শিরোনাম:
কম খরচে বাই রোডে পাকিস্তান ভ্রমণ করবেন যেভাবে দাগনভূঞা গাউছিয়া আহমদিয়া আমিনিয়া সুন্নিয়া মাদ্রাসায় সবক অনুষ্ঠান ২০২৫ইং অনুষ্ঠিত সন্তানদের শিক্ষিত করে মা বাবা নিঃসঙ্গ নেপালের দর্শনীয় স্থান | নেপাল ভ্রমণের উপযুক্ত সময় | বাংলাদেশ টু নেপাল বিমান ভাড়া ঘরে বসে দালাল ছাড়াই কানাডা ভিসা আবেদন করার নিয়ম কানাডা যাওয়ার সহজ উপায়: না পড়লে চরম মিস যেভাবে টোফেল প্রিপারেশন নিলে স্কলারশিপ নিশ্চিত  জাপানের ১০টি দর্শনীয় স্থান: কম খরচে ঘুরে আসুন জাপান  উচ্চ শিক্ষায় ফেলোশিপ কি: জানুন বিস্তারিত বাংলাদেশ থেকে জাপানে কিভাবে ফ্রি স্কলারশিপ পাওয়া যায়: যেখানে পড়তে লাগবে না কোনো টাকা

পলিটেকনিক থেকে স্কলারশিপ করার এ টু জেট গাইডলাইন

প্রবাস প্রতিদিন
আপডেটঃ : মঙ্গলবার, ২৬ নভেম্বর, ২০২৪

 

বাংলাদেশে যারা পলিটেকনিক থেকে পড়াশোনা করছেন তারা কিন্তু চাইলেই বিদেশে পলিটেকনিক থেকে স্কলারশিপ করতে পারেন। এই স্কলারশিপে ফি লাগতে পারে আবার ফ্রিও হতে পারে। আর সবচেয়ে বড় কথা হলো এই ধরণের স্কলারশিপ করার পর চাকরির বাজারে নিজের অনেক চাহিদা বেড়ে যায়। যা বড় বড় পোস্ট কিংবা ভালো বেতনের চাকরি পাওয়ার পথ সহজ করে। আসুন তবে আজ পলিটেকনিক থেকে স্কলারশিপ করার ব্যাপারে বিস্তারিত আলোচনা করা যাক। 

 

কেন পলিটেকনিক স্টুডেন্টদের বিদেশে পড়াশোনা করা উচিত?

শুরুতেই চলুন পলিটেকনিক থেকে স্কলারশিপ করার কারণ সম্পর্কে আলোচনা করা যাক। যেহেতু আপনি টেকনোলজি সেক্টরে পড়াশোনা করছেন সেহেতু বাইরর পড়তে পারলে নিজেকে আরো এডভান্স লেভেলে নিয়ে যাওয়া খুব একটা কঠিন মনে হবে না। তাছাড়া: 

 

১. ইন্টারন্যাশনাল এক্সপেরিয়েন্স তৈরির সুযোগ থাকছে। বিদেশে পড়াশোনা করলে আপনি বিভাব টেকনোলজিতে যথেষ্ট এক্সপার্ট হয়ে উঠবেন। যা আপনাকে অন্যদের চাইতে এগিয়ে রাখবে। 

 

২. বিদেশের অনেক দেশ উন্নত প্রযুক্তি, শিক্ষা ব্যবস্থা এবং গবেষণা বা রিসার্চের সুযোগ থাকে। যা আমাদের দেশে খুব কমই পাবেন। 

 

৩. বিদেশে পড়াশোনার পর আন্তর্জাতিকভাবে আপনি জব খুঁজতে পারেন। বিদেশের পরিবেশে চাকরি খুঁজতে পারলে অভিজ্ঞতা এবং পড়াশোনার কারণে দেখবেন আপনি দ্রুত ইন্টারন্যাশনাল কোম্পানিতে ভালো জব পেয়ে গেছেন। 

 

পলিটেকনিক থেকে স্কলারশিপ এর ধরণ

পলিটেকনিক থেকে স্কলারশিপের কিন্তু বিভিন্ন ধরণও আছে। যা খরচ, কোর্স কিংবা পরিচালনার উপর নির্ভর করে। আসুন তবে পলিটেকনিক থেকে স্কলারশিপ এর ধরণ সম্পর্কে কথা বলি: 

 

সরকার স্কলারশিপ: অনেক দেশ সরকারিভাবে পলিটেকনিক থেকে স্কলারশিপ এর ব্যবস্থা করে থাকে। এই ধরণের স্কলারশিপে টিউশন, যাতায়াত খরচ এবং থাকা-খাওয়ার কোনো খরচ পরিশোধ করতে হয় না। যেমন: 

