ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) শাখা ছাত্রলীগের নেত্রী সানজিদা চৌধুরী অন্তরার বিরুদ্ধে নবীন ছাত্রীকে মানসিক নির্যাতনের অভিযোগ উঠেছে। আজ মঙ্গলবার সকালে বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র উপদেষ্টা ও প্রক্টর বরাবর এ অভিযোগ করেন এক ছাত্রী।
আরো পড়ুন প্রবাসীর স্ত্রীর সঙ্গে আপত্তিকর অবস্থায় ইউপি সদস্য
অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, গত ১১ ও ১২ তারিখে দুই দফায় দেশরত্ন শেখ হাসিনা হলের আবাসিক ছাত্রী এবং পরিসংখ্যান বিভাগের ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী ও বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সহসভাপতি সানজিদা চৌধুরী অন্তরার নেতৃত্বে ৭-৮ জন চরম মানসিক নির্যাতন ও শারীরিক নির্যাতন করেন। পরে বিবস্ত্র করে এসবে ভিডিও ধারণের করা হয়েছে বলে অভিযোগে উল্লেখ করা হয়েছে।
পরের দিন গতকাল সোমবার খুব সকালে জীবন বাঁচাতে ভুক্তভোগী হল থেকে পালিয়ে গ্রামের বাড়ি পাবনাতে চলে যান। তারপর সকালে তাকে হলে না পেয়ে ছাত্রলীগনেত্রী অন্তরাসহ অন্যরা একাধিকবার ফোন দেন। তবে ভয়ে কারও ফোনই রিসিভ করেনি ভুক্তভোগী।পরে তিনি বাসায় গিয়ে পরিবারের সঙ্গে আলাপ-আলোচনা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কাছে অভিযোগ করেন।
অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে ছাত্রলীগনেত্রী সানজিদা চৌধুরী অন্তরা বলেন, ‘ওই মেয়ে কি কোনো অভিযোগ দিয়েছে? প্রশাসনের কাছে অভিযোগ দিয়েছে?’
অভিযোগ দিয়েছেন জানানো হলে অন্তরা দাবি করেন, ‘অভিযোগের কোনো সত্যতা নেই। ওই মেয়ে মিথ্যা বলছে। হয়তো এক কুচক্রী মহল আমার বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালাচ্ছে। আমি উপাচার্যের কাছে এসেছি। ওই মেয়ে যে মিথ্যুক, তার প্রমাণ উপাচার্যকে দেওয়া হচ্ছে’
এদিকে, অভিযোগপত্রে থাকা অভিযোগকারীর নম্বরে একাধিকবার যোগাযোগ করলেও নম্বরটা বন্ধ পাওয়া যায়।
ইবি শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি ফয়সাল সিদ্দিকী আরাফাত বলেন, ‘ঘটনাটি শুনেছি। বিষয়টি খোঁজখবর নেওয়া হবে। অভিযোগ প্রমাণিত হলে সাংগঠনিকভাবে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
এ বিষয়ে দেশরত্ন শেখ হাসিনা হলের প্রভোস্ট অধ্যাপক ড. শামসুল আলম বলেন, ‘প্রথম বর্ষের এক মেয়ে কিছু সিনিয়রদের সঙ্গে খারাপ আচরণ করেছে বলে অভিযোগ করেছিল কিছু ছাত্রী। পরে আমি ও প্রক্টরিয়াল বডির সদস্যরা মিলে বিষয়টি মিটমাট করে দেই। কিন্তু পরে তার সঙ্গে কি হয়েছে এ বিষয়ে কেউ কিছু জানায়নি। লিখিত অভিযোগ পেলে আমরা হল কর্তৃপক্ষ বিষয়টি খতিয়ে দেখে সর্বোচ্চ ব্যবস্থা গ্রহণ করব।’
ইবির ছাত্র উপদেষ্টা প্রফেসর ড. শেলীনা নাসরিন বলেন, ‘আমরা র্যাগিংয়ের বিরুদ্ধে বরাবরই ‘জিরো টলারেন্স’। ওই ছাত্রীর বিষয়টি শুনেছি। তবে এখনও লিখিত অভিযোগ পাইনি। অভিযোগ পেলে বিষয়টির সত্যতা যাচাই করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. শাহাদৎ হোসেন আজাদ বলেন, ‘বিষয়টি জেনেছি। উভয়-পক্ষের কথা শুনে বিষয়টি যাচাই-বাছাই করে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’