নওগাঁর মান্দায় পানি উন্নয়ন বোর্ডের অধিগ্রহণকৃত সরকারি জমি অবৈধ দখলের মহোৎসব চলছে। উপজেলার জোতবাজার, পাঁজরভাঙ্গা ও দাসপাড়া এলাকায় বন্যানিয়ন্ত্রণ বাঁধ সংলগ্ন এসব সম্পত্তিতে চলছে অবৈধ ভবন নির্মাণের কাজ। এসব স্থাপনা নির্মাণ কাজ বন্ধের দাবি জানিয়ে পাউবোর নির্বাহী প্রকৌশলীসহ সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন দপ্তরে অভিযোগ করা হয়েছে। কিন্তু নির্মাণ কাজ বন্ধে কোনো ব্যবস্থা নেয়নি সংশ্লিষ্ট দপ্তর।
স্থানীয়দের অভিযোগ, গত ৫ বছরে এ উপজেলায় পানি উন্নয়ন বোর্ডের নিজস্ব জমি অবৈধভাবে দখল করে দুই শতাধিক পাকা স্থাপনা নির্মাণ করা হয়েছে। এসব ঘটনায় অভিযোগের পর শুধু কাজ বন্ধের নোটিশ দিয়ে দায় এড়িয়ে যায় সংশ্লিষ্ট দপ্তর। পরবর্তীতে মামলার হুমকি দিয়ে অবৈধ স্থাপনাকারীদের কাছ থেকে অনৈতিক ফায়দা হাসিল করার অভিযোগ রয়েছে পাউবোর কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে।
অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, জোতবাজার এলাকায় বন্যানিয়ন্ত্রণ বাঁধের ভেতরে পাউবোর জমি দখল করে আব্দুর রশিদ, জনাব আলী ও তোফাজ্জল হোসেন নামে তিন ব্যক্তি আরসিসি ভবন নির্মাণ করছেন। বাঁধের ভেতরে এসব স্থাপনা নির্মাণ করা হলে বর্ষায় বৃষ্টির পানি নিষ্কাশনের পথ বন্ধ হয়ে যাবে। এতে করে বাজারে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হবে। পানিতে তলিয়ে যাবে বাজারের শতাধিক ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ও কয়েকশ বসতবাড়ী।
অন্যদিকে উপজেলার দাসপাড়া এলাকায় একইভাবে পাউবোর সম্পত্তি দখল করে ভবন নির্মাণ করছেন আব্দুস সাত্তার নামে এক ব্যক্তি। দাসপাড়ায় বন্যানিয়ন্ত্রণ বাঁধ সংলগ্ন পাউবোর ৩৬ শতক সম্পত্তি দখল করে ভবন নির্মাণ করছেন তিনি। কাজটি বন্ধের জন্য একই এলাকার ফজলুর রহমান সংশ্লিষ্ট দপ্তরে অভিযোগ করেন। কিন্তু এখন পর্যন্ত কাজটি বন্ধের ব্যবস্থা নেয়া হয়নি।
অভিযোগকারী জোতবাজার বণিক সমবায় সমিতির সভাপতি ফজলুল বারী সাফী বলেন, পাউবোর সম্পত্তিতে অবৈধ স্থাপনা নির্মাণ কাজ বন্ধের জন্য নির্বাহী প্রকৌশলীসহ বিভিন্ন দপ্তরে অভিযোগ দেয়া হয়েছে। কয়েকদিন পেরিয়ে গেলেও এখন পর্যন্ত ব্যবস্থা নেয়া হয়নি দখলদারদের বিরুদ্ধে।
ফজলুল বারী সাফী অভিযোগ করে বলেন, অভিযোগের পর পানি উন্নয়ন বোর্ডের লোকজন শুধুমাত্র নোটিশ দিয়েই দায় এড়িয়ে যান। এরপর দখলদারদের কাছ থেকে অনৈতিক সুবিধা নিয়ে কাজ করার সুযোগ করে দেন।
নওগাঁ পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী আরিফুজ্জামান খান বলেন, অভিযোগের ভিত্তিতে জোতবাজার চৌরাস্তার মোড়ের তিন ব্যক্তিকে কাজ বন্ধের নোটিশ দেয়া হয়েছে। কাজ বন্ধ না করলে তাঁদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।