কুরিয়ার সার্ভিসের মাধ্যমে প্রবাসীদের মালামাল পাঠানোর নামে কোটি টাকা প্রতারণার

প্রবাস প্রতিদিন
আপডেটঃ : মঙ্গলবার, ২৫ জুলাই, ২০২৩
অভিযুক্তের ছবি হাতে সংবাদ সম্মেলনে মালয়েশিয়া প্রবাসীরা।

কুরিয়ার সার্ভিসের মাধ্যমে প্রবাসীদের মালামাল পাঠানোর নামে ২৫-৩০ কোটি টাকা প্রতারণার অভিযোগ উঠেছে আসরি বিন হামিদ এন্টারপ্রাইজ নামের একটি প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে। এরইমধ্যে প্রতিষ্ঠানটির অফিসসহ মালয়েশিয়ান মালিক পাশা খান ও বাংলাদেশী মালিক বাবলু আত্নগোপনে চলে গেছেন।

রোববার (২৩ জুলাই) বিকেলে মালামাল ফেরত পেতে কুয়ালালামপুরের বুকিতবিনতাং এর পিঠাঘরে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব অভিযোগ করেন শতাধিক প্রবাসী।

সংবাদ সম্মেলনে ওই এজেন্টের মালিকসহ চালান কপি নিয়ে প্রবাসীরা তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করে তাদের মালামাল ফেরত পেতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ কামনা করেন।

জানা গেছে, মালয়েশিয়াস্থ বাংলাদেশ প্রবাসীদের স্বজনদের জন্য বিভিন্ন উপহার ও মালামাল নিজ দেশে পাঠাতে কুয়ালালামপুরের মাইডিনে আসরি বিন হামিদ এন্টারপ্রাইজ নামে বিমানের কার্গোর এজেন্টকে প্রায় তিনটি কন্টেইনারে কোটি কোটি টাকার মালামাল বুকিং দেন কয়েকশ প্রবাসী। দীর্ঘ ছয় মাস অতিবাহিত হলেও তাদের পাঠানো মালামালের কোন হদিস নেই।

মালামাল হারিয়ে প্রবাসীরা ইতোমধ্যে স্থানীয় থানায় আলাদা আলাদা করে শতাধিক মামলা করেছে। এ বিষয়ে কুয়ালালামপুর বাংলাদেশ হাইকমিশনেও অভিযোগ দিয়েছে ভুক্তভোগীরা।

ভুক্তভোগীদের পক্ষে মালয়েশিয়া প্রবাসী জাহাঙ্গীর হাওলাদার ‘আসরি বিন হামিদ এন্টারপ্রাইজ’-এর পাশা খানের প্রতারণার কথা বলতে গিয়ে কান্নায় ভেঙ্গে পড়েন।

তিনি বলেন, আমি পাঁচ বছর ধরে দেশে যেতে পারি না তাই নিজেই পাঁচ লাখ টাকার মালামাল পাঠিয়েছি। আমরা প্রবাসীরা মাথার ঘাম পায়ে ফেলে অর্থ উপার্জন করে দেশে থাকা মা-বাবা ও স্বজনদের জন্য মালামাল পাঠিয়েছি। আমার মতো কয়েকশ প্রবাসী আনুমানিক ২৫-৩০ কোটি টাকার মালামাল এই কার্গো এজেন্টের মাধ্যমে পাঠিয়েছি। আমরা ছয় মাস ধরে দ্বারে দ্বারে ঘুরছি কিন্তু কোনো সমাধান পাচ্ছি না। বাংলাদেশ সরকারের কাছে আবেদন, আমাদের মালামাল ফেরত পাওয়ার জন্য দয়া করে ব্যবস্থা গ্রহণ করুন।

এ বিষয়ে অভিযুক্ত মো. পাশা খানের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, আমার আসরি বিন হামিদ এন্টারপ্রাইজ-এ ১০ ভাগ শেয়ার আছে। এই কার্গো এজেন্টের মূল মালিক মালয়েশিয়ান নাগরিক হামিদ ও বাংলাদেশি প্রবাসী মো. বাবলু ও মো. সাব্বির।

প্রবাসীদের মালামালের ব্যাপারে জানতে চাইলে তিনি বলেন, দুটি কন্টেইনারে প্রবাসীদের মালামাল দেশে পাঠানো হয়েছে। এ কথা সত্য। কিন্তু এসব কন্টেইনারে বৈধ মালামালের সঙ্গে অবৈধ মালামাল থাকায় বাংলাদেশ কাস্টমস কর্তৃপক্ষ এগুলো আটক করে মামলা করেছে।

পাশা খান বলেন, আমাকে মালয়েশিয়ান হামিদ ও বাংলাদেশি বাবলু অনুরোধ করেন যে টিকটকে প্রচার করার জন্য যে কম খরচে দেশে মালামাল পাঠানো যায়। তাই আমি সেটা আমার টিকটক আইডিতে প্রচার করি যার ফলে এখন প্রবাসীরা আমাকে দোষারোপ করে আমাকে চাপ দিচ্ছেন।

তিনি আরও বলেন, আমি আত্মাগোপনে নই। সবার সঙ্গে যোগাযোগ করছি। কাস্টমসে যে মামলা হয়েছে এ ব্যাপারে লোক নিয়োগ করা হয়েছে। মামলা সমাধান করে সব প্রবাসীদের মালামাল তাদের ঠিকানায় পৌছে দেওয়া হবে।

সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন শতাধিক প্রবাসীসহ মালয়েশিয়ায় কর্মরত বাংলাদেশের বিভিন্ন প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিকস মিডিয়ার সাংবাদিকরা।

সূত্র কাল বেলা


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই ক্যাটাগরির আরো নিউজ