কুমিল্লার দেবিদ্বারে অন্তরঙ্গ মুহূর্তের ভিডিও প্রবাসী স্বামীর কাছে পাঠানোর হুমকি দেওয়ায় এক গৃহবধূ (২১) আত্মহত্যা করেছেন। গতকাল মঙ্গলবার দিবাগত রাত সাড়ে ১২টার দিকে ওই গৃহবধূর ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ।
স্থানীয়রা জানান, ওই গৃহবধূর মায়ের দ্বিতীয় বিয়ে হয় ইসমাইল নামের একজনের সঙ্গে। এরপর থেকে ওই গৃহবধূ মাঝেমধ্যে সৎ বাবার বাড়িতে মায়ের সঙ্গে দেখা করতে আসতেন। এদিকে সুলতান মিয়া নামের এক ব্যক্তির সঙ্গে ওই গৃহবধূর মায়ের পরকীয়া সম্পর্ক গড়ে ওঠে।
গত কয়েক মাস আগে নিহত গৃহবধূর কাছে রাখা প্রবাসী স্বামীর ৫ লাখ টাকা এনে সুলতানকে সুদে দেন গৃহবধূর মা। গত মঙ্গলবার সন্ধ্যায় সুলতানের কাছে সুদের ৫ লাখ টাকা ফেরত চাইলে সুলতান দিতে গড়িমশি করেন এবং হুমকি দেন পরবর্তীতে সুদের টাকা চাইলে ওই গৃহবধূর গোপন ভিডিও তার প্রবাসী স্বামীর কাছে পাঠিয়ে দেবেন। এ ঘটনার পর ওই গৃহবধূ গলায় ফাঁস নিয়ে আত্মহত্যা করেন।
নিহত গৃহবধূর মা বলেন, ‘সুলতানের কাছে আমরা ৫ লাখ টাকা পাব। ওই টাকা চাওয়ায় আমার মেয়ের গোপন ভিডিও ও ছবি তার প্রবাসী স্বামীর কাছে পাঠাবেন বলে হুমকি দেন। এ জন্য আমার মেয়ে আত্মহত্যা করেছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘সুলতান আমার প্রথম সংসারের দুই মেয়েকে জানায়, আমি নাকি আমার নামে থাকা সব সম্পত্তি নগদ অর্থ আমার দ্বিতীয় সংসারের ছেলে মেয়ের নামে লেখে দেব। এই বলে তাদের ফুঁসলিয়ে দুই বোনকে স্বামীর বাড়ি থেকে ভাগিয়ে এনে নারায়নগঞ্জ ও চট্টগ্রামের অলংকারে ভাড়া বাসায় আত্মগোপনে রাখেন। সেখানে মোবাইল ফোনে ছোট মেয়ের সঙ্গে গোপন ভিডিও ধারণ করে সুলতান।’
নিহতের বড় বোন বলেন, ‘সুলতান আমার প্রবাসী স্বামীকেও বিভিন্ন কুপরামর্শ দিয়েছেন। আমি তাকে টাকা না দিলে সংসার না করতে চাপ প্রয়োগ করেন। আমি প্রথমে সুলতানের চক্রান্ত বুঝতে পারিনি। তার চক্রান্তে পরে ছোট বোনের সঙ্গে চট্টগ্রাম যাই। পরে বুঝতে পেরে মায়ের কাছে ফিরে আসি। লম্পট সুলতান আমার অজান্তে ছোট বোনের গোপন ভিডিও ধারণ করেন। সে ওই ভিডিও ফুটেজ তার প্রবাসী স্বামীর কাছে পাঠাবেন বলে ভয় দেখায়। এতে আমার ছোট বোন আত্মহত্যা করে।’
এ বিষয়ে বুধবার বিকেলে সুলতানের বাড়ি গিয়ে তাকে পাওয়া যায়নি। তার সঙ্গে ফোনে কথা বলার চেষ্টা করলে ফোন নম্বর বন্ধ পাওয়া যায়। স্থানীয়রা জানান, ঘটনার পর সুলতান এলাকা ছেড়ে পালিয়েছেন।
এ বিষয়ে দেবিদ্বার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কমল কৃষ্ণ ধর বলেন, মরদেহ ময়নাতদন্ত শেষে পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। এ ঘটনায় নিহতের মা হালিমা বেগম বাদী হয়ে একটি অপমৃত্যু মামলা করেছেন।