যুক্তরাজ্য হলো বিশ্বমানের বিশ্ববিদ্যালয় এবং প্রতিষ্ঠানের আবাসস্থল। বেশিরভাগ আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীরা দেশের উচ্চশিক্ষার গন্ডি পেরিয়ে এই রাজ্যের বিশ্ববিদ্যালয়গুলিতে গ্র্যাজুয়েশন কমপ্লিট করতে চায়। বাংলাদেশী শিক্ষার্থীরাও এই আগ্রহের দিক থেকে পিছিয়ে নেই। চলুন তবে আজকের এই আর্টিকেলে যুক্তরাজ্যে স্কলারশিপ পাওয়ার উপায় সম্পর্কে জানা যাক। সেই সাথে দেখে নেওয়া যাক যুক্তরাজ্যের সেরা মানের স্কলারশিপ সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য।
শুরুতেই চলুন প্রতিবন্ধকতা সম্পর্কে আলোচনা করা যাক। যুক্তরাজ্যকে বিশ্বমানের বিশ্ববিদ্যালয় এবং প্রতিষ্ঠানের আবাসস্থল বলা গেলেও ক্রমবর্ধমান টিউশন ফি এবং জীবনযাত্রার ব্যয়ের কারণে অনেকেই নিজের স্বপ্ন পূরণ করতে পারে না।
তবে সবচেয়ে খুশির খবর হলো বর্তমানে যুক্তরাজ্য সরকার, বিশ্ববিদ্যালয় এবং প্রতিষ্ঠানসহ বেশকিছু সংস্থা কম টিউশন ফি কিংবা পুরোপুরি ফ্রিতেই দেশটিতে পড়াশোনার সুযোগ করে দিচ্ছে।
অন্যদিকে শিক্ষার্থীরাও বিভিন্ন স্কলারশিপ প্যাকেজের মাধ্যমে নিজেদের সুবিধা নিতে পারছে। যদিও এই সুবিধা শিক্ষার্থীদের সামর্থ্য এবং চাহিদার উপর নির্ভর করেও পরিবর্তিত হতে পারে।
যারা এই ধরণের আর্থিক সুবিধা পেতে চান তাদের কিন্তু অবশ্যই জাতীয়তা, আর্থিক চাহিদা এবং এমনকি খেলাধুলার পারফরম্যান্সের উপর ভিত্তি করে যোগ্যতার প্রমাণ দিতে হবে।
সম্ভাব্য এবং সেরা স্কলারশিপ মাপকাঠিতে আমরা আজ যুক্তরাজ্যের সেরা মানের স্কলারশিপ নিয়ে আলোচনা করবো। আপনি চাইলে পছন্দ মতো যেকোনো বিশ্ববিদ্যালয়ের যেকোনো মানসম্মত প্রোগ্রাম বা কোর্স বেছে নিতে পারেন।
যুক্তরাজ্যে রোডস স্কলারশিপ যাত্রা শুরু করে ১৯০২ সালে। যা দেশটিতে প্রাচীনতম বৃত্তি প্রোগ্রাম হিসাবে বেশ জনপ্রিয় হয়ে আছে। এই স্কলারশিপটির ব্যবস্থা করা হয়ে থাকে মূলত স্নাতকোত্তর শিক্ষার্থীদের জন্য।
যারা অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে কম খরচে পড়াশোনার সেরে নিতে চায় তাদের জন্যে এই বৃত্তিটি বেশ গুরুত্বপূর্ণ সুযোগ হিসাবে বিবেচিত হয়ে থাকে। যুক্তরাজ্যের রোডস স্কলারশিপ সম্পর্কিত কিছু গুরুত্বপূর্ণ তথ্য:
বিল এবং মেলিন্ডা গেটস ফাউন্ডেশন মূলত ক্যামব্রিজের এই গেটস স্কলারশিপের আর্থিক দিকটা সামাল দিয়ে থাকে। ফাউন্ডেশনটি মূলত সামাজিকভাবে দায়বদ্ধ নেতাদের অর্থ দ্বারা।
বর্তমানে উক্ত ফাউন্ডেশন বিশ্ববিদ্যালয়টিকে সর্বমোট ২১০ মিলিয়ন ডলার দান করেছে। যার সাহায্যেই এখনো পরিচালিত হচ্ছে এই গেটস কেমব্রিজ স্কলারশিপ কার্যক্রম।
এই স্কলারশিপের আন্ডারে প্রতিবছর বিশ্ববিদ্যালয়ে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জনকারী শিক্ষার্থীদের ৮০ টিরও বেশি বৃত্তি প্রদান করে। এক্ষেত্রে ২৫ টি থাকে যুক্তরাজ্যের লোকাল শিক্ষার্থীদের জন্য এবং ৫৫ টি থাকে বিশ্বের সকল স্কলারশিপপ্রাপ্ত শিক্ষার্থীদের মাঝে নির্বাচিত শিক্ষার্থীর জন্য।
এই বৃত্তি প্রদানের ক্ষেত্রে মূলত ডক্টরাল ডিগ্রি-প্রার্থী শিক্ষার্থীদের সবচেয়ে বেশি অগ্রাধিকার প্রদান করা হয়। পুরস্কারের দুই-তৃতীয়াংশ পিএইচডি-তেই প্রদান করা হয়।
যারা এই স্কলারশিপটি পাবেন তারা সরাসরি এর প্রভাব প্রোগ্রামের মোট খরচ এবং অন্যান্য একাডেমিক ফি যেমন ভাতা, গবেষণা ব্যয় এবং প্রাসঙ্গিক কোর্স ফিতেও পাবেন। কারণ এই স্কলারশিপের আন্ডারে সকল একাডেমিক ফি বহন করা হয়ে থাকে। বিস্তারিত জানতে নিচের তথ্যগুলি লক্ষ্য করুন:
যুক্তরাজ্যে স্কলারশিপ পাওয়ার উপায় হিসাবে আপনারা চাইলে এ.এস. হর্নবি এডুকেশনাল ট্রাস্ট স্কলারশিপের জন্য আবেদন করতে পারেন।
এ.এস. হর্নবি এডুকেশনাল ট্রাস্ট প্রতিষ্ঠিত হয় ১৯৬১ সালে। যা সারা বিশ্ব থেকে ইংরেজি ভাষায় পড়াতে আসা শিক্ষকদের দেওয়া হয়।
দাতব্য প্রতিষ্ঠান ওয়ারউইক বিশ্ববিদ্যালয়ের TESOL-এ এক বছরের স্নাতকোত্তর ডিগ্রির জন্য অধ্যয়ন করতে ইচ্ছুক ব্যাক্তিরা আবেদন করলেই সম্পূর্ণ শিক্ষাদানের খরচ এবং জীবনযাত্রার ব্যয়ের অর্থায়ন নিশ্চিত করে এই কতৃপক্ষটি।
যারা এই স্কলারশিপে আবেদন করতে ইচ্ছুক তাদের অবশ্যই ইংরেজি ভাষার শিক্ষক হিসেবে কমপক্ষে তিন বছরের কাজের অভিজ্ঞতা থাকতে হব। সেই সাথে প্রার্থীকে অবশ্যই বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিগ্রিধারী হতে হবে এবং ইংরেজি ভাষায় উচ্চ দক্ষতা থাকতে হবে।
দাতব্য প্রতিষ্ঠান ওয়ারউইক বিশ্ববিদ্যালয়ের এই এ.এস. হর্নবি এডুকেশনাল ট্রাস্ট স্কলারশিপের জন্য আবেদন করতে চান তারা জেনে নিন এ-সম্পর্কিত গুরুত্বপূর্ণ কিছু তথ্য:
অ্যাপেক্স অ্যাওয়ার্ড স্কলারশিপ হলো যুক্তরাজ্যে স্কলারশিপ পাওয়ার উপায় খুঁজে হন্যে হওয়া ব্যাক্তিদের আরো একটি পার্ফেক্ট সমাধান।
প্রতিষ্ঠান ভিত্তিক গবেষকদের জন্য একটি মর্যাদাপূর্ণ বৃত্তি প্রোগ্রাম হিসাবে যুক্তরাজ্যে বেশ জনপ্রিয়তা লাভ করেছে এই স্কলারশিপ সিস্টেমটি।
এই প্রোগ্রামটি বেশ কয়েকটি ইনস্টিটিউট দ্বারা সমর্থিত। এক্ষেত্রে যেসব ইনস্টিটিউটের নাম একেবারে উল্লেখ না করলেই নয়, সেসব ইনস্টিটিউট হলো ব্রিটিশ একাডেমি, রয়্যাল সোসাইটি এবং দ্য রয়্যাল একাডেমি অফ ইঞ্জিনিয়ারিং।
যেকোনো গবেষণা পরিচালনায় গবেষকদের সমর্থন করা যা সম্ভবত বিশ্বব্যাপী বৈজ্ঞানিক অধ্যয়ন ও উদ্ভাবনে অবদান রাখার সম্ভাবনাকে বাড়িয়ে তোলাই হলো এই স্কলারশিপের মূল লক্ষ্য।
বলে রাখা ভালো এই বৃত্তির মোট পরিমাণের এক-চতুর্থাংশ গবেষণা ব্যয়ের জন্য ব্যয় করা হয়ে থাকে। যারা অর্থের অভাবে গবেষণা করতে পারছেন না তারা যদি এই স্কলারশিপের জন্য আবেদন করতে চান তবে জেনে নিন:
যুক্তরাজ্যের স্কলারশিপ হিসাবে হলো শিক্ষার্থীদের দুঃসময়ের সাথী। পড়াশোনার সময় যারা বেশ কষ্টকর আর্থিক বোঝার মুখোমুখি হয় তাদের তা সহজ করতেই এই স্কলারশিপ সাহায্য করে থাকে।
তারা মূলত আপনার আবেদন প্রক্রিয়া চলাকালীন সময়ে আপনার আর্থিক অবস্থার উপর বিবেচনা করেই আপনাকে এই স্কলারশিপ প্রদান করবে। এক্ষেত্রে যাদের সৃজনশীলতার উপর বাড়তি কৃতিত্ব বা দক্ষতা রয়েছে তাদের জন্য তা প্লাস পয়েন্ট হিসাবে বিবেচিত হবে।
আপনি কি যুক্তরাজ্যে স্কলারশিপ পাওয়ার উপায় হিসাবে অ্যাম্বার স্কলারশিপের জন্য আবেদন করতে চান? তবে জেনে নিন এই বৃত্তি সম্পর্কিত বেশকিছু গুরুত্বপূর্ণ তথ্য:
যুক্তরাজ্য সরকার কর্তৃক অর্থায়িত অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ সরকারি স্কলারশিপ হলো এই শেভেনিং স্কলারশিপ। আন্তজার্তিক শিক্ষার্থীদের মাঝে যারা যুক্তরাজ্যের যে কোনও বিশ্ববিদ্যালয়ে এক বছরের স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জনের জন্য আগ্রহী তাদেরকেই মূলত এই স্কলারশিপ গ্রহণের সুযোগ প্রদান করা হয়।
মনে রাখবেন, যেহেতু এটি সরকার কর্তৃক অর্থায়িত একটি স্কলারশিপ সেহেতু এই স্কলারশিপে বরাবরই হাড্ডাহাড্ডি প্রতিযোগিতা থাকে। আর হ্যাঁ, এই স্কলারশিপের আবেদন প্রক্রিয়াটি প্রায় আট মাস সময় নেবে। এতে ব্যবহার করা হবে যোগ্যতার প্রয়োজনীয়তা মাপকাঠি।
পড়াশোনার পাশাপাশি যুক্তরাজ্যের সেরা জীবনযাপন উপভোগ করতে এবং অভিজ্ঞতা অর্জন করতে এই স্কলারশিপ আপনাকে যথেষ্ট সাহায্য করবে। সুতরাং আবেদন করতে চাইলে নিম্নোক্ত তথ্যগুলি দেখে নিন:
আশা করছি আজকের এই যুক্তরাজ্যে স্কলারশিপ পাওয়ার উপায় সম্পর্কিত আর্টিকেলটি আপনার পছন্দের স্কলারশিপটি বেছে নিতে সাহায্য করবে। যাইহোক! যারা সরাসরি আবেদন করতে চান তারা স্কলারশিপের নাম বা টাইটেল কপি করে গুগলে সার্চ করুন।
প্রথমেই যে ওয়েব পেইজগুলি আসবে সেগুলিতে সরাসরি এপ্লাই করার সুযোগ থাকবে। আর এতে যদি বাড়তি কোনো সমস্যা বা জটিলতার মুখোমুখি হোন, সেক্ষেত্রে সরাসরি কমেন্ট বক্সের সাহায্য নিতে পারেন। আশা করি সময়মতো রেসপন্স পাবেন।