। এক্ষেত্রে আপনাকে অবশ্যই অনেক বেশি দক্ষ হতে হবে এবং ভালো কাজ জানতে হবে। অন্যদিকে অন্যদিকে মিড লেভেল দক্ষ শ্রমিকেরা ইতালিতে ৮০ হাজার টাকার মতো মান্থলি ইনকাম করার সুযোগ পায়। তবে ইতালিতে প্রবাসী শ্রমিকদের নূন্যতম বেতন ৫০ হাজার টাকার উপরে।
বৈধ ভিসা বা ওয়ার্ক পারমিট ছাড়া ইতালিতে আপনি একদিনও কাজ করতে পারবেন না। এমনকি যখনই ইতালিতে আপনার ইতালি ওয়ার্ক পারমিট ভিসার মেয়াদ শেষ হয়ে যাবে তখন থেকেই আপনি দেশটিতে কাজ করার জন্য পুরোপুরি অবৈধ বলে ঘোষিত হবেন। এরপরও যদি কাজ করেন তাহলে আপনাকে জেলে যেতে হতে পারে।
সরকারিভাবে ইতালি যাওয়ার উপায় হিসাবে একজন ইতালীয় নিয়োগকর্তার কাছ থেকে কোনোমতে ভালো একটি জব অফার জুটিয়ে নিতে পারেন। এরপর বাংলাদেশে ইতালীয় দূতাবাসে একটি সম্পূর্ণ ভিসার জন্য আবেদন জমা দিন। একবার আপনার ভিসা পারমিটেড হয়ে গেলে সরকারিভাবেই যাওয়ার সুযোগ পাবেন যদি না আপনার জব বা সেক্টর সরকারি হয়।