 

  • অস্ট্রেলিয়া অ্যাওয়ার্ডস: অস্ট্রেলিয়া অ্যাওয়ার্ডস হলো অস্ট্রেলিয়ান সরকারের একটি স্কলারশিপ। বাংলাদেশের মতো উন্নয়নশীল দেশের স্টুডেন্টরা এই স্কলারশিপের সুযোগ পেয়ে থাকে। টিউশন ফি, থাকা-খাওয়ার খরচ এবং যাতায়াত খরচসহ সবকিছুই কতৃপক্ষ বহণ করে। 

 

  • চিভেনিং স্কলারশিপ (যুক্তরাজ্য): যুক্তরাজ্য সরকারের এই স্কলারশিপ, যেকোনো বিষয়ে মাস্টার্স প্রোগ্রামের জন্য দেওয়া হয়ে থাকে। 

 

  • MEXT (মনবুকাগাকুশো) স্কলারশিপ: এটি জাপানের সরকারি একটি স্কলারশিপ। যেখানে আপনাকে কোনো টিউশন ফি, থাকা-খাওয়ার খরচ এবং যাতায়াত খরচ বহন করতে হবে না। 

 

বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে স্কলারশিপ: অনেক বিদেশি বিশ্ববিদ্যালয় তাদের নিজস্ব স্কলারশিপ প্রোগ্রামের ব্যবস্থা করে থাকে। আপনি চাইলে সেসব স্কলারশিপের জন্যেও আবেদন করতে পারেন। হালকা টিউশন ফি মওকুফ এবং মাঝে মাঝে বিভাব ভাতার ব্যবস্থা করা হয় এসব স্কলারশিপে। যেমন: 

 

  • University of Melbourne Scholarships (অস্ট্রেলিয়া): অস্ট্রেলিয়ার মেলবোর্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে আপনি চাইলে ইঞ্জিনিয়ারিং এবং অন্যান্য প্রযুক্তিগত বিষয়ে স্কলারশিপ করতে পারেন৷ 

 

  • Singapore Polytechnic Scholarships (সিঙ্গাপুর): সিঙ্গাপুরের পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট আন্তর্জাতিকভাবে কিন্তু বেশ জনপ্রিয়। পলিটেকনিক থেকে স্কলারশিপ করতে চাইলে আপনি এই বিশ্ববিদ্যালয়টিকেও টার্গেট করতে পারেন। 

 

  • Technical University of Munich Scholarships (জার্মানি): এই বিশ্ববিদ্যালয় বিশ্বের অন্যতম শীর্ষস্থানীয় টেকনিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়। বিশেষ করে ইঞ্জিনিয়ারিং প্রোগ্রামের জন্য এখানকার সুযোগসুবিধা দেখার মতো। 

 

পার্সোনাল এবং কর্পোরেট স্কলারশিপ: পার্সোনাল এবং কর্পোরেট স্কলারশিপের ক্ষেত্নে কিন্তু শুধুমাত্র বাংলাদেশীদের জন্যেই সুযোগ থাকে। যেহেতু কম্পিটিশন কম সেহেতু আপনি এটিও ট্রাই করতে পারেন। যেমন ধরুন: 

 

  • Tata Scholarship (ভারত): ভারতের টাটা ফাউন্ডেশন মূলত বাংলাদেশী স্টুডেন্টদের জন্য এই স্কলারশিপের ব্যবস্থা করে দিয়েছে। 

 

  • Huawei Scholarship Program: হুয়াওয়ে প্রতিষ্ঠান তাদের জন্যই মূলত এই স্কলারশিপের ব্যবস্থা করে যারা ICT এবং টেলিকমিউনিকেশনের উপর ইঞ্জিনিয়ারিং কমপ্লিট করতে ইচ্ছুক। 

 

  • The Aga Khan Foundation International Scholarship Program: সবশেষে আगा খান ফাউন্ডেশন কাজ করে শুধুমাত্র পোস্টগ্র্যাজুয়েট শিক্ষার্থীদের জন্য জন্য। 

 

এনজিও এবং ফাউন্ডেশন স্কলারশিপ: যারা ফ্রিতে কিংবা কম খরচে ভালো স্কলারশিপ পেতে চান তারা বিভিন্ন এনজিও এবং ফাউন্ডেশন স্কলারশিপ এর জন্য আবেদন করতে পারেন৷ এই ধরণের স্কলারশিপ মূলত অস্বচ্ছল পরিবার থেকে আসা স্টুডেন্টদের জন্য ব্যবস্থা করা হয়ে থাকে। যেমন:

 

