ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) দেশরত্ন শেখ হাসিনা হলে নির্যাতনের ঘটনায় জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি ও ন্যায়বিচার পেতে আদালতে মামলা করবেন ভুক্তভোগী ছাত্রী ফুলপরী খাতুন। মঙ্গলবার (২৮ ফেব্রুয়ারি) দুপুরের দিকে বাবা আতাউর রহমানের সঙ্গে কুষ্টিয়া আদালতে এসেছিলেন তিনি। তারা আইনজীবী ঠিক করেছেন এবং মামলার প্রস্তুতি চলছে।
বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন ভুক্তভোগী ছাত্রী ফুলপরী খাতুন। তিনি ঢাকা পোস্টকে বলেন, ন্যায়বিচার ও অভিযুক্তদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতে কুষ্টিয়া আদালতে মামলা করব। বাবাকে সঙ্গে করে কুষ্টিয়া আদালতে গিয়েছিলাম। মামলা সংক্রান্ত বিষয়ে আইনজীবীর সঙ্গে বিস্তারিত আলোচনা হয়েছে।
এক প্রশ্নের জবাবে ফুলপরী বলেন, তদন্ত কমিটির প্রতি আমার আস্থা আছে। অন্যায়ভাবে যারা আমাকে পাশবিক ও অমানবিক নির্যাতন করেছে দ্রুত তাদের বিচার হোক। আপাতত আমার কোনো সমস্যা নেই। কেউ হুমকি দিচ্ছে না।
কুষ্টিয়া আদালতের আইনজীবী সিরাজ প্রামাণিক ঢাকা পোস্টকে বলেন, পাশবিক ও অমানবিক নির্যাতনের শিকার ইবি ছাত্রী ও তার বাবা আদালতে এসেছিলেন। তাদের সঙ্গে আমার বিস্তারিত আলোচনা হয়েছে। তারা আদালতে মামলা করবেন। আমাকে আইনজীবী হিসেবে ঠিক করেছেন। মামলার প্রস্তুতি চলছে।
ভুক্তভোগী ফুলপরীর বাড়ি পাবনার আটঘরিয়া উপজেলার শিবপুরে গ্রামে। তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের ফিন্যান্স অ্যান্ড ব্যাংকিং বিভাগের ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী।
প্রসঙ্গত, গত ১২ ফেব্রুয়ারি রাতে দেশরত্ন শেখ হাসিনা হলের গণরুমে ডেকে রাত ১১টা থেকে রাত ৩টা পর্যন্ত নবীন ছাত্রী ফুলপরী খাতুনকে বিবস্ত্র করে মারধর ও শারীরিকভাবে নির্যাতনের অভিযোগ ওঠে বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি সানজিদা চৌধুরী অন্তরা ও তার সহযোগীদের বিরুদ্ধে। নির্যাতনের পরদিন ভয়ে ক্যাম্পাস থেকে পালিয়ে যান ওই ছাত্রী।
নির্যাতনের অভিযোগ করে ভুক্তভোগী ছাত্রী গত ১৪ ফেব্রুয়ারি বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন বরাবর লিখিত অভিযোগ দেন। পরে ১৫ ফেব্রুয়ারি পাঁচ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করেন উপাচার্য। এতে আইন বিভাগের অধ্যাপক রেবা মন্ডলকে আহ্বায়ক করা হয়। কমিটিকে সাত কার্যদিবসের মধ্যে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়। কমিটি ১৮ ফেব্রুয়ারি কার্যক্রম শুরু করে। ভুক্তভোগী, অভিযুক্ত ও সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের সাক্ষাৎকার শেষে প্রাপ্ত তথ্য পর্যালোচনা করা হয়। এরপর ২৬ ফেব্রুয়ারি তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেওয়া হয়। এরই মধ্যে নির্যাতনে অভিযুক্ত পাঁচ ছাত্রীর স্থায়ী আবাসিকতা বাতিল করেছে হল কর্তৃপক্ষ। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের শাস্তি এখনো বাকি আছে। এছাড়াও বুধবার (১ মার্চ) এ সংক্রান্ত রিটের ওপর হাইকোর্টে শুনানি হবে।