যাদের মনে উন্নত ক্যারিয়ারের চিন্তা কিংবা আশা রয়েছে তাদের বেশিরভাগই বিদেশে পড়াশোনার করার প্রতি আগ্রহী হয়ে উঠে। এক্ষেত্রে আজ আমরা শেয়ার করবো বিদেশে পড়াশোনার খরচ সম্পর্কিত বিস্তারিত তথ্যাদি। আশা করি পুরো আর্টিকেলটি বিদেশে পড়াশোনার খরচ সম্পর্কে সকল তথ্য জানতে সাহায্য করবে। সুতরাং মিস করতে না চাইলে আমাদের সাথেই থাকুন।
মালেশিয়ায় পড়াশোনার খরচ কত?
কানাডায় পড়াশোনার খরচ কত?
আমেরিকায় পড়াশোনার খরচ কত?
ইংলেন্ডে পড়াশোনার খরচ কত?
বিদেশে পড়াশোনার খরচ সম্পর্কিত আমাদের আজকের এই আর্টিকেলের শুরুতে চলুন মালেশিয়ায় পড়াশোনার খরচ সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য জেনে নেওয়া যাক।
আপনি যদি মালেশিয়ার মতো দেশে পড়াশোনা করতে চান, সেক্ষেত্রে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে ব্যাচেলর ডিগ্রি কোর্স করতে আপনাকে গুনতে হবে প্রায় ২ হাজার থেকে সাড়ে ৪ হাজার ইউরোর মতো অর্থ। আর এই অর্থটুকুকে আমরা যদি বাংলা টাকায় কনভার্ট করি তাহলে তা দাঁড়াবে প্রায় ১ লাখ ৯২ হাজার ৭৬০ থেকে ৪ লাখ ৩৩ হাজার ৭২০ টাকায়। এছাড়াও এতে নিজেকে চালিয়ে নেওয়ার খরচ তো থাকছেই। যদিও এটি নির্ভর করবে আপনি কোথায় থাকছেন এবং কেমন জীবন লিড করছেন তার উপর!
যাইহোক! আপনি কিন্তু জেনে খুশি হবেন যে এই মালয়েশিয়ায় পড়াশোনার করার সিদ্ধান্তটিকে গ্রহণ করে এবং বিদেশে পড়াশোনার খরচের সাথে নিজেদের খাপ খাইয়ে বর্তমানে দেশটিতে প্রায় ১১ হাজার ১৬১ জন বাংলাদেশী শিক্ষার্থী পড়াশোনা চালিয়ে যাচ্ছে।
চলছে বিদেশে পড়াশোনার খরচ সম্পর্কিত বিস্তারিত আলোচনা এবং আলোচনার এই অংশে আমরা জানবো কানাডায় পড়াশোনা চালিয়ে যেতে একজন বাংলাদেশী হিসাবে আপনাকে ঠিক কত টাকা খরচ করতে হতে পারে সে-সম্পর্কে।
মূলত কোনো ধরণের অর্থ সম্পর্কিত বৃত্তি ছাড়া আপনি যদি কানাডার মতো একটি দেশে পড়াশোনা করার সিদ্ধান্ত নেন সেক্ষেত্রে আপনাকে খরচ করতে হতে পারে প্রায় ১০ থেকে ১২ হাজার কানাডিয়ান ডলারেরও বেশি অর্থ। যা বাংলাদেশী টাকায় ৭ লাখ ৩০ হাজার থেকে ৮ লাখ ৮০ হাজার টাকা প্রায়। সুতরাং বুঝতেই পারছেন বিদেশে পড়াশোনার খরচ এর ক্ষেত্রে মালয়েশিয়ার চাইতে কানাডায় পড়াশোনার খরচ অনেকটা বেশি।
তবে সবচেয়ে বড় সুবিধা হলো প্রতি সপ্তাহে ২০ ঘণ্টা পর্যন্ত কাজের সুযোগ থাকছে দেশটিতে। আশা করি একজন শিক্ষার্থী হিসাবে এই সময়টাকে কাজে লাগিয়ে কিছুটা হলেও নিজের পড়াশোনার খরচটুকু সেইভ করতে পারবেন!
