মুন্সিগঞ্জ সদর উপজেলায় বসতঘর থেকে সাগর আহমেদ শেখ (২২) নামের এক তরুণের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। স্বজনদের ভাষ্য, পাসপোর্টে ঠিকানা ভুল আসায় প্রবাসে যেতে ব্যর্থ হয়ে গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছেন তিনি।
সোমবার দুপুর ২টার দিকে সদরের মহাকালি শেখ বাড়িতে নিজের ঘরে গলায় কাপড় পেঁচিয়ে ফাঁস দেন সাগর আহমেদ। তিনি ওই বাড়ির স্বপন শেখের ছেলে।
তার চাচা টিটু আহমেদ শেখ বলেন, ‘গত পরশু সাগর ঢাকা থেকে বাসায় আসে, তখন ওর মন খারাপ ছিল। ও আমাকে জানায়, ওর পাসপোর্টে একটা সমস্যা হয়েছে। ঠিকানাটা মুন্সিগঞ্জ না দিয়ে চট্টগ্রাম দিয়ে দিয়েছে। আজকে বাড়িতে কেউ ছিল না। ওর বাবা গত ৫ তারিখে মালয়েশিয়া চলে যায়। ওর মা সকালে হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য যায়। পরে বাড়ি ফিরে দেখে দরজা বন্ধ। তখন বাড়ির লোকজনকে ডাকে তার মা। এ সময় ঘরের মধ্যে একটি ছোট ছিদ্র দিয়ে দেখা যায়, সাগর আমার মায়ের (তার দাদী) কাপড় গলায় পেঁচিয়ে ঝুলে রয়েছে। পরে পুলিশ এসে মরদেহ হাসপাতালে নিয়ে যায়।’
সাগরের ভাই সানি শেখ বলেন, ‘পাসপোর্টের মধ্যে ঠিকানা উল্টাপাল্টা লিখা হয়েছিল। আমাদের বাড়ি মুন্সিগঞ্জ, কিন্তু ভাইয়ের পাসপোর্টে ঠিকানা চট্টগ্রাম লেখা হয়েছিল। ভাই আমাদের বাড়ির এক ফুপুর কাছ থেকে দুই লাখ টাকা সুদে নিয়েছে, এছাড়া বিভিন্নভাবে প্রায় পাঁচ লাখ টাকা সুদ করেছিল। পাসপোর্টে ঠিকানা ভুল থাকার কারণে বারবার ওর বিদেশের আবেদন বাতিল করে দেয়া হয়েছিল। এজন্য চিন্তায় পড়ে গেছিল যে—মানুষের টাকা কীভাবে পরিশোধ করবে। গত কয়দিন ধরে বারবার বলছিল মরে যাবে। আজ বাসায় কেউ ছিল না, তখন ঘরের মধ্যে ফাঁসি দিয়েছে। অন্য কোনো কারণ দেখছি না।’
তবে সাগর আহমেদ শেখ কোথায় পাসপোর্ট বানিয়েছিলেন বা এ ভুলের সঙ্গে কে জড়িত তা জানা যায়নি।
মুন্সিগঞ্জ সদর থানার ওসি (তদন্ত) আনসারুজ্জামান দৈনিক বাংলাকে জানান, ‘সাগরের মরদহ ময়নাতদন্তের জন্য মুন্সিগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালে রয়েছে। এ বিষয়ে তদন্তসাপেক্ষে আইনি ব্যবস্থা নেয়া হবে।’