  • UNESCO Scholarships: ইউনেস্কো স্কলারশিপ বাংলাদেশের মতো উন্নয়নশীল দেশের স্টুডেন্টদের জন্য। বিশেষ করে পলিটেকনিক স্টুডেন্টদের জন্য এই স্কলারশিপের ব্যবস্থা করা হয়। 

 

  • The Ford Foundation Fellowship: এটিও এই দেশের মতো উন্নয়নশীল দেশের স্টুডেন্টদের জন্য প্রযোজ্য। সুতরাং আপনিও চাইলে আবেদন করতে পারেন৷ 

 

পলিটেকনিক থেকে স্কলারশিপের যোগ্যতা

এবার চলুন পলিটেকনিক থেকে স্কলারশিপের যোগ্যতা সম্পর্কে আলোচনা করা যাক:

 

১. অধিকাংশ স্কলারশিপের জন্য আপনাকে অবশ্যই পলিটেকনিক ডিপ্লোমা কোর্স কমপ্লিট করতে হবে। এক্ষেত্রে ৩ বছর সময় লাগতে পারে। 

 

২. সাধারণত ৩.০ বা তার উপরের GPA থাকলে আপনি আবেদন করতে পারবেন। 

 

৩. ইংরেজি ভাষার দক্ষতা হিসাবে আপনার ল্যাংগুয়েজ টেস্ট দিতে হবে। এক্ষেত্রে TOEFL (Test of English as a Foreign Language) অথবা IELTS (International English Language Testing System) যেকোনো একটি বেছে নিতে পারেন। 

 

৪. পোস্টগ্র্যাজুয়েট স্কলারশিপের জন্য যারা আবেদন করবেন তাদের মাঝেমধ্যে নির্দিষ্ট ক্ষেত্রে কাজের অভিজ্ঞতারও দরকার পড়তে পারে। তবে এটা সবসময় আবশ্যক নয়।

 

৫. পার্সোনাল স্টেটমেন্ট বা স্টেটমেন্ট অফ পারপাস

পার্সোনাল স্টেটমেন্ট বা স্টেটমেন্ট অফ পারপাস হচ্ছে একটা পেপার্স যেখানে লেখা থাকবে আপনার শিক্ষার উদ্দেশ্য, ক্যারিয়ার লক্ষ্য এবং স্কলারশিপ কেনো দরকার সে-সম্পর্কিত তথ্য। কিছু কিছু বিশ্ববিদ্যালয়ে আবেদন করার ক্ষেত্রে এই পার্সোনাল স্টেটমেন্ট বা স্টেটমেন্ট অফ পারপাসের দরকার না পড়লেও বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই এটি লাগতে পারে। 

 

৬. রেকমেন্ডেশন লেটার

যারা পলিটেকনিক থেকে স্কলারশিপের জন্য আবেদন করতে চান তাদের দুইটি বা তার বেশি রেকমেন্ডেশন লেটার লাগতে পারে। আর এই রেকমেন্ডেশন লেটার আপনি আপনার প্রতিষ্ঠানের কোনো অধ্যাপক কিংবা কোনো প্রতিষ্ঠানের সুপারভাইজার থেকে কালেক্ট করে নিতে পারবেন। 

 

পলিটেকনিক থেকে স্কলারশিপের জন্য আবেদন কিভাবে করবেন? 

  • Scholarships.com বা Fastweb ওয়েবসাইটে স্কলারশিপের খোঁজ করুন
  • অফিসিয়াল ওয়েবসাইট থেকে স্কলারশিপের উপর রিসার্চ করুন
  • নির্দিষ্ট কিছু ডকুমেন্ট রেডি করে নিন
  • স্কলারশিপের আবেদন ফর্ম পূরণ করুন
  • ডেডলাইনের আগে আবেদন জমা দিন
  • স্কলারশিপের জন্য নির্বাচিত হলে ইন্টারভিউয়ের জন্য প্রস্তুতি নিন
  • আবেদন জমা দেওয়ার পর রেজাল্টের জন্য অপেক্ষা করুন

আশা করি যারা পলিটেকনিক থেকে স্কলারশিপের জন্য আবেদন করতে চান তারা টুকটাক আইডিয়া পেয়ে গেছেন। আপাতত যাদের টিউশন ফি সহ স্কলারশিপের খরচ কভার করা সম্ভব না তারা বিভিন্ন দেশের সরকার, বিশ্ববিদ্যালয় এবং অন্যান্য প্রতিষ্ঠানের আন্ডারে থাকা ফ্রি স্কলারশিপগুলির জন্যে আবেদন করতে পারেন৷ এক্ষেত্রে ফুল কিংবা হাফ ফ্রি স্কলারশিপ পাওয়াটা সহজ হয়ে যাবে। 


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই ক্যাটাগরির আরো নিউজ