বিদেশে পড়াশোনার খরচ এর পরিমাণের ক্ষেত্রে সবচেয়ে বেশি এগিয়ে রয়েছে আমেরিকায়। দেশটির বিশ্ববিদ্যালয়গুলিতে পড়াশোনা করে যোগাড় করা সার্টিফিকেটের চাহিদা সারা বিশ্বজুড়ে সমান হারে রয়েছে। যার কারণে বাড়তি খরচের ব্যাপারটাকে ডিঙিয়ে অনেকেই আমেরিকায় মতো দেশে নিজের পড়াশোনা চালিয়ে যেতে আপ্রাণ চেষ্টা করে থাকে।
এবার আসি আমেরিকায় পড়াশোনার খরচের ব্যাপারে। দেশটিতে আপনি যদি কোন স্টেট ভার্সিটিতে ৪ বছরের জন্য B.Sc. কোর্স করার সিদ্ধান্ত নেন সেক্ষেত্রে আপনাকে গুনতে হবে প্রায় $1,20,000 থেকে $1,60,000 এর মতো অর্থ কিংবা বাংলাদেশী টাকায় প্রায় ৳৯৩,৬০,০০০ থেকে ৳১,২৪,৮০০০০ এর সমপরিমাণের অর্থ। তবে এই পরিমাণ অর্থ কিন্তু বাৎসরিক নয়। মূলত পুরো ৪ বছরের কোর্সে ৳৯৩,৬০,০০০ থেকে ৳১,২৪,৮০০০০ এর অর্থের প্রয়োজন পড়বে। আর হ্যাঁ! খরচের ক্ষেত্রে এই এমাউন্টের সাথে থাকা-খাওয়া এবং টিউশন ফিও যোগ করা হয়েছে।
পড়াশোনার ক্ষেত্রে আমেরিকা হতে পারে সেরা প্ল্যাটফর্ম কিংবা দেশ। তবে পরিবারের অনুমতি না নিয়ে কিংবা তাদের সমর্থন না পেলে কখনোই দেশটিতে পড়তে যাওয়া উচিত নয়। কারণ দেশটিতে কারো কাছ থেকে কোনো সাহায্য আশা করা কিংবা অন্ধকারে সুঁই খোঁজা একই ব্যাপার।
আজকে যারা বিদেশে পড়াশোনার খরচ সম্পর্কে জানতে এসেছেন তাদের মাঝে অনেকেই হয়তো স্কলারশিপের জন্য ইংলেন্ডকে পারফেক্ট দেশ হিসাবে ভেবে নিয়েছেন। সুতরাং এই ভাবনায় যারা আছেন তারা জেনে নিন ইংলেন্ডে পড়াশোনার খরচ কত হতে পারে সে-সম্পর্কে।
শুরুতেই বলে রাখি ইংলেন্ডে পড়াশোনার খরচ সবসময় এক থাকে না। বিশেষ করে এই খরচের পরিমাণ কোর্স এবং ভার্সিটির ধরণভেদে আলাদা আলাদা হয়ে থাকে। আপনি যদি মেডিক্যাল সাইন্স নিয়ে দেশটিতে পড়াশোনা করতে চান সেক্ষেত্রে আপনার খরচ দাঁড়াবে ১০,০০০ – ২১,০০০ পাউন্ড। অন্যদিকে কলা বিষয়ে পড়তে অনুমানিক ৭,০০০ – ৯,০০০ পাউন্ড এবং বিজ্ঞান বিষয়ে পড়তে দরকার পড়বে ৭,০০০ – ১২,০০০ পাউন্ডের মতো অর্থ।
ইংলেন্ডে পড়াশোনার ব্যাপারে আরো একটি গুরুত্বপূর্ণ তথ্য জানিয়ে রাখবার প্রয়োজনবোধ করছি। মনে রাখবেন ইংলেন্ডে পড়াশোনা করতে কোনো ধরনের স্টুডেন্ট ভিসার ব্যবস্থা করে দেওয়া হয় না। আর সাধারণ ভিসার কাজ শেষ করতে ৩ থেকে ৩.৫ মাসের মতো সময় লাগে।
বিদেশে পড়াশোনার খরচটুকু তো জানলেন! এবার সিদ্ধান্ত নেবার পালা। কোন সাবজেক্টে পড়ে কোন সেক্টরে ক্যারিয়ার গড়তে চান সে বিষয়ে চিন্তা করে সিদ্ধান্ত নিন। স্বল্পমেয়াদী মিশনে না নেমে দীর্ঘমেয়াদী মিশনে ফোকাস করুন। আর হ্যাঁ! আট-দশটা ক্যারিয়ারের ধরণের চাইতে আপনার ক্যারিয়ারের ধরণটুকু যদি কিছুটা আলাদাভাবে সাজানো সম্ভব হয় তাহলে কিন্তু সে সুযোগ হাতছাড়া করবেন না।