জাপান ওয়ার্ক পারমিট ভিসা ২০২৪ ও জাপানের ভিসার দাম

প্রবাস প্রতিদিন
আপডেটঃ : বৃহস্পতিবার, ২৭ জুন, ২০২৪
জাপান ওয়ার্ক পারমিট ভিসা
জাপান ওয়ার্ক পারমিট ভিসা

যারা অনেক বেশি টেকনোলজি পছন্দ করে এবং পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন দেশে বাকিটা জীবন কাটাতে চায় তাদের জন্যে জাপান হতে পারে পার্ফেক্ট অপশন। 

 

জাপান ওয়ার্ক পারমিট ভিসা নিয়ে আপনিও চাইলে এই সুন্দর দেশটি থেকে জীবিকা নির্বাহ করতে পারেন। চলুন তবে আজ জাপান ওয়ার্ক পারমিট ভিসা ২০২৪ ও জাপানের ভিসার দামসহ প্রয়োজনীয় সকল তথ্য জেনে নিই। 

 

জাপান ওয়ার্ক পারমিট ভিসা ২০২৪

শুরুতে আলোচনা করবো জাপান ওয়ার্ক পারমিট ভিসা ২০২৪ সম্পর্কে। আপনি জানেন কিনা জানি, তবে বাংলাদেশ থেকে বর্তমানে অনেক মানুষ জাপানে গিয়ে কাজ করতে আগ্রহী। 

 

আপনিও যদি এসব স্বপ্নবাজদের মতো জাপানে থেকে নিজের জীবিকা নির্বাহ করতে চান বা জাপানে কাজ করতে চান সেক্ষেত্রে আপনার একটি ওয়ার্ক পারমিট ভিসা প্রয়োজন। 

 

বলে রাখা ভালো এই ২০২৪ সালে এসে কিন্তু জাপান ওয়ার্ক পারমিট ভিসা ২০২৪ প্রসেসিং অনেকটাই সহজ হয়ে উঠেছে৷ কিছু সহজ নিয়ম ও শর্তাবলী মেনে চলতে পারলেই আপনি এই জাপান ওয়ার্ক পারমিট ভিসার জন্য আবেদন করতে পারবেন। 

 

জাপান কাজের ভিসা

জাপান ওয়ার্ক পারমিট ভিসা ২০২৪ সম্পর্কে আরেকটু ডিটেইলসে যাওয়ার আগে জাপান কাজের ভিসা নিয়ে আপনাদের কিছু তথ্য জানিয়ে রাখি। 

 

জাপান কাজের ভিসা হিসাবে দেশটিতে আপনি অনেক কাজের অপশন পাবেন। এক নজরে দেখে নিন জাপানের কোন সেক্টরে বর্তমানে প্রচুুর কাজের চাহিদা দেখা যাচ্ছে: 

 

স্কিলড ওয়ার্কার ভিসা

এই স্কিলড ওয়ার্কার ভিসা কেবল দক্ষ কর্মীদের জন্য। এই ভিসা পেতে হলে আপনাকে সংশ্লিষ্ট ক্ষেত্রে দক্ষতার প্রমাণ দিতে হবে। 

 

যেমন ধরুন আপনি ভালো কারেন্টের কাজ জানেন, ভালো জমি চাষ করতে চান, অথবা জানেন কনস্ট্রাকশনের কাজ। এই ধরণের কাজের ভিসার জন্য আবেদন করার সময় আপনাকে কোর্স ডিটেইলস বা সার্টিফিকেটও জমা দেবার প্রয়োজন পড়তে পারে। 

 

ইঞ্জিনিয়ার/স্পেশালিস্ট ইন হিউমানিটিজ/ইন্টারন্যাশনাল সার্ভিসেস ভিসা

প্রযুক্তি, ব্যবসা ও আন্তর্জাতিক সার্ভিস সেক্টরের জন্য জাপানে এই ধরণের কাজ চালু রয়েছে। এই ধরণের ভিসা পাওয়ার জন্য আপনাকে অবশ্যই উচ্চশিক্ষা গ্রহণ করতে হবে। 

 

একাডেমিক লাইফে অনেক বেশি ভালো কৃতিত্ব প্রমাণ করতে হবে। মজার ব্যাপার হলো জাপানের এসব কাজে অনেক হাই পেমেন্ট পাওয়ার সুযোগ রয়েছে। তবে আবেদনের পূর্বে নিজেকে সেভাবে প্রস্তুত করতে নিতে হবে৷ 

 

ইন্টার্নশিপ ভিসা

সবশেষে রইলো জাপানে ইন্টার্নশিপ ভিসা। যারা আগে কখনো কাজ করেনি তবে কাজ জানে, অর্থ্যাৎ যাদের কাজের কোনো অভিজ্ঞতা নেই তারা জাপানের এই ইন্টার্নশিপ ভিসার আন্ডারে জাপানে গিয়ে আয় করার সুযোগ গ্রহণ করতে পারে। 

 

শিক্ষানবিশ বা প্রশিক্ষণ নিতে আগ্রহীদের জন্য জাপান এই সুযোগ সবসময়ই উন্মুক্ত করে রেখেছে। তাছাড়া এই ধরণের ভিসার মাধ্যমে আপনি সরাসরি যেকোনো জাপানি প্রতিষ্ঠান থেকে প্রশিক্ষণ নিয়ে সেখানেই জব করতে পারেন। 

 

