বাংলাদেশে যারা পলিটেকনিক থেকে পড়াশোনা করছেন তারা কিন্তু চাইলেই বিদেশে পলিটেকনিক থেকে স্কলারশিপ করতে পারেন। এই স্কলারশিপে ফি লাগতে পারে আবার ফ্রিও হতে পারে। আর সবচেয়ে বড় কথা হলো এই ধরণের স্কলারশিপ করার পর চাকরির বাজারে নিজের অনেক চাহিদা বেড়ে যায়। যা বড় বড় পোস্ট কিংবা ভালো বেতনের চাকরি পাওয়ার পথ সহজ করে। আসুন তবে আজ পলিটেকনিক থেকে স্কলারশিপ করার ব্যাপারে বিস্তারিত আলোচনা করা যাক।
শুরুতেই চলুন পলিটেকনিক থেকে স্কলারশিপ করার কারণ সম্পর্কে আলোচনা করা যাক। যেহেতু আপনি টেকনোলজি সেক্টরে পড়াশোনা করছেন সেহেতু বাইরর পড়তে পারলে নিজেকে আরো এডভান্স লেভেলে নিয়ে যাওয়া খুব একটা কঠিন মনে হবে না। তাছাড়া:
১. ইন্টারন্যাশনাল এক্সপেরিয়েন্স তৈরির সুযোগ থাকছে। বিদেশে পড়াশোনা করলে আপনি বিভাব টেকনোলজিতে যথেষ্ট এক্সপার্ট হয়ে উঠবেন। যা আপনাকে অন্যদের চাইতে এগিয়ে রাখবে।
২. বিদেশের অনেক দেশ উন্নত প্রযুক্তি, শিক্ষা ব্যবস্থা এবং গবেষণা বা রিসার্চের সুযোগ থাকে। যা আমাদের দেশে খুব কমই পাবেন।
৩. বিদেশে পড়াশোনার পর আন্তর্জাতিকভাবে আপনি জব খুঁজতে পারেন। বিদেশের পরিবেশে চাকরি খুঁজতে পারলে অভিজ্ঞতা এবং পড়াশোনার কারণে দেখবেন আপনি দ্রুত ইন্টারন্যাশনাল কোম্পানিতে ভালো জব পেয়ে গেছেন।
পলিটেকনিক থেকে স্কলারশিপের কিন্তু বিভিন্ন ধরণও আছে। যা খরচ, কোর্স কিংবা পরিচালনার উপর নির্ভর করে। আসুন তবে পলিটেকনিক থেকে স্কলারশিপ এর ধরণ সম্পর্কে কথা বলি:
সরকার স্কলারশিপ: অনেক দেশ সরকারিভাবে পলিটেকনিক থেকে স্কলারশিপ এর ব্যবস্থা করে থাকে। এই ধরণের স্কলারশিপে টিউশন, যাতায়াত খরচ এবং থাকা-খাওয়ার কোনো খরচ পরিশোধ করতে হয় না। যেমন:
বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে স্কলারশিপ: অনেক বিদেশি বিশ্ববিদ্যালয় তাদের নিজস্ব স্কলারশিপ প্রোগ্রামের ব্যবস্থা করে থাকে। আপনি চাইলে সেসব স্কলারশিপের জন্যেও আবেদন করতে পারেন। হালকা টিউশন ফি মওকুফ এবং মাঝে মাঝে বিভাব ভাতার ব্যবস্থা করা হয় এসব স্কলারশিপে। যেমন:
পার্সোনাল এবং কর্পোরেট স্কলারশিপ: পার্সোনাল এবং কর্পোরেট স্কলারশিপের ক্ষেত্নে কিন্তু শুধুমাত্র বাংলাদেশীদের জন্যেই সুযোগ থাকে। যেহেতু কম্পিটিশন কম সেহেতু আপনি এটিও ট্রাই করতে পারেন। যেমন ধরুন:
এনজিও এবং ফাউন্ডেশন স্কলারশিপ: যারা ফ্রিতে কিংবা কম খরচে ভালো স্কলারশিপ পেতে চান তারা বিভিন্ন এনজিও এবং ফাউন্ডেশন স্কলারশিপ এর জন্য আবেদন করতে পারেন৷ এই ধরণের স্কলারশিপ মূলত অস্বচ্ছল পরিবার থেকে আসা স্টুডেন্টদের জন্য ব্যবস্থা করা হয়ে থাকে। যেমন:
এবার চলুন পলিটেকনিক থেকে স্কলারশিপের যোগ্যতা সম্পর্কে আলোচনা করা যাক:
১. অধিকাংশ স্কলারশিপের জন্য আপনাকে অবশ্যই পলিটেকনিক ডিপ্লোমা কোর্স কমপ্লিট করতে হবে। এক্ষেত্রে ৩ বছর সময় লাগতে পারে।
২. সাধারণত ৩.০ বা তার উপরের GPA থাকলে আপনি আবেদন করতে পারবেন।
৩. ইংরেজি ভাষার দক্ষতা হিসাবে আপনার ল্যাংগুয়েজ টেস্ট দিতে হবে। এক্ষেত্রে TOEFL (Test of English as a Foreign Language) অথবা IELTS (International English Language Testing System) যেকোনো একটি বেছে নিতে পারেন।
৪. পোস্টগ্র্যাজুয়েট স্কলারশিপের জন্য যারা আবেদন করবেন তাদের মাঝেমধ্যে নির্দিষ্ট ক্ষেত্রে কাজের অভিজ্ঞতারও দরকার পড়তে পারে। তবে এটা সবসময় আবশ্যক নয়।
৫. পার্সোনাল স্টেটমেন্ট বা স্টেটমেন্ট অফ পারপাস
পার্সোনাল স্টেটমেন্ট বা স্টেটমেন্ট অফ পারপাস হচ্ছে একটা পেপার্স যেখানে লেখা থাকবে আপনার শিক্ষার উদ্দেশ্য, ক্যারিয়ার লক্ষ্য এবং স্কলারশিপ কেনো দরকার সে-সম্পর্কিত তথ্য। কিছু কিছু বিশ্ববিদ্যালয়ে আবেদন করার ক্ষেত্রে এই পার্সোনাল স্টেটমেন্ট বা স্টেটমেন্ট অফ পারপাসের দরকার না পড়লেও বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই এটি লাগতে পারে।
৬. রেকমেন্ডেশন লেটার
যারা পলিটেকনিক থেকে স্কলারশিপের জন্য আবেদন করতে চান তাদের দুইটি বা তার বেশি রেকমেন্ডেশন লেটার লাগতে পারে। আর এই রেকমেন্ডেশন লেটার আপনি আপনার প্রতিষ্ঠানের কোনো অধ্যাপক কিংবা কোনো প্রতিষ্ঠানের সুপারভাইজার থেকে কালেক্ট করে নিতে পারবেন।
আশা করি যারা পলিটেকনিক থেকে স্কলারশিপের জন্য আবেদন করতে চান তারা টুকটাক আইডিয়া পেয়ে গেছেন। আপাতত যাদের টিউশন ফি সহ স্কলারশিপের খরচ কভার করা সম্ভব না তারা বিভিন্ন দেশের সরকার, বিশ্ববিদ্যালয় এবং অন্যান্য প্রতিষ্ঠানের আন্ডারে থাকা ফ্রি স্কলারশিপগুলির জন্যে আবেদন করতে পারেন৷ এক্ষেত্রে ফুল কিংবা হাফ ফ্রি স্কলারশিপ পাওয়াটা সহজ হয়ে যাবে।