আমাদের মধ্যে অনেকেই তো বিদেশে স্যাটেলমেন্টের কথা ভাবি। স্বপ্ন দেখি বাইরের দেশে নিজেকে স্টাবলিশ করবো। তো স্বপ্ন পূরণে প্রায় সবারই ফার্স্ট প্রায়োরিটি থাকে গাড়িতে। কিন্তু আপনি চাইলেই কি বিদেশে গাড়ি কিনতে পারবেন? চলুন, আজকের আর্টিকেলে জেনে নিই বিদেশে গাড়ি কেনার নিয়ম সম্পর্কে। আর দেখে আসি বিদেশে গড়ি কেনার নিয়মের A to Z.
আমরা বাঙালিরা ঠিক এই জায়গাতেই গরমিল করি। প্রথমেই আপনাকে জানতে হবে আপনার গাড়ির ট্রয়োজন আসলেই আছে কি না। অনেকেই গাড়ি কেনে সামাজিক স্ট্যাটাস দেখানোর জন্য। কিন্তু বিদেশে? সেখানে গাড়ি মানেই কিন্তু দায়িত্ব, প্রচুর খরচ, আর সময়মত MOT করানো! তাই সবদিক বিবেচনা করেই বিদেশে গাড়ি কেনার সিদ্ধান্ত নিবেন।
বিদেশে গাড়ি কেনার নিয়মে প্রথমেই থাকবে requiered documents. এই ডকুমেন্টসসমূহ হলো
বৈধ ড্রাইভিং লাইসেন্স যার দেশভেদে নিয়ম আলাদা। বেশকিছু দেশ ইন্টারন্যাশনাল ড্রাইভিং পারমিট (IDP) দিলেও বেশিরভাগ দেশ এই সুবিধা দেয় না।
তারপরই দরকার হবে ইনসুরেন্স। বিদেশের মাটিতে ইন্সুরেন্স ছাড়া গাড়ি চালানো মানেই নিজের পায়ে নিজেই কুড়াল মারা। তাছাগা ইন্সুরেন্স না থাকলে কঠোর শাস্তির মুখোমুখি হতে হয়। এর পরই দরকার হবে ঠিকানা ও পরিচয়পত্রের।
বিদেশে গাড়ি কেনার নিয়মের মধ্যে অন্যতম হলো গাড়ি কিনতে হলে আপনাকে প্রমাণ করতে হবে আপনি ঐ দেশে বসবাস করেন।
ব্যাংক স্টেটমেন্ট, বিল বা রেন্ট এগ্রিমেন্টও লাগতে পারে। এরপরই খেয়াল রাখবেন ফিনান্স বা ক্যাশের ব্যাপারটা। সবসময় বিদেশে গাড়ি ক্যাশ টাকা দিয়ে কিনতে চেষ্টা করবেন। এতে ঝামেলা অনেক কম।
তবে অনেকেই ফিনান্সের মাধ্যমে ১২-৬০ মাসে EMI দিয়েও গাড়ি কিনে থাকেন। এক্ষেত্রে সুদের হার, ডিপোজিট ও মাসিক কিস্তির হিসাব আগে ভালোভাবে বুঝে নিতে হবে।
এটি সম্পূর্ণভাবে আপনার ওপর নির্ভরশীল। তবে বিদেশে ভালো কন্ডিশনের ২-৫ বছর পুরানো গাড়ি কিনলে অনেক সাশ্রয়মূল্যে কেনা যায়।
বিদেশে গাড়ি কেনার নিয়ম একেক দেশে একেক রকম। তবে কিছু দেশের নিয়ম সম্পর্কে আমরা আলোচনা করবো।
প্রথমেই আমেরিকার নিয়ম সম্পর্কে জানা যাক। আমেরিকায় গাগি কিনতে প্রথমে।DMV বা Department of Motor Vehicles থেকে রেজিস্ট্রেশন করতে হয়। তাছাড়া গাড়ি কেনার সময়
Sales Tax ও দিতে হয়।
কানাডায় একজন বিদেশী হিসেবে গাড়ি কিনতে হলে আপনাকে ICBC বা Service Ontario এর মতো প্রাদেশিক অফিসে গাড়ি রেজিস্ট্রেশন করতে হবে এবং গাড়ি কেনার সময় ইন্সুইরেন্স থাকা আবশ্যক।
যুক্তরাজ্য বা ইংল্যান্ডে একটা গাড়ি কিনতে আপনাকে V5C লগবুক ট্রান্সফার অর্থ্যাৎ গাড়ির মালিকানা প্রথমেই নিশ্চিত করতে হবে। তাছাড়াও MOT পরীক্ষা করানোও বাধ্যতামূলক।
অস্ট্রেলিয়ায় গাড়ি কিনতেও আপনার অস্ট্রেলিয়ান Roadworthy Certificate দরকার হবে এবং এক্ষেত্রে ইন্সুইরেন্স একাউন্ট বাধ্যতামূলক।
এছাড়াও বিশ্বের বিভিন্ন দেশে গাড়ি কিনতে ওই দেশের নিজস্ব কিছু নিয়ম আপনাকে ফলো করতে হবে।
বিদেশে গাড়ি কেনার নিয়মসমূহের মধ্যে অন্যতম হলো খরচের প্রোপার একটা হিসাব করা। কারণ বিদেশে শুধু গাড়ির দামই সব না! গাড়ির প্রোপার মেইনটেইনেন্স, বিভিন্ন জরিমানা এবং ড্রাইভিং রুলস সম্পর্কে আপনার ক্লিয়ার আইডিয়া থাকতে হবে।
ইউসড গাড়ি কেনার ক্ষেত্রে গাড়ির ইতিহাস জানার জন্য autocheck টুলসটি আপনি ব্যবহার করতে পারেন। তাছাড়াও গাগির বাজার মূল্য বুঝতে Kelley Blue Book বা Edmunds, সস্তায় ইন্সুইরেন্স একাউন্ট খুজতে Insurance Comparison Websites ব্যবহার করতে পারেন।
বিদেশে গাগি তেনার নিয়মের মধ্যে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ নিয়ম হলো সাবধানতা। বিদেশে একটা গাগি কেনার সময় মাস্টবি গাড়ির আসল মালিকের কাছ থেকে ক্লিয়ার পেপারস সহ গাড়ি কিনবেন। আর এসব কাজে যতোটা সম্ভব অনলাইন মাধ্যম এভয়েড করার চেষ্টা করবেন।
বিদেশে গাড়ি কেনার পর প্রথমেই গাড়ির নাম নিজের নামে রেজিস্টার করুন, ইনসুরেন্স অ্যাকটিভেট করুন,ইমার্জেন্সি কিট সাথে রাখুন, ট্রাফিক আইন সম্পর্কে ভালোভাবে জেনে নিন এবং অবশ্যই ড্রাইভিংয়ের আগে নেভিগেশন সেট করুন।
গাড়ি মানেই স্বাধীনতা! কিন্তু সবসময় মাথায় রাখবেন আপনি বিদেশে গাড়ি কিনেছেন। তাই সহজে এবং নিরাপদে নিজের স্বপ্ন পূরণের চেষ্টা করুন। আশা করি আজকের আর্টিকেলের মাধ্যমে আপনি বিদেশে গাড়ি কেনার নিয়ম সম্পর্কে প্রোপার এবং ক্লিয়ার একটা ধারণা পেয়েছেন। তাই আর দেরি না করে নিজের স্বপ্ন পূরণে আজই লেগে পড়ুন।