জাপান ভিসা আবেদন

ভিসার জন্য আবেদন করতে হলে কিছু গুরুত্বপূর্ণ ডকুমেন্টস আপনাকে শো করতে হবে। এগুলি হলো: 

  • ভিসার জন্য পূরণকৃত আবেদন ফর্ম
  • আপনার মেয়াদ আছে এমন পাসপোর্টের কপি
  • বিশেষ ক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় শিক্ষাগত যোগ্যতার প্রমাণ
  • কাজের প্রস্তাবনা বা কন্ট্রাক্ট: যা আপনি কোম্পানি থেকেই পাবেন
  • আপনার ব্যাংক স্টেটমেন্ট 
  • ডাক্তারি সার্টিফিকেট
  • পুলিশ ক্লিয়ারেন্স সার্টিফিকেট

 

উপরোক্ত ডকুমেন্টসসহ নিকটস্থ ভিসা কেন্দ্রে চলে গেলে বাকি কাজটা তারাই করে দেবে। 

 

জাপান ভিসা প্রসেসিং

এবার আসি জাপান ভিসা প্রসেসিংয়ের ব্যাপারে। ডিজিটাল যুগের কারণে এখন এই জাপান ভিসা প্রসেসিং খুব কম সময়েই সম্পন্ন হয়ে থাকে। তবে, কিছু ক্ষেত্রে এই সময় বেশি হতে পারে। বিশেষ করে যদি আপনাকে অতিরিক্ত ডকুমেন্টস জমা দিতে হয় বা তথ্য যাচাই করতে হয় সেক্ষেত্রে একটু বাড়তি সময় লাগতেই পারে। 

 

আশা করি প্রয়োজনীয় তথ্য সঠিকভাবে প্রদান করলে এবং সবকিছু ঠিক থাকলে আপনার এই জাপান ভিসা প্রসেসিং বেশি সময় নেবে না। 

 

জাপান ভিসা পেতে কতদিন লাগে?

যারা জাপান ভিসা পেতে কতদিন লাগে সে-সম্পর্কে জানেন না তাদের বলে রাখি এই জাপান ওয়ার্ক পারমিট ভিসা পেতে আপনাকে অপেক্ষা করতে হবে সাধারণত ২-৪ সপ্তাহের মতো। অনেক সময় আবার ভিসা জটিলতার উপর নির্ভর করে এই সময় বাড়তে পারে। 

 

জাপান যেতে কত টাকা লাগে?

এটি আসলে নির্দিষ্ট করে বলাটাই মুশকিল। কারণ জাপানে যাওয়ার খরচ বিভিন্ন কারণে পরিবর্তিত হতে পারে। 

 

তবে ৬০,০০০-১,২০,০০০ টাকার মতো আপনার বিমানের টিকিটের খরচ আসতে পারে। আর ভিসা ফি বাবদ খুবই অল্প টাকা অর্থ্যাৎ প্রায় ৩,০০০-৫,০০০ টাকা হলেই চলে। অন্যদিকে হেল্থ ইনসুরেন্স এবং অন্যান্য খরচ বাবদ বাজেট করতে হবে ২০,০০০-৫০,০০০ টাকার মতো। 

 

যারা জাপানে বাস করতে চান বা জব করতে চান তাদের প্রথম মাসের জন্য প্রায় ৫০,০০০-১,০০,০০০ টাকা গুনতে হবে বাড়ি ভাড়া হিসাবে। মনে রাখবেন এই টাকার পরিমাণটুকু আপনার অবস্থান এবং বাসস্থানের ধরন অনুযায়ী পরিবর্তিত হতে পারে। 

 

সবশেষে খাবার, পরিবহন এবং অন্যান্য দৈনন্দিন খরচের জন্য প্রায় ২০,০০০-৪০,০০০ টাকা মাসিক হারে বাজেট করতে পারেন। 

 

বাংলাদেশ থেকে জাপান যেতে কত ঘন্টা লাগে?

যারা অলরেডি জাপানে যাওয়ার উদ্দেশ্যে নিজেদের গুছিয়ে নিয়েছেন তারা জেনে নিন বাংলাদেশ থেকে জাপান যেতে কত ঘন্টা লাগে। মূলত ঢাকা থেকে টোকিও সরাসরি ফ্লাইটে প্রায় ৬-৮ ঘন্টা সময় লাগে। আর যারা সরাসরি ফ্লাইট পাবেন না তাদের ট্রানজিট সহ ফ্লাইট নিতে হতে পারে। আর এই প্রসেসে যাওয়ার সময়টুকু অনেকটাই বেড়ে যেতে পারে। 

 

জাপান এর সর্বনিম্ন বেতন কত?

সবশেষে জানাবো জাপান এর সর্বনিম্ন বেতন সম্পর্কে। বর্তমান রেট অনুযায়ী জাপান এর সর্বনিম্ন বেতন মূলত প্রতি ঘন্টায় প্রায় ৯০০-১,০০০ জাপানি ইয়েন, যা প্রায় ৭০০-৮০০ টাকার সমান। 

 

প্রতিটি প্রিফেকচারের উপর নির্ভর করে এই এমাউন্ট কমবেশিও হতে পারে। তবে হ্যাঁ! টোকিও এবং ওসাকার মতো বড় বড় শহরে কিন্তু সাধারণত সর্বনিম্ন বেতন কিছুটা বেশি হয়ে থাকে। 


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই ক্যাটাগরির আরো নিউজ