চুয়াডাঙ্গার আলমডাঙ্গা উপজেলার তিয়রবিলা গ্রামে পরকীয়ার অভিযোগে প্রবাসীর স্ত্রী ও ব্যবসায়ীকে জুতাপেটা করেছেন স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও সালিশকারীরা। পরে তাদের জুতার মালা পরিয়ে এলাকায় ঘোরানো হয়। গত ২৯ এপ্রিল এই ঘটনা ঘটলেও সোমবার বিষয়টি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়লে সকলের নজরে আসে।
এ ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে ভুক্তভোগী ব্যবসায়ী লালন হোসেন সোমবার সন্ধ্যায় খাসকররা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও সাবেক ইউপি সদস্যসহ ৫ জন ও অজ্ঞাত ৩-৪ জনের বিরুদ্ধে মামলা করেছে। ওই মামলায় সালিশকারী তিনজনকে রাতেই গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
মঙ্গলবার দুপুরে আদালতের মাধ্যমে আটককৃতদের কারাগারে পাঠানো হয়। গ্রেপ্তারকৃত আসামীরা হলেন- খাসকররা গ্রামের শফি মল্লিক (৬০), হাসান আলী (৩০), কলম জোয়ারদার (৬০)।
স্থানীয়রা জানান, উপজেলার খাসকররা ইউনিয়নের তিয়রবিলা গ্রামের এক প্রবাসীর স্ত্রীর সঙ্গে ব্যবসায়ী যুবক লালনের পরকীয়ার সম্পর্ক গড়ে ওঠে। এ নিয়ে খাসকররা ইউনিয়নের তিয়রবিলা গ্রামে ওই গৃহবধূর বাড়ির সন্নিকটে সালিশ বৈঠক ডাকেন ইউপি চেয়ারম্যান। অভিযুক্ত লালন সালিশে আসতে না চাইলেও জোরপূর্বক তাকে বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে আসা হয়। প্রায় ২ শতাধিক মানুষের উপস্থিতে বৈঠক হয়। পরে সালিশের সিদ্ধান্ত মোতাবেক পরকীয়ার অভিযোগে গৃহবধূ ও লালনকে শারীরিক নির্যাতনের পর জুতার মালা পড়িয়ে এলাকা ঘোরানো। এছাড়াও দেড় লাখ টাকা জরিমানা ও দু’জনকে গ্রাম ছাড়তে নির্দেশ দেয় খাসকররা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান তাফসির আহম্মেদ লাল। এ ঘটনায় সালিশকারীরা প্রভাবশালী হওয়ায় ভয়ে কেউ প্রতিবাদ করতে সাহস করেননি।
ভুক্তভোগী ব্যবসায়ী লালন বলেন, ইউপি চেয়ারম্যানের সঙ্গে পূর্ব বিরোধের জেরে ওরা আমাকে জোর করে বেধেঁ গ্রামের সবার সামনে জুতার মালা দিয়েছে এবং জুতার মালা পরিয়ে সারা গ্রাম ঘুরিয়েছে। এখন আর বাঁচার ইচ্ছে নেই আমার। আমি এর বিচার চাই। সোমবার রাতেই থানায় মামলা করেছি।
এ বিষয়ে খাসকররা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান তাফসির আহম্মেদ লালের সঙ্গে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি।