নীলফামারীর সৈয়দপুরে পরীক্ষামূলকভাবে ইন্দোনেশিয়ান ব্লাকরাইস জাতের ধান চাষ করে সফলতা অর্জন করেছেন শফিকুল ইসলাম বাবু। বিদেশি এই জাতের চাল সহজে বাজারে পাওয়া না গেলেও এখন চাষ হচ্ছে সৈয়দপুর উপজেলার নিয়ামতপুর দেওয়ানিপাড়া গ্রামে। এর চাল বাজারে মিললেও কেজিতে পড়ে প্রায় ৮শ’ টাকা।
এই ধানের (ব্লাক রাইস) বৈশিষ্ট্য হলো, এর গাছ, পাতা দেখতে স্বাভাবিক ধানগাছের মতো হলেও ধানের শিষ এবং চাল সবকিছুই লালচে কালো ও চিকন। এ চাল পুষ্টিগুণে ভরপুর। তাই এ চালের দামও বেশি। এমন একটি ধান সৈয়দপুরে প্রথম চাষ করতে পেরে আনন্দের কমতি নেই কৃষক শফিকুল ইসলাম বাবুর।
সরেজমিনে জানা গেছে, গণমাধ্যমে প্রতিবেদন দেখে ব্লাকরাইস ধান সম্পর্কে ধারণা হয় কৃষক শফিকুল ইসলামের। এরপর এই ধানের বীজ খুঁজতে অনেক বেগ পেতে হয়েছে তাকে। অবশেষে হদিস মেলে চট্টগ্রামে। সেখান থেকেই ৫শ’ গ্রাম ধান সংগ্রহ করতে হয়েছে ১ হাজার টাকায়। ধানের সাথে চালের তুলনা করলে ৮শ’ টাকা কেজি হয়।
তবে পরীক্ষামূলক ব্লাকরাইস ধান চাষে সফল হয়েছেন শফিকুল ইসলাম বাবু। এই ধানের চাষ দেখে আগ্রহ বাড়িয়েছে পার্শ্ববর্তী কৃষকদের মাঝেও।
এবিষয়ে কৃষক শফিকুল ইসলাম বাবু বলেন, আমি টেলিভিশন দেখে ব্লাকরাইস ধান সম্পর্কে জানতে পারি। তারপর অনেক খোঁজাখুঁজি করে এই ধান চট্টগ্রাম থেকে সংগ্রহ করেছি। ধান থেকে বীজ উৎপাদন করি। তারপর ২২শতক জমিতে রোপন করেছি। চাষ করে দেখলাম, এই ধানের ফলন অনেক ভালো। পোকামাকড়েরও তেমন আক্রমন নেই। অন্যান্য ধানের থেকে সারও কম লাগে। ৯০দিনের মাথায় কাটার উপযোগী হয়েছে। আশা করছি বিঘা প্রতি এ ধান ১৮ থেকে ২০ মণ হবে।
বিশেষজ্ঞদের মতে, ব্লাকরাইস ধানে প্রচুর পরিমাণ অ্যান্টি অক্সিজেন থাকায় শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়। ত্বক পরিষ্কার করে ও শরীর থেকে দূষিত পদার্থ বের করে ফুরফুরে রাখে। এতে থাকা ফাইবার হার্টকে রাখে সুস্থ। কালো চাল ডায়েবেটিস, স্নায়ুরোগ ও বার্ধক্য প্রতিরোধক।
সৈয়দপুর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মমতা সাহা বলেন, ব্লাকরাইস ধানের জাত ইন্দোনেশিয়ান। যদিও সরকারিভাবে আমাদের দেশে এ জাতের ধান চাষাবাদ শুরু হয়নি। সৈয়দপুরে শফিকুল ইসলাম বাবু নামের একজন কৃষক পরীক্ষামূলক ভাবে ২২ শতক জমিতে চাষ করছে। লাভজনক হলে উপজেলার অন্যান্য জায়গাতেও ব্লাকরাইস জাতের ধানের চাষ হবে।